বাংলাদেশের উইকেট বরাবরই স্পিন স্বর্গ। খুব বেশি কিছু না করে, নিজের স্কিল ব্যবহার না করেও উইকেটের সুবিধার কারণে টার্ন পেয়ে থাকেন বাংলাদেশের স্পিনাররা। তাই বল টার্ন করার স্কিলটা খুব কমই আছে বাংলাদেশের স্পিনারদের মাঝে। এই স্কিলের অভাব বা এর ভোগান্তিটা বেশি প্রকট হয়ে পড়ে দেশের বাইরে। যেখানে স্পিনাররা কার্যত অকার্যকর হয়ে পড়েন।
বর্তমান সময়ে বাংলাদেশের স্পিন আক্রমণের সবচেয়ে বড়ো ভরসা তাইজুল ইসলাম। বাঁহাতি এই স্পিনারকে বিদেশের মাটিতে ভালো করার পথ দেখিয়ে দিয়েছেন বাংলাদেশের স্পিন কোচ ড্যানিয়েল ভেট্টোরি। তার মতে, দেশের বাইরে ভালো করতে টপ-স্পিন শিখতে হবে তাইজুলকে।
বছরে ১০০ দিন কাজের চুক্তিতে বাংলাদেশের স্পিন কোচ হয়ে এসেছিলেন ভেট্টোরি। টাইগারদের সঙ্গে নিউজিল্যান্ডের সাবেক এই বাঁহাতি স্পিনারের অবশ্য এক বছরে ১০০ দিন কাজের কোটা পূরণ হচ্ছে না চুক্তি শেষ হওয়ার আগে। সম্ভাবনা আছে ভেট্টোরির সঙ্গে চুক্তি নবায়ন করবে বিসিবি।
বাংলাদেশে আসার পর তাইজুল, লেগ স্পিনার আমিনুল ইসলাম বিপ্লব, অফস্পিনার নাঈম হাসানের সঙ্গে বেশি সময় কেটেছে ভেট্টোরির। তার মধ্যে তাইজুলের সামর্থ্যে আস্থা দেখিয়েছেন তিনি। তার পরামর্শ, অনুপ্রেরণায় সাদা বলের ক্রিকেটেও ফিরেছেন টেস্ট বিশেষজ্ঞের তকমা পেয়ে যাওয়া তাইজুল। চলতি বছর তিন ফরম্যাটেই বিসিবির কেন্দ্রীয় চুক্তিতে ঠাঁই পেয়েছেন এই বাঁহাতি স্পিনার।
এবার দেশের বাইরে ভালো করতে এই স্পিনারের বোলিংয়ে নতুন যোগ করতে বলছেন ভেট্টোরি। এজন্য টপ-স্পিন রপ্ত করতে বলছেন তিনি। করোনার কারণে ক্রিকেট বন্ধ রয়েছে। বাংলাদেশে ফিরলে তাইজুলের সঙ্গে এটি নিয়ে কাজ করবেন তিনি।
ক্রিকবাজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ভেট্টোরি বলেছেন, ‘বিশ্বের নানা প্রান্তে বোলিং করতে গেলে, নিউজিল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া এবং ইংল্যান্ডে উইকেট স্পিনিং হয় না। সেখানে বল ড্রিফট করতে পারার সামর্থ্যের প্রতি বেশি গুরুত্ব দিতে হয়। তখন আপনাকে কিছুটা টপ-স্পিনে বল করতে হবে।’
উপমহাদেশের কিছু দেশ, যেখানে উইকেটে বল স্পিন করে, সেখানেও ড্রিফট করাটা গুরুত্বপূর্ণ। উপমহাদেশের সেরা স্পিনারদের এটা ছিল। কিন্তু তারা বল স্পিন করাতো প্রচুর, আমার মনে হয় এটা কিছুটা উইকেটের কারণে এবং কিছুটা তাদের সাইড-স্পিন বোলিংয়ের স্কিলের কারণে।’
নিউজিল্যান্ডের এই সাবেক অধিনায়ক আরো বলেন, ‘আমার মনে হয় সাইড-স্পিন সম্ভবত এমন কিছু যেটা আপনি বেড়ে ওঠার সময় শিখবেন না এবং পরে উন্নতি করতে হবে। আমি মনে করি তাইজুলের মতো কারো জন্যেও বিষয়টি তেমন। সে টপ-স্পিন করতে পারবে কি না, এনিয়ে আমরা অনেক বলেছি। যদি সে করতে পারে, তাহলে প্রতিটি বলই তার জন্য সহজ হয়ে যাবে। সে সাইড-স্পিনের ওপরে অনেক ভরসা করে। আগেও সে এমন করেছে। আমরা এখন কাজ করছি, যাতে সে টপ-স্পিন বোলিং করতে পারে।’