গত ১৫ বছরে দেশে চামচা পুঁজিবাদ চোরতন্ত্রের জন্ম দিয়েছে। ফলে উন্নয়ন বাজেটের ৪০ শতাংশ অর্থ তছরুপ হয়েছে। নানা খাতে ব্যাপক লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে। সেই সঙ্গে দেশের ১০ শতাংশ মানুষ ৮৫ শতাংশ সম্পদ ভোগ করছে। শুধু দারিদ্রই নয়, সম্পদ ভোগের ক্ষেত্রেও তৈরি হয়েছে ব্যাপক বৈষম্য। পরপর তিনটি জাতীয় নির্বাচনের মাধ্যমে দুর্নীতির বিষবৃক্ষ রোপণ হয়েছে। অর্থনীতির অবস্থা মূল্যায়নে গঠিত শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির সংবাদ সম্মেলনে এসব বিষয় উঠে আসে।
সোমবার রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এতে মূল বক্তব্য রাখেন শ্বেতপত্র কমিটির প্রধান বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। সঙ্গে অন্য সদস্যরাও তাদের প্রতিক্রিয়া তুলে ধরেন। এর আগের দিন রোববার অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান ড. ইউনূসের কাছে প্রতিবেদন জমা দেয় শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটি।
সোমবারের অনুষ্ঠানে সাধারণ মানুষের উদ্বৃতি দিয়ে জানানো হয়, ১৫ বছরে সবচেয়ে বেশি দুর্নীতি করেছেন আমলারা (পোশাক পরা ও পোশাক ছাড়া)। দ্বিতীয় অবস্থানে রাজনীতিবিদ এবং তৃতীয় ব্যবসায়ীরা। খাতভিত্তিক বিবেচনায় সবচেয়ে বেশি দুর্নীতি হয়েছে ব্যাংকিং খাতে। দ্বিতীয় ভেৌত অবকাঠামো, তৃতীয় জ্বালানি এবং দুর্নীতির চতুর্থ খাত হলো আইটি বা তথ্যপ্রযুক্তি।
তাদের মতে, এতদিন সবার শঙ্কা ছিল মধ্যম আয়ের ফাঁদে পড়তে যাচ্ছে দেশ। কিন্তু ইতোমধ্যে এই ফাঁদে পড়ে গেছে। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে ঋণের ফাঁদ। বৈদেশিক ঋণ পরিশোধের চাপসহ নানা কারণে অর্থনীতি বড় চ্যালেঞ্জে। সমস্যা উত্তরণে কয়েকটি সুপারিশ করেছে কমিটি। এগুলো হলো গত ৫ বছর অর্থনীতির ব্যবস্থাপনার একটি হিসাব দিতে হবে। দ্বিতীয়ত, আগামী ৬ মাসের জন্য একটি পরিকল্পনা প্রণয়ন, তৃতীয়ত, ২ বছরের জন্য একটি মধ্যমেয়াদি পরিকল্পনা দিতে হবে। চতুর্থত, পরিসংখ্যানের নির্ভরতার জন্য একটি ডাটা কমিশন করতে হবে এবং পঞ্চম বিষয় হলো বিদেশিদের নিয়ে একটি ডেভেলপমেন্ট ফোরাম বা উন্নয়ন বৈঠক করা জরুরি। এই বৈঠকে উন্নয়ন সহযোগী, রপ্তানিতে বাজার সুবিধা দেওয়া দেশের প্রতিনিধি, বিদেশি বিনিয়োগকারী এবং যেসব দেশ থেকে বেশি রেমিট্যান্স আসে, ওই দেশের প্রতিনিধি থাকতে হবে। এসব সুপারিশের পাশাপাশি আগামী জাতীয় বাজেটের জন্য দেওয়া হয়েছে একটি কাঠামো।
