প্রবাসী এক চলচ্চিত্র প্রযোজকের অভিযোগের মুখে থাকা চিত্রনায়ক শাকিব খান থানা পুলিশের পরামর্শে মামলা না করে গোয়েন্দা পুলিশকে নালিশ জানিয়েছেন।
রোববার কয়েক ঘণ্টা ধরে ঢাকার মিন্টো রোডে ডিবি কার্যালয়ে থেকে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার হারুন অর রশীদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি।
শাকিব খান এরপর সাংবাদিকদের বলেন, “হারুন অর রশিদ আমার অভিযোগ দীর্ঘ সময় নিয়ে শুনেছেন, যাচাই-বাছাই করেছেন। আমাকে আশ্বস্ত করেছেন। ডিবির উপর আমার পূর্ণ বিশ্বাস আছে।”
অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী রহমত উল্লাহ নামের একজন প্রযোজক সম্প্রতি দেশে এসে শাকিব খানের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ দেন চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্ট সংগঠনগুলোকে। তার ‘অপারেশন অগ্নিপথ’ সিনেমায় শাকিব অভিনয় করছেন।
শুটিংয়ে ঠিকমতো না এসে আর্থিক ক্ষতি সাধনের পাশাপাশি সিনেমার সহ প্রযোজককে শাকিব খান ধর্ষণ করেন বলেও অভিযোগ করেন রহমত উল্লাহ।
তার অভিযোগ নিয়ে কয়েক দিন নিশ্চুপ থাকার পর শনিবার রাতে গুলশান থানায় যান শাকিব। তিনি রহমত উল্লাহর বিরুদ্ধে মামলা করতে চাইলে পুলিশ তাকে আদালতে যাওয়ার পরামর্শ দেয়।
থানার পরিদর্শক (তদন্ত) শাহনুর রহমান বলেন, “শাকিব খান একজন প্রযোজকের বিরুদ্ধে থানায় যে অভিযোগ নিয়ে এসেছেন, এগুলো অনেক আগের। তাকে (শাকিব খান) টাকা লেনদেন, দেন-দরবার ধরনের এসব অভিযোগ নিয়ে আদালতে যেতে বলা হয়েছে।”
অভিযোগ নিয়ে শাকিব খানের সঙ্গে ‘কথা বলার চেষ্টা’ করবেন নিপুণ
রোববার আদালতে না গিয়ে ডিবি কার্যালয়ে যান শাকিব। চার ঘণ্টা পর সেখান থেকে বেরিয়ে গুলশান থানা পুলিশের আচরণে ক্ষোভ জানান তিনি।
রহমত উল্লাহকে ‘বাটপার’ আখ্যায়িত করে এই চিত্রনায়ক বলেন, তিনি মামলা করতে চাইলেও গুলশান থানার ওসি তা নেয়নি।
“একজন সাধারণ মানুষ হিসাবে একজন প্রতারকের বিরুদ্ধে মামলা নিল না, এটা ভাবা যায় না।”
রহমত উল্লাহ দেশ ছেড়ে যাচ্ছেন বলে খবর জানার পরই দ্রুত থানায় মামলা করতে যান বলে জানান শাকিব খান। তার সন্দেহ, থানা পুলিশ তাকে চলে যেতে সহায়তা করেছে।
এই চিত্রনায়ক বলছেন, তাকে নিয়ে ধারাবাহিক ‘ষড়যন্ত্র’ চলছে। নতুন অভিযোগ তারই একটি অংশ।
“আমার ধারণা, রহমত উল্লাহ একা ছিল না, রহমত উল্লাহর পেছনে আরও অনেক লোক জড়িত ছিল। তা না হলে একজন বাটপার একজন প্রতারক প্রযোজক সেজে ভুয়া তথ্য দিয়ে ভুয়া বিচার চেয়েছে …”
রহমত উল্লাহ বিভিন্ন সময় তার কাছে অর্থ চেয়েছিলেন দাবি করে শাকিব খান বলেন, “সে আমার সঙ্গে দেখা করার জন্য মরিয়া হয়ে গেছে, সে বার বার টাকা চেয়েছে। অপু বিশ্বাসকে দিয়ে সে একবার আমার সঙ্গে দেখা করেছে, ছবি তুলেছে। সেখানে সে টাকা চেয়ে বলেছে, টাকাটা দিয়ে দেন, চলে যাব।”
‘অপারেশন অগ্নিপথ’ সিনেমার প্রযোজক রহমত উল্লাহ নন, জানে আলম নামে আরেকজন বলে দাবি করেন শাকিব খান। তিনি বলেন, রহমত উল্লাহর সঙ্গে তার কোনো লেনদেনই হয়নি।
এই সিনেমার কাজ মাঝ পথে বন্ধ হয়ে আছে জানিয়ে শাকিব বলেন, রহমত উল্লাহ তার কাছে এখন টাকা দাবি করে বলছেন যে সিনেমা বানাতে গিয়ে নাকি তার ক্ষতি হয়েছে।
রহমত উল্লাহর সঙ্গে সম্পর্ক কীভাবে- তার উত্তরে এই চিত্রনায়ক বলেন, বিদেশে শুটিংয়ে গেলে প্রবাসীরা যেভাবে সহযোগিতা করে থাকেন, রহমত উল্লাহ তেমন একজন হিসাবেই তার এই সিনেমায় সম্পৃক্ত হন।
আগামী ঈদে তার দুটি সিনেমা মুক্তি পাবে জানিয়ে এই চিত্রনায়ক বলেন, এই সময়ে রহমত উল্লাহ তার ক্ষতি করতে এসব ‘মনগড়া, মিথ্যা ও ভিত্তিহীন’ অভিযোগ করছেন।
শাকিব খানের বিরুদ্ধে অস্ট্রেলিয়ায়ও মামলা হয়েছে বলে অভিযোগও করেছেন রহমত উল্লাহ। শাকিব এটাও ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দেন।
থানা পুলিশের পরামর্শ অনুযায়ী আদালতে যাওয়া বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে শাকিব খান বলেন, বিষয়টি ডিবি ‘গুরুত্ব সহকারে’ নিয়ে তারাই দেখবে, এ বিশ্বাস তার আছে।
“খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে প্রতারককে (রহমত উল্লাহ) ডিবি আইনের আওতায় আনবে।”