ঢাকায় আওয়ামী লীগের ডেঙ্গুবিরোধী প্রচারণা ও পরিচ্ছন্নতা কর্মসূচিতে নেতাকর্মীদের যথাযথ সাড়া না পেয়ে হতাশা প্রকাশ করে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, এভাবে ‘লোক দেখানো’ কর্মসূচি পালনের কোনো প্রয়োজন নেই।
ঢাকায় যে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা প্রতিদিনই বাড়ছে, সে কথা মনে করিয়ে দিয়ে তিনি বলেছেন, “আমরা যতটাই মুখে নিয়ন্ত্রণের কথা বলি না কেন, এখনও এটা নিয়ন্ত্রণে আসেনি। এটা হল বাস্তবতা।”
মঙ্গলবার আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলের এক বর্ধিত সভায় ওবায়দুল কাদেরের এমন বক্তব্য আসে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছর এ পর্যন্ত মোট ২৭ হাজার ৪৩৭ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। কেবল শনিবারই হাসপাতালে গেছেন ২০৬৫ জন ডেঙ্গু রোগী।
চলতি বছর ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মোট ১৮ জনের মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, যদিও গণমাধ্যমের খবরে মৃত্যুর সংখ্যা নব্বই ছাড়িয়েছে।
গত শুক্রবার আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে ডেঙ্গু বিষয়ে সচেতনতামূলক লিফলেট বিলি এবং মশক নিধন কার্যক্রমে অংশ নিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেছিলেন, এ বিষয়ে সরকারের আন্তরিকতার ‘অভাব নেই’। ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে সেদিন সবাইকে ধৈর্য্য ধরতে অনুরোধ করেছিলেন তিনি।
কিন্তু ঢাকায় ওয়ার্ড পর্যায়ে আওয়ামী লীগের ‘দায়সারা’ কর্মসূচি নিয়ে মঙ্গলবার অসন্তোষ প্রকাশ পায় দলের সাধারণ সম্পাদকের কথায়।
তিনি বলেন, দলের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে সারা দেশে পরিচ্ছন্নতা কর্মসূচি ঘোষণা করেছে আওয়ামী লীগ। সে অনুযায়ী ঢাকার তিন জায়গায় কেন্দ্রীয়ভাবে কর্মসূচি পালনও করা হয়েছে। কিন্তু সব ওয়ার্ডে তা হচ্ছে না।
“আমরা নামকাওয়াস্তে দু-চার জায়গায় কর্মসূচি পালন করলাম, বেশিরভাগ ওয়ার্ডে এই পরিচ্ছন্নতা অভিযান পরিচালনা হল না, কর্মসূচি পালন হল না। এই দায়সারা কর্মসূচির কোনো প্ররেয়াজন নেই।
“এতে এইডিস মশার প্রজনন ক্ষেত্র ধ্বংস হবে না, এইডিস মশার উৎসমুখ আমরা বন্ধ করতে পারব না। এবং ডেঙ্গু জ্বরের যে ভয়ঙ্কর বিস্তার এই বিস্তারও আমরা রোধ করতে পারব না।”
আসন্ন কোরবানির ঈদে বহু মানুষ ঢাকা থেকে গ্রামে যাবে এবং তাতে ঢাকার বাইরে ডেঙ্গু ছড়ানোর শঙ্কা যে আরও বাড়বে- সে কথা মনে করিয়ে দিয়ে কাদের বলেন, “অনেকেই যাচ্ছেন, যাবেন। এখানেও এই ডেঙ্গু জ্বরের বিস্তারের একটা আশঙ্কা আছে। রাজনৈতিক দল হিসেবে আমাদের প্রথম কাজটি হচ্ছে এই সচেতনতা এবং সতর্কতা প্রচার করা। এই মশার প্রজনন ও বংশ বিস্তার বন্ধের পূর্বশর্ত হচ্ছে পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা।”