দেশের আর্থিক খাতের প্রকৃত অবস্থা মূল্যায়নে বিশষ্টি অর্থনীতিবিদ ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্যকে প্রধান করে গত ২৮ আগস্ট ১১ সদস্যবিশষ্টি শ্বেতপত্র প্রস্তুতি কমিটি গঠন করে অন্তর্বর্তী সরকার। কমিটিকে যেসব বিষয়ে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে সেগুলো হলো, সরকারি ব্যয় ব্যবস্থাপনা, মূল্যস্ফীতি ও খাদ্য ব্যবস্থাপনা, জিডিপি প্রবৃদ্ধি, বহির্খাত (আমদানি, রপ্তানি, রেমিট্যান্স, এফডিআই, রিজার্ভ এবং বিদেশি ঋণ), ব্যাংকিং খাতের পরিস্থিতি, বিদ্যুত ও জ্বালানি পরিস্থিতি, সরকারের ঋণ, পরিসংখ্যানের মান, বাণিজ্য, রাজস্ব, ব্যয়, মেগা প্রকল্প, ব্যবসার পরিবেশ, দারিদ্র ও সমতা, পুঁজিবাজার, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, নারী ও জলবায়ু ইস্যু, বেসরকারি বিনিয়োগ এবং কর্মসংস্থান। কমিটি রোববার রিপোর্ট জমা দিয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়েছে, শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী সরকারের সময়ে গড়ে প্রতিবছর ১৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার পাচার হয়েছে। স্থানীয় মুদ্রায় যা ১ লাখ ৮০ হাজার কোটি টাকার বেশি। শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির প্রতিবেদনে প্রতিটি খাতে লুটপাট ও দুর্নীতির চিত্র উঠে এসেছে। কমিটির সদস্য ড. একে এনামুল হক বলেন, দেশের উন্নয়ন প্রকল্পে মোট ব্যয়ের ৪০ শতাংশ লুটপাট করা হয়েছে। ড. আবু ইউসুফ বলেন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) যে আয়কর রিটার্ন দাখিলের দাবি করে, সেই পরিমাণ রাজস্ব আহরণ হয় না।
তিনি বলেন, ৪২ লাখ টিআইএনধারী (করদাতা শনাক্তকরণ নম্বর) রিটার্ন জমা দেয়। এর মধ্যে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী ১৫-১৬ লাখ। বেশি টিআইএনধারী রিটার্ন জমা দিলেও কর দেন না। ফলে প্রকৃত করদাতা ২২ থেকে ২৩ লাখ। তিনি বলেন, কোনো করদাতা মারা গেলে সেই সার্টিফিকেট বা নম্বর কী হবে, সেটির কোনো কার্যকর প্রক্রিয়াও নেই। এনবিআর পূর্ণাঙ্গ টিআইএনধারীর তালিকা শ্বেতপত্র কমিটিকে দিতে পারেনি।
তার মতে, কীভাবে বিভিন্ন ব্যক্তি, গোষ্ঠী বা খাতকে কর ছাড় দেওয়া হয়েছে, তার কোনো সঠিক কাঠামো নেই। তবে ১ কোটি করদাতা নির্ধারণ করা গেলে রাজস্ব আয় অনেক বাড়ানো সম্ভব। কমিটির সদস্য ড. তাসনীম সিদ্দিকী বলেন, অভিবাসনের জন্য মানুষের কাছ থেকে অতিরিক্ত টাকা নেওয়া হয়েছে। অভিবাসনের মাধ্যমেও অর্থ পাচার হয়েছে। ড. সেলিম রায়হান বলেন, যেসব খাতে সংস্কার দরকার, সেখানে শক্তিশালী উদ্যোগ নিতে হবে।
কমিটির আরেক সদস্য ড. ইমরান মতিন বলেন, ১০ শতাংশ মানুষের কাছে ৮৫ ভাগ সম্পদ। দারিদ্র বিমোচনের যে তথ্য প্রচার করা হয়েছে, তা সঠিক নয়। অর্থাত্ এমন মানুষ রয়েছে যাদের টোকা দিলে দারিদ্রসীমার নিচে নেমে যাবে। সেটিকে কার্যকর অর্জন বলে না। কোনো মানুষ ২ দিন কাজ না করলেই দারিদ্রর নিচে চলে আসবে। এতে দারিদ্রয হার দ্বিগুণ হয়ে যাবে।
