বিএনপিসহ সব রাজনৈতিক দলকে নিয়ে সংসদ নির্বাচন করে উচ্ছ্বসিত নির্বাচন কমিশন দুই মাসের মধ্যে ঢাকা উত্তর সিটির উপনির্বাচনে অধিকাংশ দলকে না পেয়ে গেছে চুপসে।
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে মেয়র পদে উপনির্বাচন এবং দুই সিটির ৩৬ ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে নির্বাচনে ভোটগ্রহণের আগের দিন বুধবার এনিয়ে অস্বস্তিতে থাকার কথা স্বীকার করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদা।
তিনি বলেছেন, “সব রাজনৈতিক দল নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেনি, এতে আমাদের কিছু করার নেই। এটি তাদের রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত।
“দলগুলো নির্বাচনে অংশ না নেওয়া আমাদের প্রতি অনাস্থা নয়। তবে সব দলের নির্বাচনে অংশ না নেওয়া আমাদের জন্য অস্বস্তিকর।”
গত ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত একাদশ সংসদ নির্বাচনে সব দলের অংশগ্রহণ ঘটার পর সিইসি উচ্ছ্বসিত হয়ে বলেছিলেন, তাদের ‘আশা পূরণ’ হয়েছে।
ওই নির্বাচনে কারচুপি এবং তাতে ইসির সায় থাকার অভিযোগ তুলে ঢাকা সিটি ও উপজেলা পরিষদ নির্বাচন বর্জন করেছে বিএনপি ও তাদের জোটসঙ্গীরা। বাম দলগুলোও এই নির্বাচন বর্জন করেছে।
অধিকাংশ দলের বর্জনের কারণে ঢাকা সিটির নির্বাচন জৌসুল হারিয়েছে বলে স্বীকারোক্তি এসেছে নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদারের কাছ থেকেও, যার সঙ্গে বিভিন্ন বিষয়ে সিইসির দ্বিমত আগেও দেখা গেছে।
নূরুল হুদা বলেন, ঢাকা উত্তরে উপনির্বাচনে বিজয়ী মেয়রের মেয়াদ এক বছর হবে বলে তা নিয়ে মানুষের আগ্রহ কম থাকতে পারে। তবে তারা সব দলের অংশগ্রহণই চেয়েছিলেন।
ঢাকা উত্তরে মেয়র পদে উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টি অংশ নিচ্ছে। আওয়ামী লীগের প্রার্থী আতিকুল ইসলাম, জাতীয় পার্টির প্রার্থী শাফিন আহমেদ। এছাড়াও প্রার্থী রয়েছেন তিনজন।
নির্বাচন ভবনের মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে সিইসি ভোটের জন্য সব ধরনের প্রস্তুতির কথাও তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, “উত্তরের উপনির্বাচন ও উত্তর-দক্ষিণের সংযুক্ত ওয়ার্ডগুলোর নির্বাচনে ভোটারদের পছন্দের প্রার্থীদের ভোট দেওয়ার অনুরোধ জানাই। .. আমরা চাই একটি সুষ্ঠু নির্বাচন।”
সিইসি জানান, অনিয়ম হলে প্রিজাইডিং কর্মকর্তা ভোট বন্ধ করে কমিশনকে জানাবেন।
“আর যদি সামগ্রিকভাবে কোনো এলাকায় ব্যাপকভাবে নিয়ন্ত্রণ না থাকে তাহলে রিটার্নিং অফিসার কমিশনেরঅনুমতি চাইবে। পরে কমিশন যদি মনে করে গোটা এলাকায় ভোট বন্ধ করা দরকার, তাহলে কমিশন গোটা এলাকার ভোট বন্ধ করতে পারে।”
নির্বাচনের দায়িত্বে থাকা কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ পাওয়া গেলে তাৎক্ষণিকভাবে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হবে বলে সতর্ক করেন সিইসি।
সংবাদ সম্মেলনে ইসি সচিব হেলালুদ্দিন আহমদ বলেন, ভোটের দিন নির্বাচনী এলাকায় সরকারি অফিস- আদালত বন্ধ থাকবে। প্রধান প্রধান সড়কগুলোতে যান চলাচল করবে। জরুরি সেবার যে কোনো যান চলাচল করতে কোনো বাধা নেই। পরীক্ষাথীদের যানবাহন প্রবেশপত্র দেখিয়ে চলাচল করতে পারবে।
ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণের ৩৬ ওয়ার্ডে সকালে কেন্দ্রে কেন্দ্রে ব্যালট পেপার পাঠানো হচ্ছে।
ইসি কর্মকর্তারা জানান, বুধবার মেয়র পদে ব্যালট পেপার বিতরণ করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকালে কেন্দ্রে কেন্দ্রে উত্তরের ১৮ ওয়ার্ডে কাউন্সিলরের এবং দক্ষিণের ১৮ ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে ব্যালট পেপার নিরাপত্তাসহ পাঠানো হবে।