আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে জেলা প্রশাসক (ডিসি) ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের (ইউএনও) জন্য সর্বাধুনিক মডেলের বিলাসবহুল গাড়ি কেনা হচ্ছে। মিতসুবিসি পাজেরো স্পোর্ট কিউএক্স মডেলের এসব জিপ গাড়ির এক একটির মূল্য প্রায় দেড় কোটি টাকা। প্রশাসনের কর্মকর্তাদের জন্য এমন উচ্চমূল্যের ২৬১টি গাড়ি কিনতে চায় জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। গাড়ি ক্রয় করতে নিয়মিত বরাদ্দের অতিরিক্ত ৩২০ কোটি ৬৫ লাখ ৫৪ হাজার টাকা লাগবে। ইতোমধ্যে অর্থ মন্ত্রণালয়ে চাহিদাপত্র পাঠানো হয়েছে বলে জানা গেছে।
জনপ্রশাসনের মাধ্যমে অর্থ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো যানবাহন অধিদপ্তরের চাহিদাপত্র অনুযায়ী, জেলা প্রশাসকদের জন্য গাড়ি কেনা হবে ৬১টি। প্রতিটি গাড়ি ক্রয়ে ব্যয় হবে ১ কোটি ৪৫ লাখ ৮৪ হাজার ৫০০ টাকা। মোট ৬১টি গাড়ি ক্রয়ে ব্যয় হবে ৮৮ কোটি ৯৬ লাখ ৫৪ হাজার ৫০০ টাকা। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের ব্যবহারের জন্য কেনা হবে ২০০ গাড়ি। প্রতিটি গাড়ির মূল্য ধরা হয়েছে ১ কোটি ৪৫ লাখ ৮৪ হাজার ৫০০ টাকা। এতে ২০০টি গাড়ি ক্রয়ে ব্যয় হবে ২৯১ কোটি ৬৯ লাখ টাকা। রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান প্রগতি ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের মাধ্যমে এসব গাড়ি কেনার প্রস্তাব করা হয়েছে। আগামী নির্বাচনের আগেই ডিসি-ইউএনওদের কাছে নতুন গাড়ি হস্তান্তর করতে চায় জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।
অর্থ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো চাহিদাপত্রে বিপুলসংখ্যক গাড়ি কেনার যৌক্তিকতা তুলে ধরে বলা হয়েছে, আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন, মোবাইল কোর্ট পরিচালনা, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাসহ মাঠপর্যায়ে নিরবচ্ছিন্ন পরিবহণ সেবা নিশ্চিত করতে এসব গাড়ির প্রয়োজন হবে। এমন এক সময়ে সরকারি যানবাহন অধিদপ্তর থেকে ডিসি-ইউএনওদের জন্য বড় লটে বিলাসবহুল গাড়ি চাওয়া হলো, যখন বৈশ্বিক অস্থিরতায় দেশেও অর্থনৈতিক সংকট চলছে। বাজেট বাস্তবায়নে প্রয়োজনীয় অর্থ জোগাতে সরকার নিজেই চলছে ধারকর্জের মাধ্যমে। ব্যয় কমাতে বিভিন্ন ক্ষেত্রে কৃচ্ছ্রসাধনের নীতি গ্রহণ করা হয়েছে।
নতুন অর্থবছরের বাজেট কার্যকরের দ্বিতীয় দিনেই অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে পরিচালন ও উন্নয়ন বাজেটের অর্থ ব্যবহারে কিছু ক্ষেত্রে বিধিনিষেধ এবং কিছু ক্ষেত্রে কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে। এর আওতায় সরকারিভাবে সব ধরনের গাড়ি, বিমান ও জাহাজ কেনাকাটা বন্ধ করা হয়েছে। একই সঙ্গে ভূমি খাতের অধিগ্রহণ বাবদ বরাদ্দ অর্থসহ আবাসিক, অনাবাসিক, অন্যান্য ভবন ও স্থাপনা খাতে বরাদ্দ অর্থ খরচ না করতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এমনকি সরকারি চাকরিজীবীদের সব ধরনের বিদেশ ভ্রমণ, কর্মশালা, সেমিনারে অংশগ্রহণ করা থেকেও বিরত থাকতে বলা হয়েছে।