ড. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, মেগা প্রকল্পের মাধ্যমে যেসব টাকা লোপাট করা হয়েছে, পরবর্তী প্রজন্মের ঘাড়ে সেই বোঝা থেকে গেল। অর্থাত্ বর্তমান প্রজন্ম ও আগামী প্রজন্মের ঘাড়ে থাকবে ঋণের বোঝা। তাই বিভিন্ন প্রকল্পের জন্য অতীতে যেসব চুক্তি হয়েছে সেগুলো যাচাই করা দরকার। মেগা প্রকল্পের মাধ্যমেও টাকা পাচার হয়েছে। কমিটির আরেকজন সদস্য ড. জাহিদ হোসেন বলেন, সামষ্টিক অর্থনীতিকে স্থিতিশীল করতে হবে। নিশ্চিত করতে হবে জবাবদিহিমূলক প্রশাসন। তেৌফিকুল ইসলাম খান বলেন, সরকারি তথ্য-উপাত্তে বড় গলদ আছে।
শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির প্রধান দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য এ বিষয়ে বলেন, ‘৩০ অধ্যায়ের ৪০০ পৃষ্ঠার দীর্ঘ শ্বেতপত্রে উঠে এসেছে চামচা পুঁজিবাদ কীভাবে অলিগার্কদের জন্ম দিয়েছে। কীভাবে তারা নীতি প্রণয়নকে নিয়ন্ত্রণ করেছে। দেশের ৮৫ শতাংশ সম্পদ ১০ শতাংশ মানুষ ভোগ করছেন। চামচা পুঁজিবাদ থেকে চোরতনে্ত্র পরিণত হয়েছিল পুরো কাঠামো। এর উত্স তিনটি ত্রুটিপূর্ণ নির্বাচন। এসব নির্বাচনে গণতানি্ত্রক প্রতিষ্ঠান এবং স্বচ্ছতার জায়গা নষ্ট করে দেওয়া হয়েছে। নষ্ট করা হয়েছে স্থানীয় সরকারের জবাবদিহিতা। তিনি বলেন, জাতিসংঘ এখনো মনে করছে, বাংলাদেশের অর্থনীতি স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে বেরিয়ে যাওয়ার জন্য যথষ্টে। উন্নয়নশীল দেশ হওয়ার পথে কোনো বাধা নেই।
তবে ইতোমধ্যেই মধ্য আয়ের ফঁাদে পড়েছে দেশ। শ্বেতপত্রের সুপারিশ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, দেশের অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করা না গেলে, দীর্ঘমেয়াদি সংস্কার কার্যক্রম করা যাবে না। পরবর্তী জাতীয় বাজেট আসার আগে দেশের অর্থনৈতিক সংস্কারে বর্তমান সরকার কী উদ্যোগ নিয়েছে বা আগামী ৬ মাসের জন্য কী সদ্ধিান্ত নেবে, তা স্পষ্ট করতে হবে। আরও দায়বদ্ধতা আনতে হবে। আপাতদৃষ্টিতে মনে হচ্ছে, এই সরকার পাঁচ বছর দায়িত্বে থাকবে না। তবে অন্তত আগামী দুই বছরের কর্মপরিকল্পনা সামনে থাকতে হবে।
তিনি আরও বলেন, সরকারকে মধ্যমেয়াদে এমন পরিকল্পনা দিতে হবে যাতে বিনিয়োগ, কর্মসংস্থান, শিক্ষার মান এবং পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর জন্য সুস্পষ্ট পরিকল্পনা থাকে। এছাড়া অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার সঠিক মূল্যায়ন করতে হবে। কেননা সেখানে যে উচ্চাভিলাষী লক্ষ্য ধরা ছিল, এগুলোর দায় কে নেবে তা স্পষ্ট করতে হবে। এছাড়া এলডিসি থেকে বের হওয়ার ক্ষেত্রে সঠিক সদ্ধিান্ত নেওয়া জরুরি। কারণ এখন আর পিছিয়ে আসার সুযোগ নেই। যদিও যেসব রপ্তানিকারকরা, বাজার সুবিধা পান, তারা ২০২৬ সালে এলডিসি উত্তরণ না করার জন্য নানাভাবে চাপ সৃষ্টি করছেন। তারা এটি পেছাতে চায়। কিন্তু সেটি হতে দেওয়া যাবে না। কেননা খোঁজে দেখতে হবে ওই ব্যবসায়ীদের মূল কোথায়। এছাড়া রাজনৈতিকভাবেও পরে আওয়ামী লীগ বলবে, আমরা সোনার সংসার রেখে এসেছিলাম, দুই বছরে তারা সব শেষ করে দিয়েছে। এছাড়া সরকারের তথ্য-উপাত্তের ঘাটতি আছে। এসডিজির সঠিক মূল্যায়নের জন্য সঠিক তথ্য-উপাত্ত নিশ্চিত করতে হবে। সর্বশেষ সুপারিশ হলো উন্নয়নসহযোগী সংস্থা বা দেশ, যেসব দেশে আমরা জনশক্তি রপ্তানি করি এবং যেসব দেশে আমরা পণ্য রপ্তানি করি সব পক্ষকে নিয়ে দ্রুত একটি বিডিএফ (বাংলাদেশ উন্নয়ন ফোরাম) বৈঠক করা দরকার।
