চলতি বছর ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা ৬১ হাজার ছাড়িয়েছে। শুক্রবার সকাল আটটা পর্যন্ত ৬১ হাজার ৩০ জন আক্রান্ত হয়েছে। গত চব্বিশ ঘণ্টায় নতুন করে আরও প্রায় দেড় হাজার আক্রান্ত হয়েছে।
গত এক সপ্তাহ ধরে কোনো দিন রোগী বাড়ছে আবার কোনো দিন রোগী কিছুটা কমেছে। ঢাকাকেন্দ্রিক রোগটি এখন গ্রামেও সমান আতঙ্ক ছড়াচ্ছে। শুক্রবারও ৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে চলতি বছর ডেঙ্গুতে মৃতের সংখ্যা ১৬২ জনে দাঁড়াল। তবে সরকারিভাবে এখন পর্যন্ত ৪৭ জনের মৃত্যু নিশ্চিত করা হয়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের তথ্য অনুযায়ী, শুক্রবার সারাদেশে ডেঙ্গুতে নতুন করে ১ হাজার ৪৪৬ জন আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। এর আগের দিন বৃহস্পতিবার এ সংখ্যা ছিল ১ হাজার ৫৯৭ জন। প্রতিদিন সকাল আটটা থেকে পরদিন সকাল আটটা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টার হিসাব করা হয়।
গত চব্বিশ ঘণ্টায় আক্রান্তদের মধ্যে রাজধানীর বিভিন্ন হাসপাতালে ৬৮৯ জন এবং বিভিন্ন বিভাগ, জেলা ও উপজেলা হাসপাতালে ৭৫৭ জন ভর্তি হয়েছে। এ নিয়ে চলতি বছর ৬১ হাজার ৩৮ জন আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। তাদের মধ্যে ৫৪ হাজার ৯৫৬ জন চিকিৎসা শেষে হাসপাতাল ছেড়েছেন। এখনও ৬ হাজার ৩৫ জন হাসপাতালে ভর্তি আছেন। তাদের মধ্যে রাজধানীর ৪১ সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে ৩ হাজার ৪১১ জন এবং অন্যান্য বিভাগের হাসপাতালে ২ হাজার ৬২৪ রোগী ভর্তি আছেন।
শুক্রবার রাজধানীর স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ ও মিটফোর্ড হাসপাতালে মায়া বেগম নামে এক নারীর মৃত্যু হয়েছে। তার গ্রামের বাড়ি মানিকগঞ্জ সদর উপজেলায়। ঢাকা শিশু হাসপাতালে আরিয়ান নামে এক শিশুর মারা গেছে। রাজধানীর বাড্ডা এলাকায় তার বাসা। সাতক্ষীরায় শাহানারা খাতুন নামে আরও এক নারীর মৃত্যু হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতাল থেকে খুলনা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে নেওয়ার পথে ডুমুরিয়া এলাকায় তার মৃত্যু হয়।
সাতক্ষীরার সিভিল সার্জন ডা. আবু শাহীন জানান, গত ১৮ আগস্ট ডেঙ্গু আক্রান্ত শাহানারা খাতুন সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ভর্তি হন। অবস্থার অবনতি হলে তাকে খুলনা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে রেফার করা হয়। ওইদিন রাতে খুলনায় নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।
আক্রান্তদের মধ্যে ঢাকা মেডিকেলে ৫৩৩ জন, মিটফোর্ডে ৩৯৯ জন, ঢাকা শিশু হাসপাতালে ৯০ জন, সোহরাওয়ার্দীতে ৩১৮ জন, বিএসএমএমইউতে ১৫৫ জন, পুলিশ হাসপাতালে ৭১ জন, মুগদায় ৩১৩ জন, বিজিবি হাসপাতালে ১৫ জন, সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে ১৩৫ জন, কুর্মিটোলায় ২৬৩ জন, কুয়েত বাংলাদেশ মৈত্রী হাসপাতালে ৯ জন, জাতীয় অর্থোপেডিক পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানে (নিটোর) ১৯ জন, বাংলাদেশ মেডিকেলে ৫২ জন, হলি ফ্যামিলিতে ১২৬ জন, বারডেমে ৩২ জন, ইবনে সিনায় ৩৩ জন, স্কয়ারে ৬৯ জন, কমফোর্টে ৩ জন, শমরিতায় ১০ জন, ডেল্টা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে ২২ জন, ল্যাবএইডে ২২ জন, সেন্ট্রালে ৯২ জন, হাই কেয়ারে ১২ জন,হেলথ অ্যান্ড হোপে ৩ জন, গ্রীন লাইফে ৪৩ জন, ইসলামী ব্যাংক হাসপাতালে ৬৬ জন, ইউনাইটেডে ৫৪ জন, খিদমায় ১১ জন, শহীদ মনসুর আলী মেডিকেলে ৩০ জন, সিরাজুল ইসলাম মেডিকেলে ৫৫ জন, এ্যাপোলোতে ৫৭ জন, আদ-দ্বীনে ৪৩ জন, ইউনিভার্সেল মেডিকেলে ৩৩ জন, বিআরবি হাসপাতালে ৪ জন, আজগর আলীতে ৪৭ জন, বাংলাদেশ স্পেশালাইজপ হাসপাতালে ২২ জন, উত্তরা আধুনিকে ৫৮ জন, সালাউদ্দিনে ২৭ জন, পপুলারে ২০ জন, উত্তরা ক্রিসেন্টে ২৪ জন, আনোয়ার খান মর্ডানে ২১ জনসহ ৩ হাজার ৪১১ রোগী ভর্তি আছে।
এছাড়া রাজধানীর বাইরে ঢাকা বিভাগের বিভিন্ন জেলায় ৬৮৪ জন, ময়মনসিংহ বিভাগে ১৫০ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ৪৪৬ জন, খুলনা বিভাগে ৬১০ জন, রাজশাহী বিভাগে ২৩৭ জন, রংপুর বিভাগে ১০৯ জন, বরিশাল বিভাগে ৩৪১ জন, সিলেট বিভাগে ৪৭ জনসহ মোট ২ হাজার ৬২৪ জন চিকিৎসাধীন আছেন।