প্রথমে রাজধানীকেন্দ্রিক হলেও পরে ধাপে ধাপে বিস্তার ঘটিয়ে ডেঙ্গু এখন দেশের ৬১ জেলায় ছড়িয়ে পড়েছে। সোমবার দেশের ৫০ জেলায় ডেঙ্গু আক্রান্তের খবর এসেছিল।মঙ্গলবার নতুন করে ১১ জেলা- ফরিদপুর, বান্দরবান, মাগুরা, নড়াইল, মেহেরপুর, সিলেট, সুনামগঞ্জ, হবিগঞ্জ, মৌলভীবাজার, জামালপুর ও শেরপুরে ডেঙ্গু রোগী পাওয়া গেছে। বর্তমান পরিস্থিতিতে ডেঙ্গু নিয়ে এখন সর্বত্রই উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা বিরাজ করছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশনস সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম মঙ্গলবার নতুন করে ১১ জেলায় ডেঙ্গু রোগী পাওয়ার তথ্য নিশ্চিত করেছে। ৬১ জেলায় এ পর্যন্ত এক হাজার ৮৪৫ জনের আক্রান্ত হওয়ার খবর মিলেছে।
ঢাকা বিভাগ: ঢাকা বিভাগের ঢাকা জেলায় ১৫৯ জন, গাজীপুরে ৯৯, গোপালগঞ্জে ১০, মাদারীপুরে ১৭, মানিকগঞ্জে ৩২, নরসিংদীতে ২১, রাজবাড়ী ২৭, শরীয়তপুরে ৯, টাঙ্গাইলে ৩৭, মুন্সীগঞ্জে ১৮, কিশোরগঞ্জে ৮৪, নারায়ণগঞ্জে ১৯ এবং ফরিদপুরে ২ জনসহ মোট ৫৩৪ জন আক্রান্ত হয়েছে।
চট্টগ্রাম বিভাগ: চট্টগ্রাম বিভাগের চট্টগ্রাম জেলায় ১৪৩ জন, ফেনীতে ৭০, কুমিল্লায় ৫১, চাঁদপুরে ৮৮, ব্রাহ্মনবাড়িয়ায় ২০, লক্ষ্মীপুরে ২২, নোয়াখালীতে ৩০, কপবাজারে ১৩, খাগড়াছড়িতে ৫, রাঙামাটিতে ৩ এবং বান্দরবানে ১ জনসহ মোট ৪৪৬ জন আক্রান্ত হয়েছে।
খুলনা বিভাগ: খুলনা জেলায় ১২৮ জন, কুষ্টিয়ায় ৫৮, মাগুরায় ৩, নড়াইলে ২, যশোরে ৭১, ঝিনাইদহে ২৫, বাগেরহাটে ৮, সাতক্ষীরায় ১৭, চুয়াডাঙ্গায় ৬ ও মেহেরপুরে ১ জনসহ মোট ৩১৯ জন আক্রান্ত হয়েছে।
রাজশাহী বিভাগ: রাজশাহী জেলায় ৬২ জন, বগুড়ায় ৯২, পাবনায় ৪৭, সিরাজগঞ্জে ১৯, নওগাঁয় ৩, চাঁপাইনবাবগঞ্জে ১১ ও নাটোরে ২ জনসহ মোট ২৩৬ জন আক্রান্ত হয়েছে।
রংপুর বিভাগ: রংপুর জেলায় ৬২ জন, লালমনিরহাটে ২, কুড়িগ্রামে ৫, গাইবান্ধায় ৪, নীলফামারীতে ৫, দিনাজপুরে ১৭, পঞ্চগড়ে ১ ও ঠাকুরগাঁওয়ে ৬ জনসহ মোট ১০২ জন আক্রান্ত হয়েছে।
বরিশাল বিভাগ: বরিশাল জেলায় ৪২ জন, পটুয়াখালীতে ১২, ভোলায় ৬, পিরোজপুরে ২ ও ঝালকাঠিতে ১ জনসহ মোট ৬৩ জন আক্রান্ত হয়েছে।
সিলেট বিভাগ: সিলেট জেলায় ৮০ জন, সুনামগঞ্জে ৪, হবিগঞ্জে ৭, মৌলভীবাজারে ৭ জনসহ মোট ১০৭ জন আক্রান্ত হয়েছে।
ময়মনসিংহ বিভাগ: জামালপুরে ২৭ জন এবং শেরপুরে ১১ জনসহ মোট ৩৮ আক্রান্ত হয়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের জাতীয় রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) সাবেক পরিচালক অধ্যাপক ডা. মাহমুদুর রহমান জানান, ঢাকায় জ্বরে আক্রান্ত হওয়ার পর কেউ গ্রামে গেলে বিপদে পড়তে পারেন। কারণ এডিস মশার সংক্রমণে ডেঙ্গু জ্বর নিয়ে গ্রামে গেলে সেখানকার মশা ওই ব্যক্তিকে কামড় দিলে ডেঙ্গুর সংক্রমণ ঘটবে। আবার ওই মশা কোনো ব্যক্তিকে কামড়ালে সেই ব্যক্তিরও আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি থাকবে। সুতরাং জ্বর নিয়ে গ্রামে গিয়ে সেখানকার মানুষদের ঝুঁকির মধ্যে ফেলা ঠিক হবে না। এক্ষেত্রে সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে।
মঙ্গলবার ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালেও চিকিৎসাধীন অবস্থায় ডেঙ্গু আক্রান্ত দু’জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে চলতি বছর ডেঙ্গু জ্বরে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৪৭ জনে দাঁড়াল। আর সারাদেশে আক্রান্তের সংখ্যা ১৫ হাজার ৩৬৯ জন।