দারিদ্র্য বিমোচনে যাকাতের ‘সুষ্ঠু ব্যবহার’

zakat-fair-+04052019-0004

সঠিকভাবে যাকাতের অর্থ আদায় করে তার কার্যকর ব্যবহারের মাধ্যমে দরিদ্র মানুষের আয়ের সুযোগ তৈরি করা গেলে দারিদ্র্য বিমোচন সহজ হতে বলে মনে করেন এ বি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম।

শনিবার রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউটে সপ্তম যাকাত মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।

সেন্টার ফর যাকাত ম্যানেজমেন্ট (সিজেডএম) দিনব্যাপী এ মেলার আয়োজন করে। মেলায় যাকাত সংক্রান্ত পরামর্শ ডেস্ক, বিভিন্ন ইসলামিক বই, যাকাতভিত্তিক বিভিন্ন কার্যক্রম উপস্থাপন করা হয়।

তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক অর্থ উপদেষ্টা মির্জ্জা আজিজ বলেন, “বাংলাদেশে এখন আয় বৈষম্য ও দারিদ্র্য সবচেয়ে বড় সমস্যা। এক্ষেত্রে যাকাতের ভূমিকা খুব নগন্য। কিন্তু যাকাত দারিদ্র্য বিমোচনে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখতে পারত।”

তিনি বলেন, “ব্যক্তিগতভাবে এবং ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানগুলো এককভাবে যাকাত দিচ্ছে। এতে সাময়িকভাবে দরিদ্র মানুষের উপকার হয়। কিন্তু টেকসই দারিদ্র্য বিমোচন হচ্ছে না।

“অথচ প্রাতিষ্ঠানিকভাবে যাকাত সংগ্রহ করে আয়বর্ধক কাজে দরিদ্র মানুষকে যুক্ত করা গেলে দারিদ্র্য বিমোচন সহজ হত।”

ধনীদের যাকাত দিতে উৎসাহিত করতে প্রত্যক্ষ কর থেকে যাকাতের ২ দশমিক ৫০ শতাংশ বাদ দেওয়ার পরামর্শও রাখেন মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, “দেশের সবাই সচেতনভাবে যাকাত দিলে সেই অর্থ দিয়ে দেশের দারিদ্র্য বিমোচন করা সম্ভব।

“কিন্তু দেশের বিশাল একটা অংশ যাকাতের বিষয়ে সচেতন নয়।”

মন্ত্রী বলেন, “সম্প্রতি বলা হচ্ছে, বাংলাদেশে ধনীর সংখ্যা দ্রুত বাড়ছে। এটা একদিকে ভালো। আর অন্যদিকে এটি একটি চিন্তার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। কারণ দেশে আয় বৈষম্য বাড়ছে।”

আয় বৈষম্য কমাতে যাকাতের বাইরে আরও বেশি অর্থ সহায়তা নিয়ে ধনীদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি।

রাজস্ব বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান মোহা. আবদুল মজিদ বলেন, “সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা করা সম্ভব হলে দেশে প্রায় ৩০ হাজার কোটি টাকার যাকাত আদায় করা সম্ভব। কিন্তু যাকাত ব্যবপস্থাপনার দুর্বলতার কারণেই দেশে বৈষম্য বাড়ছে।

“সরকারের তত্ত্বাবধান ছাড়া যাকাতের সুফল পাওয়া যাবে না। বর্তমানে মুসলিম বিশ্বে যে দারিদ্র্য বিরাজ করছে, যাকাতের অর্থের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা করা সম্ভব হলে সেই দারিদ্র্য দূর হবে।”

Pin It