এখন থেকে দিন-রাত নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের আশ্বাস দিয়ে বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধি মেনে নিতে দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
শুক্রবার সন্ধ্যায় রাজধানীর হাতিরপুলে শহীদ সেলিম-দেলোয়ারের স্মরণে এক আলোচনা সভায় তিনি এ আহ্বান জানান।
ওবায়দুল কাদের বলেন, “সাময়িক এই মূল্য বৃদ্ধি আপনারা মেনে নেবেন আপনাদের দীর্ঘস্থায়ী সমাধানের জন্য। আপনাদের ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ আরও সহজলভ্য করার জন্য একটু মূল্য বৃদ্ধি হচ্ছে।
“আমি আশা করি, ঢাকাবাসী এটা মেনে নেবেন। এতে করে বিদ্যুতের সরবরাহ ঘাটতি হবে না, বিদ্যুতের সরবরাহ ২৪ ঘণ্টা চলবে। বঙ্গবন্ধু কন্যার পক্ষ থেকে আমাদের আহ্বান, আশা করি আপনারা ভালো থাকবেন।”
বিদ্যুৎ ও পানি পেতে কোনো অসুবিধা হচ্ছে না দাবি করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, এখন ৯৬ ভাগ মানুষ সুবিধা পাচ্ছে। শেখ হাসিনার অঙ্গীকার মুজিব বর্ষে শতভাগ মানুষের ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেওয়া।
ওবায়দুল কাদের বলেন, শেখ হাসিনার আমলে ঢাকায় পানি ও বিদ্যুৎতের হাহাকার নেই। এই হাহাকার যেন আর কখনও না হয়; পানি-বিদ্যুৎতের সরবরাহ যেন অব্যাহত থাকে, সে লক্ষ্যে ব্যয় সমন্বয়ের স্বার্থেই এই দাম বৃদ্ধি।
“এটা সাময়িক, এটা একশত ভাগের কাছে বিদ্যুৎ পৌঁছানোর জন্য সাময়িক একটু কষ্ট হবে। এরপরেও বিদ্যুতের জন্য সরকারকে সাড়ে তিন হাজার টাকা ভর্তুকি দিতে হবে।”
পাইকারি পর্যায়ে ৮ দশমিক ৪ শতাংশ ও খুচরা ৫ দশমিক ৩ শতাংশ বাড়িয়ে বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি) ইউনিটপ্রতি বিদ্যুতের দাম যথাক্রমে ৫ টাকা ১৭ পয়সা ও ৭ টাকা ১৩ পয়সা নির্ধারণ করেছে। এদিকে ঢাকা ওয়াসা শুক্রবার এক গণবিজ্ঞপ্তিতে পানির দাম বাড়ানোর ঘোষণা দেয়, যাতে আবাসিক সংযোগে খরচ বাড়ছে ২৫ শতাংশ।
ভারতকে বাদ দিয়ে মুজিব বর্ষ হয় না
ভারতের প্রতিনিধিত্ব বাদ দিয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশত বর্ষের উৎসব করা যায় না বলে মন্তব্য করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।
তিনি বলেন, ভারতের দিল্লি শহরে তাদের অভ্যন্তরীণ সংকট চলছে। একথা সত্য যে পাশের ঘরে আগুন লাগলে সে আগুনের আঁচ প্রতিবেশীর ঘরেও আসে।
“… ভারত আমাদের বিশ্বস্ত বন্ধু, আমাদের মধ্যে চমৎকার সম্পর্ক বিরাজ করছে, আমরা ভারত সরকারকে বলব, আজকে দিল্লীতে যে সংকট চলছে, যে রক্তপাত- এটা আর না বাড়িয়ে নিজেদের সমস্যা অতি দ্রুত সমাধান করে নেবেন। কিন্তু এর জন্য ১৯৭১ সালের রক্তের সম্পর্ক, সেই বন্ধুত্বকে বিষর্জন দিতে পারি না।”
মুজিব বর্ষের উৎসবে ভারতকে বাদ দিলে অকৃতজ্ঞতা ও বন্ধুত্বের প্রতি অবমাননা প্রকাশ করা হবে মন্তব্য করে কাদের বলেন, “কারণ এই স্বাধীনতা, বিদেশি সাহায্য সহানুভুতি, মুক্তিযুদ্ধের সময় আশ্রয়-প্রশ্রয়, দেশ গঠনের অবদান অন্য কোনো দেশ দেয়নি। দুঃসময়ের বন্ধুদের বাদ দিয়ে মুজিববর্ষ আমরা পালন করতে পারি না।
“কাজেই মুজিব বর্ষের উৎসবে ভারত যেমন প্রতিনিধিত্ব করবে- এটা যেমন স্বাভাবিক বিষয় তেমনি, অভ্যন্তরীণ কোনো সংকটে যদি কোনো রক্তপাত হয় সেটা নিয়ে ভারত দ্রুত আলোচনা করে যেন সমাধান করে। এই ব্যাপারে আমরা নতুন দিল্লি সরকারের কাছে আহ্বান জানাচ্ছি।”
শহীদ সেলিম-দেলোয়ার স্মৃতি পরিষদের সভাপতি আব্দুল ওয়াদুদের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক।
সভা শেষে শহীদ সেলিম-দেলোয়ারের জন্য দোয়া ও মিলাদ মাহফিল করে।