আগামী বাজেটের জন্য ফ্রেমওয়ার্ক : আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটের জন্য একটি ফ্রেমওয়ার্ক দিয়েছে শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটি। এতে জাতীয় বাজেট অন্তর্বর্তী সরকারের জন্য একটি মূল্যবান সুযোগ হিসাবে উলে্লখ করে স্বল্পমেয়াদি সংস্কার বাস্তবায়নে নিষ্ঠা প্রদর্শনের জন্য ভিত্তি স্থাপন করার কথা বলা হয়েছে। শ্বেতপত্রে বলা হয়েছে, বাজেট হচ্ছে পাবলিক ফাইন্যান্স ম্যানেজমেন্ট শক্তিশালী করার মধ্যমেয়াদি এজেন্ডা। এই অনুশীলনের শুরুতে একটি বিশ্বাসযোগ্য আর্থিক কাঠামো প্রস্তুত করা উচিত। তাই অন্তর্বর্তী সরকার আগামী অর্থবছরের জাতীয় বাজেট প্রণয়নে পাঁচটি পথনির্দেশক নীতি বিবেচনা করতে পারে। এগুলো হলো, আর্থিক সংস্থান প্রসারিত করার ওপর জোর দেওয়া দরকার। এর মধ্যে রাজস্ব আদায়ের স্থানকে কার্যকরভাবে উন্নত করার জন্য একটি কেৌশলগত এবং বহুমুখী পদ্ধতি অবলম্বন করা উচিত। যা অতিরিক্ত দেশীয় রাজস্ব উত্পাদন এবং আর্থিক ব্যবস্থার মধ্যে ফাঁকি কমানোর ওপর জোর দেয়। ২০২৬ বাজেট বিদ্যমান করদাতাদের ওপর অযাচিত বোঝা চাপানোর পরিবর্তে করের ভিত্তি প্রসারিত করার দিকে মনোযোগের সুযোগ রয়েছে। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ডিজিটাল ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে কর ব্যবস্থার আধুনিকীকরণের মধ্য দিয়ে এনবিআর আগে অব্যবহূত সম্পদ ব্যবহার করতে পারে। ডিজিটাল অর্থনীতির ক্রমবর্ধমান চাহিদার সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে পারে। জাতীয় বাাজেটে বর্তমান করছাড়ের একটি পুঙ্খানুপুঙ্খ বিশে্লষণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তথ্যের সূক্ষ্মভাবে মূল্যায়ন করে, সরকার অকার্যকর কর প্রণোদনা চিহ্নিত করতে পারে এবং পর্যায়ক্রমে কেৌশলগত খাতগুলোকে উত্সাহিত করতে প্রচষ্টোর নির্দেশ দিতে পারে। অন্তর্বর্তী সরকারের উচিত কর ফাঁকি প্রতিরোধকে অগ্রাধিকার দিয়ে একটি উদাহরণ স্থাপন করা। আরও অন্তর্ভুক্তিমূলক আর্থিক ভিত্তি গড়ে তোলার জন্য কমপ্লায়েন্স মেকানিজম শক্তিশালী করা। শ্বেতপত্রে আরও বলা হয়, বাজেটে সরকারি ব্যয় প্রবাহিত করতে উদ্যোগ নিতে হবে। আরও ভারসাম্যপূর্ণ অর্থনৈতিক ল্যান্ডস্কেপ গড়ে তোলার জন্য সামাজিক নিরাপত্তা, কৃষি এবং এসএমইতে সহায়তা বাড়াতে হবে। জাতীয় বাজেট শুধু অবকাঠামোতে নজর না দিয়ে এই গুরুত্বপূর্ণ খাতে বিনিয়োগকে অগ্রাধিকার দিয়ে বিনিয়োগকারীদের উত্সাহিত করা উচিত। অগ্রাধিকার হিসাবে স্বাস্থ্য ও শিক্ষায় অনুকরণীয় বিনিয়োগ চিহ্নিত করা এবং অনুসরণ করা অত্যাবশ্যক।