দল হারছে কোচ সুজন ক্যাসিনোতে

Sujon-samakal-5d3ff7da56ab1

যে কোনো সিরিজ চলাকালে কোচ বা ম্যানেজারকে খেলোয়াড়দের চেয়েও বেশি সুশৃঙ্খল হতে হয়, যাতে করে দলীয় শৃঙ্খলাটা ঠিকঠাক থাকে। যে কোনো নেতিবাচক প্রভাব থেকে দলকে আগলে রেখে খেলোয়াড়দের ঐক্যবদ্ধ করার কাজটিও করতে হয় কোচকেই। অথচ শ্রীলংকা সফরে বাংলাদেশ দলের ভারপ্রাপ্ত কোচ খালেদ মাহমুদ সুজনের বিরুদ্ধে এই টিম রুলস ভাঙার অভিযোগ উঠেছে। রোববার স্বাগতিক শ্রীলংকার কাছে সিরিজ হারের পর রাতে কলম্বোর ক্যাসিনোতে দেখা যাওয়ায় সমালোচনা হচ্ছে তার। সুজনের ক্যাসিনোতে যাওয়ার ছবি এবং ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরালও হয় সোমবার। এ ব্যাপারে তার ফোনে যোগাযোগ করা হলে জানান, ক্যাসিনোতে গেলেও খেলেননি তিনি।

এবারের বিশ্বকাপ চলাকালেও ইংল্যান্ডের একাধিক ক্যাসিনোতে খেলতে দেখা গেছে সুজনকে। ২০১৫ সালের বিশ্বকাপ চলাকালেও মেলবোর্নে তার ক্যাসিনো খেলার ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছিল সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। জাতীয় দলের ম্যানেজার এবং কোচের দায়িত্ব পালন করার সময়ে বার বার এভাবে সুজন ক্যাসিনোতে যাওয়ায় সমালোচনা হচ্ছে। একে তো শ্রীলংকার কাছে হোয়াইটওয়াশের শঙ্কায় পড়েছে জাতীয় দল, তার ওপর ক্যাসিনো বিতর্কে জড়িয়ে ভালোই চাপে আছেন সুজন। এ ছাড়াও বিশ্বকাপ শেষে তিনি ম্যানেজারের রিপোর্ট জমা না দেওয়ায় বোর্ডের ভেতর থেকেও প্রশ্ন উঠেছে।

বাংলাদেশের ক্রিকেটের পুরনো রীতি, যে কোনো সিরিজ বা টুর্নামেন্ট শেষ হলেই কোচ ও ম্যানেজারকে রিপোর্ট জমা দিতে হবে। এই রিপোর্টের ওপর ভিত্তি করেই জাতীয় দলকেন্দ্রিক পরবর্তী সিদ্ধান্তগুলো নেওয়া হয়। ২০০৩ সালের বিশ্বকাপ শেষে সে সময়ের ম্যানেজার এসএম ফারুকের দেওয়া তেমনি এক রিপোর্টের ওপর ভিত্তি করে জাতীয় দলে বেশ কিছু পরিবর্তন আনা হয়েছিল। খালেদ মাসুদ পাইলটকে অধিনায়কের পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায়।

এ রকম আরও অনেক দৃষ্টান্তমূলক সিদ্ধান্ত অতীতে ম্যানেজারের রিপোর্টের ওপর ভিত্তি করে নিয়েছে বিসিবি। অথচ এবার ইংল্যান্ডে ঘটনাবহুল বিশ্বকাপ শেষে ম্যানেজার খালেদ মাহমুদ সুজন কোনো প্রতিবেদনই দেননি। এ ব্যাপারে বিসিবির মিডিয়া কমিটির চেয়ারম্যান জালাল ইউনুসের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, ‘বিশ্বকাপ শেষ করে ম্যানেজার বা হেড অব ডেলিগেশনের কেউই রিপোর্ট দেননি। রিপোর্ট থাকলে বোর্ডসভায় আলোচনা করা যেত।’

গত ৫ জুলাই পাকিস্তানের বিপক্ষে বিশ্বকাপের শেষ ম্যাচ খেলে দুই দিন পর দেশে ফেরে জাতীয় দল। এর একদিন পরই প্রধান কোচ স্টিভ রোডসকে বরখাস্ত করা হয়। বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন সংবাদ সম্মেলনে রোডসের চুক্তি বাতিল করার কারণ ব্যাখ্যা করেন। ভারতের বিপক্ষে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচের আগে খেলোয়াড়দের পাঁচ দিন ছুটি দেওয়া, ম্যাচ চলাকালে মাঠে বার্তা না দেওয়া এবং পাকিস্তানের বিপক্ষে একাদশ পরিবর্তন করা নিয়ে রোডসের বিরুদ্ধে বোর্ড সভাপতির অভিযোগ। পাপন বা বোর্ড কর্মকর্তাদের অনুমোদন ছাড়া ক্যাম্প ছুটি দেওয়া এবং একাদশ পরিবর্তন করা নিয়েই মূল ক্ষোভ বোর্ড সভাপতির।

অথচ বিসিবির নির্ভরযোগ্য একটি সূত্র জানায়, ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের চেয়ারম্যান আকরাম খান ও ম্যানেজার খালেদ মাহমুদ সুজন এ দুটি কারণই জানতেন। বোর্ডের এই দুই কর্মকর্তাকে জানিয়েই ছুটি এবং একাদশ পরিবর্তন করেছেন রোডস। বিশ্বকাপ চলাকালে ড্রেসিংরুমে, টিম মিটিংয়ে ছোটখাটো আরও অনেক ঘটনাই ঘটেছে। যেগুলোর নেতিবাচক প্রভাব খেলার মাঠেও পড়েছে বলে একজন বোর্ড পরিচালক জানান। পুরো টুর্নামেন্টের পারফরম্যান্স এবং মাঠের বাইরের ঘটনাগুলো নিয়ে সুজন ও আকরামের রিপোর্ট আশা করেছিলেন বোর্ডের বাকি পরিচালকরা।

বোর্ডসভায় এ নিয়ে আলোচনা হলে ভুলগুলো শুধরে নেওয়া সম্ভব হতো বলে মনে করেন আহমেদ সাজ্জাদুল আলম ববি। তিনি বলেন, ‘ম্যানেজার এবং কোচের রিপোর্ট পেলে এর ভিত্তিতে আলোচনা ও সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা যেত। আমি মনে করি, দলের সঙ্গে যারা দায়িত্বে থাকেন তাদের রিপোর্ট খুব প্রয়োজনীয়।’ বাস্তবতা হলো, এই অতি গুরুত্বপূর্ণ রিপোর্ট বিসিবিতে এখন আর জমা হয় না।

 ” ট্রয় নগরী পুরছে আর নীরু বাঁশি বাজাচ্ছে ” এ কথাটা আবারো প্রমান হলো বাংলার অর্বাচিন কোচ খালেদ মাহমুদ বেলায় , বঙ্গবন্ধু কন্যার দেশে এধরনের লোকগুলো কেন এবং কি ভাবে এত সুযোগ পাচ্ছে তা বোধগম্য নয় ।
Pin It