তাবলিগের দুইপক্ষ আবার মিলেমিশে ইজতেমা করবেন, আশা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর

image-766058-1705930252

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ইজতেমা আয়োজক কমিটির মুরুব্বিদের উদ্দেশ করে বলেছেন, বিশ্ব ইজতেমা আমাদের জন্য একটা গর্বের বিষয়। টঙ্গীর ইজতেমা সারাবিশ্বের কাছে অত্যন্ত প্রিয়। আমরা অনেক চেষ্টা করেছি, কিন্তু আপনাদের মনোভাব এক করতে পারি নাই, সেজন্য আমরা কষ্ট পাই।

তিনি বলেন, আপনারা সবাই মিলেমিশে (মাওলানা জুবায়ের আহমেদ ও সৈয়দ ওয়াসিফুল ইসলাম) যদি আবার এক প্লেটে খেতে পারতেন, আমরা দেখে যেতে পারতাম তাহলে খুশি হতাম।

সোমবার বিকালে ইজতেমা ময়দানসংলগ্ন বাটা রোডে বিশ্ব ইজতেমা প্রস্তুতি পর্যালোচনা সংক্রান্ত ফলোআপ সভায় সভাপতির বক্তব্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

প্রথম পর্বের আয়োজকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, আপনাদের (মাওলানা জুবায়েরের অনুসারী) দাবির প্রেক্ষিতেই প্রতি বছর প্রথমেই আপনাদের সুযোগ করে দেই। সে দাবি রক্ষা করে সম্মানের সঙ্গে মাঠ বুঝিয়ে দেবেন। যাতে কোনো প্রকার ভাঙচুর না হয়, কেউ যাতে কোনো অভিযোগ না করে, এটা আমার অনুরোধ। আমরা গতবারও শুনেছি ভাঙচুর হয়েছে, কিছু জিনিস খোয়া গেছে, নানা ধরনের কথাবার্তা শুনেছি। আমরা চাই সুন্দরভাবে মাঠটা বুঝিয়ে দেবেন।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এখানে আমরা যারা এসেছি সবাই চাই বাংলাদেশের ঐতিহ্য এই ইজতেমার সুনাম যাতে অক্ষুন্ন থাকে। গতকাল থেকে কিছু ঘটনা ঘটছে, যা দুঃখজনক। সবার কাছে বিনীতভাবে অনুরোধ রইলো এসব ঘটনা আর ঘটাবেন না, সবাই মিলেমিশে থাকবেন। মসজিদে গিয়ে, আল্লাহর ঘরে গিয়ে দখল-বেদখল করেন- এমন কিছু আমাদের জন্য লজ্জার। আপনাদের কাছে অনুরোধ থাকল এসব কাজ থেকে আপনারা বিরত থাকবেন, মিলেমিশে চলবেন। আমাদের সে শিক্ষাটাই দেবেন। আল্লাহর দাওয়াতের শিক্ষাটা যেমন দিচ্ছেন, তেমনি মিলেমিশে থাকার শিক্ষাটাও দেবেন।

তিনি বলেন, বিশ্ব ইজতেমা ময়দানে আগত মুসল্লিদের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে। র্যাব, পুলিশ, আনসারসহ বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা ময়দানের চারপাশে নিয়োজিত থাকবে।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, আগামী ৬ ফেব্রুয়ারি দ্বিতীয় পর্বের ইজতেমা আয়োজক কমিটির কাছে ময়দান বুঝিয়ে দেওয়া হবে। বিষয়টি গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা ব্যবস্থা নেবেন; যাতে দুপুর না গড়িয়ে সকালের মধ্যে দ্বিতীয় পক্ষের কাছে মাঠ বুঝিয়ে দেওয়া যায়।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। সহযোগিতায় ছিল গাজীপুর সিটি করপোরেশন ও জেলা প্রশাসন গাজীপুর।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সচিব মোস্তাফিজুর রহমানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন- মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, ধর্মমন্ত্রী ফরিদুল হক খান দুলাল, স্থানীয় সংসদ সদস্য জাহিদ আহসান রাসেল, আইজিপি আব্দুল্লাহ আল মামুন, গাজীপুরের জেলা প্রশাসক আবুল ফাতে মোহাম্মদ সফিকুল ইসলাম, গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার মাহবুব আলম, ইজতেমার মুরুব্বি প্রকোশলী খন্দকার মেজবাহ উদ্দিন ও আব্দুস সালাম প্রমুখ।

এ সময় পুলিশ, র‌্যাব, সেনাবাহিনী, বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা, ডেসকো, ফায়ার সার্ভিস, তিতাস, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল, সরকারি হাসপাতাল, সিটি করপোরেশনসহ বিভিন্ন দপ্তরের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ্য, টঙ্গীতে আগামী ২-৪ ফেব্রুয়ারি ৫৭তম বিশ্ব ইজতেমার প্রথমপর্ব এবং ৯-১১ ফেব্রুয়ারি দ্বিতীয় পর্ব অনুষ্ঠিত হচ্ছে। প্রথম পর্বে মাওলানা জোবায়ের অনুসারী মুসল্লিরা অংশ নেবেন। ২ ফেব্রুয়ারি শুরু হয়ে ৪ ফেব্রুয়ারি আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হবে এ পর্ব।

মাঝে ৪ দিন বিরতি দিয়ে ৯ ফেব্রুয়ারি মাওলানা সা’দ অনুসারীরা অংশ নেবেন। ১১ ফেব্রুয়ারি আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হবে বিশ্ব ইজতেমা।

Pin It