নতুন সরকারকে সব ধরনের সহযোগিতা দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন ঢাকায় কর্মরত বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকরা। উন্নয়ন ও অগ্রযাত্রায় বাংলাদেশের পাশে থাকবে বলে জানিয়েছেন তারা।
বৃহস্পতিবার বিকেলে রাজধানীতে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় কূটনীতিকদের উদ্দেশে ব্রিফিংয়ের সময় পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেনকে এই আশ্বাস দেন তারা। এ সময় দুর্নীতি ও সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে বর্তমান সরকারের ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি ও সুশাসন প্রতিষ্ঠায় অঙ্গীকার সম্পর্কে কূটনীতিকদের অবহিত করেন তিনি।
ব্রিফিং শেষে কূটনীতিকদের পক্ষে ঢাকায় কূটনৈতিক কোরের ডিন ও ভ্যাটিকান সিটির রাষ্ট্রদূত জর্জ কোচেরি এবং নরওয়ের রাষ্ট্রদূত সিডসেল ব্লেকেন বাংলাদেশের পাশে থাকার অঙ্গীকারের কথা সাংবাদিকদের জানান।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ ব্যাপারে জানানো হয়, ড. এ কে আব্দুল মোমেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর এদিনই প্রথমবারের মতো কূটনীতিকদের ব্রিফ করেন।
ব্রিফিংয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী সরকারের ভিশন-২০২১, এজেন্ডা-২০৩০ ও ভিশন-২০৪১ বিস্তারিতভাবে তুলে ধরেন। এ সময় পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম ও পররাষ্ট্র সচিব শহীদুল হক উপস্থিত ছিলেন।
ব্রিফিংয়ে যুক্তরাষ্ট্র, ভারত, যুক্তরাজ্য, জাপান, নরওয়ে, চীন, ফিলিস্তিন, কাতার, ভ্যাটিকান সিটি, মালয়েশিয়াসহ ঢাকার ৫৫টি বিদেশি মিশনের কূটনীতিকরা যোগ দেন।
প্রায় পৌনে এক ঘণ্টার ব্রিফিং শেষে ঢাকার কূটনৈতিক কোরের ডিন ও ভ্যাটিকান সিটির রাষ্ট্রদূত আর্চ বিশপ জর্জ কোচেরি সাংবাদিকদের বলেন, নতুন পরাষ্ট্রমন্ত্রী ঢাকায় কর্মরত বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকদের সঙ্গে পরিচিত হয়েছেন এবং সরকারের বিভিন্ন পরিকল্পনা সম্পর্কে ব্রিফ করেছেন। বিশেষ করে বাংলাদেশকে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে কীভাবে তুলে ধরতে চান, কীভাবে বাংলাদেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতির সুনাম আরও বেশি জানানো যায়, সেই পরিকল্পনার কথাও অবহিত করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। কূটনীতিকরাও বাংলাদেশের শান্তি, স্থিতিশীলতা, উন্নয়ন ও অগ্রগতিতে সব ধরনের সহযোগিতা নিয়ে পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তারা নতুন পররাষ্ট্রমন্ত্রীকেও অভিনন্দন জানিয়েছেন।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে কোনো আলোচনা হয়েছে কি-না জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ নিয়ে আলোচনা হয়নি।
রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে আলোচনা হয়েছে কি-না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, রোহিঙ্গা সংকট আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সামনে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু এবং এটা এখন বাংলাদেশকে মোকাবেলা করতে হচ্ছে।
ব্রিফিং শেষে ঢাকায় নিযুক্ত নরওয়ের রাষ্ট্রদূত সিডসেল ব্লেকেন বলেন, নতুন পররাষ্ট্রমন্ত্রী তার পরিকল্পনার কথা বলেছেন। তার মধ্যে অন্যতম প্রধান হচ্ছে অর্থনৈতিক কূটনীতি। ড. আব্দুল মোমেন দায়িত্ব নেওয়ার পর ঢাকায় কর্মরত কূটনীতিকদের এটাই প্রথম ব্রিফিং। তিনি বাংলাদেশ সরকারের আগামী পরিকল্পনা এবং নীতিগত অবস্থানের কথা তুলে ধরেছেন। এর মধ্যে রয়েছে দুর্নীতি ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি। কূটনীতিকদের স্পষ্ট করে জানানো হয়েছে, কোনো অবস্থাতেই সন্ত্রাসী গোষ্ঠীকে বাংলাদেশের মাটি ব্যবহার করতে দেওয়া হবে না। এ ছাড়া সুশাসন প্রতিষ্ঠায় বাংলাদেশ সরকারের অঙ্গীকারের কথাও জানানো হয়েছে।
তিনি বলেন, সব দেশের কূটনীতিকরাই বাংলাদেশের অব্যাহত উন্নয়ন ও অগ্রগতির প্রশংসা করেছেন এবং নতুন সরকারকে সহযোগিতা করার আশ্বাস দিয়েছেন।