ত্রিদেশীয় সিরিজে নিজেদের প্রথম ম্যাচে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে তামিম ইকবাল যেন আটকে গিয়েছিলেন। স্বচ্ছন্দে এগোতেই পারছিলেন না। রান পেতে চেষ্টা করছিলেন, অথচ কাজ হচ্ছিল না। ভালো ভালো শট চলে যাচ্ছে ফিল্ডারের হাতে। এই সময়টা যা হয়, ব্যাটসম্যান হতাশ হয়ে ঝুঁকিপূর্ণ শট খেলেন। উইকেট ছুড়ে দিয়ে চলে আসেন। তামিমের সেটি করতে হয়নি। অন্য প্রান্তে সৌম্য সরকার যে তখন স্বচ্ছন্দে ব্যাটিং করছিলেন। সৌম্যকে এ কারণেই সঙ্গী হিসেবে তাঁর বেশ পছন্দ।
ক্যারিবীয়দের বিপক্ষে টানা ডট বল খেলায় তামিমের স্ট্রাইকরেট একটা সময় ৫০-এর কাছাকাছি চলে এসেছিল। উইন্ডিজ বোলারদের খেলতে বেশ বেগ পেতে হচ্ছিল। কিন্তু সঙ্গী সৌম্য এগোচ্ছিলেন দারুণ গতিতে। সৌম্যর সঙ্গ পেয়ে তামিম সময় পেয়েছিলেন থিতু হওয়ার। সুযোগ পেয়েছেন ৮০ রানের ইনিংস খেলার। সৌম্য সেদিন তামিমের ওপর চাপ কতটা কমিয়ে দিয়েছিলেন, আজ ডাবলিনের স্যান্ডিমাউন্ট মাঠে সাংবাদিকদের সেটিই বললেন তামিম, ‘একটা সময় ৫ রানের জন্য ৫-১০ বল আটকে গিয়েছিলাম। সুন্দর শট খেলছি ফিল্ডারের হাতে বল চলে যাচ্ছে। কেন যেন সব ঠিকঠাক হচ্ছিল না। তখন যদি আমার অন্য প্রান্তের সঙ্গীরও একই অবস্থা হতো, তাহলে দুজনের একজনকে উইকেট দিয়ে আসতে হতো। সে যে ধরনের ব্যাটিং করেছে, আমার ওপর থেকে চাপ অনেক কমিয়ে দিয়েছে। যখন আপনি এভাবে ভুগবেন উইকেট ছুড়ে বলতে হবে, আজ হচ্ছিল না! এটা খুব কঠিন, উইকেটে এভাবে থেকে গেলে ১০টা কথা শুনবেন।’
এই সিরিজে তামিম ওপেন করছেন সৌম্যকে নিয়ে। কদিন আগেও করেছেন লিটন দাসকে নিয়ে। ওপেনিং জুটিতে তামিম-সৌম্য থাকা মানেই দুজনই বাঁহাতি। প্রতিপক্ষের বোলিং কিংবা ফিল্ডিং কৌশল এলোমেলো করে দিতে কখনো ডান-বাঁহাতি সমন্বয়টা বেশ কাজে দেয়। তামিম অবশ্য মনে করেন না, ওপেনিং জুটিতে ডান হাতি-বাঁহাতি সমন্বয় গুরুত্বপূর্ণ কোনো বিষয়, ‘মনে করি না এটা কোনো ব্যাপার। আধুনিক ক্রিকেটে এটা যদি এতই ব্যাপার হতো তাহলে সর্বকালের অন্যতম সেরা জুটি হতো না দুই বাঁহাতি ব্যাটসম্যান হেইডেন-ল্যাঙ্গারের। অনেক দলের কৌশল থাকতে পারে, আমার কাছে এটা কোনো ব্যাপার না।’
উইকেটকে কীভাবে কাজে লাগানো যায়, সেটিই বড় ব্যাপার মনে করেন তামিম, ‘বাঁহাতি-ডানহাতি ব্যাটিং দিয়ে ওপেন করানো—১০ বছর আগে এটা শুনতে ভালো লাগত। আধুনিক ক্রিকেটে সবাই এতে অভ্যস্ত। অনেক দলের দেখেন ওপেনিং জুটির দুজনই বাঁহাতি। হ্যাঁ, ডানহাতি-বাঁহাতি হলে ঘন ঘন ফিল্ডার বদলাতে হয়। হ্যাঁ, এটার কিছু সুবিধা আছে। তবে ব্যক্তিগতভাবে মনে করি না এটা বড় কোনো ইস্যু।’
আজ ডাবলিনের আকাশে ছেঁড়া ছেঁড়া মেঘ থাকলেও অনুশীলন করতে প্রকৃতি খুব একটা বাধা দেয়নি। কাল বাংলাদেশ দলের ছুটি। ১৩ মে, পরের ম্যাচের আগে বেশ কদিনের বিরতি। সতেজ-চনমনে হতে বিরতিটা ভালো কাজে দেবেই বলে মনে করছেন তামিম।