বাংলাদেশে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের উপর নির্যাতনের অভিযোগ যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের কাছে তোলার কারণে প্রিয়া সাহার ঢাকার বাড়ির সামনে বিক্ষোভ দেখিয়েছে একদল যুবক।
শনিবার দুপুরে ধানমন্ডিতে প্রিয়া সাহার বাড়ির সামনে ‘সচেতন ছাত্র সমাজ’ ব্যানারে ২০-২৫ জন প্রথমে মানববন্ধন করেন।
মানববন্ধনের পর তারা প্রিয়া সাহার বাসায় তালা দেওয়ার প্রস্তুতি নিলেও পরে তা আর করেননি।
মানববন্ধনে অংশ নেওয়া আব্দুল কাইয়ুম নামে এক শিক্ষানবীশ আইনজীবী বলেন, “প্রিয়া সাহা উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করেছেন।
“তিনি সংখ্যালঘুদের কথা চিন্তা করে নয়, বরং তার যে দুই মেয়ে আমেরিকা প্রবাসী তাদের নাগরিকত্ব পেতে ট্রাম্পের কাছে অভিযোগ করেছেন। ট্রাম্পের অভিবাসন নীতি অনেক কঠিন। তিনি মিথ্যাচার করে তার দুই মেয়ের নাগরিকত্ব নেওয়ার পথ পরিষ্কার করছেন।”
‘শারি’ নামে বাংলাদেশের দলিত সম্প্রদায় নিয়ে একটি বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার পরিচালক প্রিয়া সাহা ঢাকা থেকে প্রকাশিত ‘দলিত কণ্ঠ’ নামক একটি পত্রিকার প্রকাশক ও সম্পাদক।
পিরোজপুরের মেয়ে প্রিয়া সাহার স্বামী মলয় কুমার সাহা দুর্নীতি দমন কমিশনের কর্মকর্তা। তাদের দুই মেয়ে যুক্তরাষ্ট্রে পড়াশোনা করেন।
মানববন্ধনে অংশ নেওয়া শুভ অধিকার নামে আরেক জন বলেন, “বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ। আমরা সব ধর্মের লোক মিলেমিশে বসবাস করছি।
“৩ কোটি ৭০ লাখ সংখ্যালঘু খুন ও গুমের যে তথ্য দিয়ে প্রিয়া সাহা ট্রাম্পের কাছে নালিশ করেছেন, তা আমরা মানতে পারিনি। তাই আমাদের অবস্থান জানাতে তার বাসার সামনে দাঁড়িয়েছি।”
ওয়াশিংটন ডিসিতে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেওর উদ্যোগে তিন দিনব্যাপী ‘ধর্মীয় স্বাধীনতায় অগ্রগতি’ শীর্ষক এক আন্তর্জাতিক সম্মেলনে অংশ নিতে যাওয়া প্রিয়া সাহা গত ১৭ জুলাই হোয়াইট হাউজে গিয়ে ডনাল্ড ট্রাম্পকে বলেন, বাংলাদেশে ধর্মীয় সংখ্যালঘুরা মৌলবাদীদের নিপীড়নের শিকার হচ্ছেন। প্রায় ৩ কোটি ৭০ লাখ হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান নিখোঁজ হয়েছেন।
ওই সম্মেলনে অংশ নেওয়া পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন বলেছেন, “প্রিয়া সাহা যে অভিযোগ করেছেন, তা একেবারেই মিথ্যা। বিশেষ মতলবে এমন উদ্ভট কথা বলেছেন তিনি।”
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্নের উদ্দেশ্যেই প্রিয়া সাহা এই ধরনের বানোয়াট ও কল্পিত অভিযোগ করেছেন।”
এ বিষয়ে বাংলাদেশ হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক প্রিয়া সাহার কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
ঐক্য পরিষদের সভাপতি রানা দাশগুপ্ত বলেছেন, প্রিয়া সাহা হোয়াইট হাউজে ট্রাম্পের কাছে যে অভিযোগ করেছেন, তা একান্তই তার নিজস্ব বক্তব্য, সংগঠনের নয়।