দিল্লির অক্সিজেনে বিষ ঢুকে গেছে! গলার কাছে নিশ্বাস আটকে যায়। তবে ভারতের বিপক্ষে সাকিব-তামিম না থাকলেও টাইগাদের বিশ্বাস আটকায়নি। টস জিতে প্রথমে বোলিংয়ে নেমে বাংলাদেশের বোলাররা ভারতের ব্যাটসম্যানদের নিশ্বাস চেপে ধরে। পরে ব্যাটে নেমে মুশফিক-সৌম্যর দারুণ ব্যাটিংয়ে তিন বল থাকতে ৭ উইকেটের বড় জয় তুলে নেয় টাইগাররা। অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহর ছক্কায় শেষ হাসি হাসে বাংলাদেশ। সাকিব-তামিম ছাড়াই দিল্লি জয় করে টাইগাররা। টি-২০ ক্রিকেটে ভারতের বিপক্ষে তুলে নেয় প্রথম জয়।
প্রায় সাড়ে তিন বছর আগে ব্যাঙ্গালুরুয় টি-২০ বিশ্বকাপের সেই ম্যাচের সঙ্গে এই ম্যাচের অনেক মিল। সেবার বাংলাদেশ হেরেছিল মাত্র এক রানে। মুশফিক-মাহমুদুল্লাহ জয়ের প্রান্তে গিয়েও ম্যাচ বের করতে পারেননি। এবার তাদের হাত ধরেই ভারতের মাটিতে টাইগাররা তুলে নিল প্রথম জয়। সেবার ভারত শুরুতে ব্যাট করে তুলেছিল ১৪৬ রান। এবার তাদের সংগ্রহ দাঁড়ায় ১৪৮।
দিল্লির ফিরোজ শাহ কোটলায় প্রথমে ব্যাট করতে নেমে শেখর ধাওয়ানের ৪২ বলে ৪১ রান এবং শ্রেয়াসের আয়ারের ২২ ও ঋষভ পান্তের ২৭ রানে ভর করে দেড়শ’ ছোঁয়া লক্ষ্য দেয় ভারত। লক্ষ্যটা আরও ছোট পেতে পারত বাংলাদেশ। তবে শেষ দিকে ওয়াশিংটন সুন্দর এবং ক্রুনাল পান্ডিয়া গুরুত্বপূর্ণ ২৮ রান যোগ করেন। সুন্দর করেন ১৪, ক্রুনাল খেলেন ১৫ রানের ইনিংস।
লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরুতে ধাক্কা খায় বাংলাদেশ। সাকিব-তামিম না থাকায় টপ অর্ডারে টাইগারদের বড় ভরসা ছিলেন লিটন দাস। প্রথম ওভারেই তিনি ফিরে যান। সেখান থেকে ২০ বছরের তরুণ নাঈম শেখ ও সৌম্য সরকার ৪৬ রান যোগ করেন। অভিষেক ম্যাচে ওপেনার নাঈম ২৬ রান করে আউট হন। এরপর সৌম্য এবং মুশফিক ৬০ রানের দারুণ এক জুটি গড়েন। সৌম্য ফিরে যান ৩৯ রান করে। তখনও ম্যাচ দুলছে।
শেষ তিন ওভারে ৩৫ রান দরকার ছিল বাংলাদেশ। ১৭তম ওভারের শেষ বলে সেট ব্যাটসম্যান সৌম্য আউট হয়েছেন। কিন্তু সাহসে ঘা লাগেনি টাইগারদের। মাহমুদুল্লাহ এবং মুশফিক দারুণভাবে পাড়ি দেন বাকিটা পথ। মুশফিক খেলেন ৪৩ বলে ৬০ রানের দারুণ ইনিংস। আটটি চার এবং একটি ছক্কা মারেন। বাংলাদেশ ১৮তম ওভারে ১৩ এবং ১৯তম ওভারে ১৮ রান নিয়ে ভারতের হাত থেকে ম্যাচ বের করে নেয়। দলের হয়ে শেষ দিকে ৭ বলে ১৫ রান করেন মাহমুদুল্লাহ।
বাংলাদেশের হয়ে দুই তরুণ স্পিনার আমিনুল ইসলাম এবং আফিফ হোসেন দারুণ বোলিং করেন। আমিনুল ৩ ওভারে ২২ রান দিয়ে নেন ২ উইকেট। আফিফ ৩ ওভারে দেন মাত্র ১১ রান। নেন ১ উইকেট। এছাড়া শফিউল ইসলাম ৪ ওভারে ৩৬ রান দিয়ে ২ উইকেট দখল করেন। আল আমিন ৪ ওভারে ২৭ রান দিয়ে উইকেট শূন্য থাকেন। প্রথম তিন ওভারে তিনি মাত্র ১১ রান দেন। তবে নিজের এবং ইনিংসের শেষ ওভারে দিয়ে বসেন ১৬ রান এই পেসার।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
ভারত: ২০ ওভারে ১৪৮/৬ (ধাওয়ান ৪১, রোহিত ৯, রাহুল ১৫, শ্রেয়াস ২২, পান্ত ২৭, দুবে ১, পান্ডিয়া ১৫*, সুন্দর ১৪*; শফিউল ৪-০-৩৬-২, আল আমিন ৪-০-২৭-০, মুস্তাফিজ ২-০-১৫-০, আমিনুল ৩-০-২২-২, সৌম্য ২-০-১৬-০, আফিফ ২-০-১৫-০, মোসাদ্দেক ১-০-৮-০, মাহমুদউল্লাহ ১-০-১০-০)
বাংলাদেশ: ১৯.৩ ওভারে ১৫৪/৩ (লিটন ৭, নাঈম ২৬, সৌম্য ৩৯, মুশফিক ৬০*, মাহমুদউল্লাহ ১৫*; চাহার ৩-০-২৪-১, সুন্দর ৪-০-২৫-০, খলিল ৪-০-৩৭-১, চেহেল ৪-০-২৪-১ , পান্ডিয়া ৪-০-৩২-০, দুবে ০.৩-০-৯-০ )।
মুশফিকের ফিফটি
খলিল আহমেদের বলে টানা দুই বলে বাউন্ডারিতে পঞ্চাশ স্পর্শ করলেন মুশফিকুর রহিম। ৪১ বলে স্পর্শ করলেন ফিফটি। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে তার পঞ্চম ফিফটি।