এই সেই কম্পিউটার যেখানে ১৯৯০ সালে বার্নার্স লি প্রথমবারের মতো ওয়েব পেইজ প্রকাশ করেছিলেন। ইন্টারনেটে ঢুকলেই আপনার প্রয়োজন হয় যে তিনটি অক্ষর সেগুলো হচ্ছে ‘থ্রি ডব্লিউ’ অর্থাত্ ডব্লিউ ডব্লিউ ডব্লিউ…। গত ১২ মার্চ ছিল ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েবের ত্রিশ বছর পূর্তি। তিন দশক আগে সেটিতে কোনো রং ছিল না, ছবি ছিল না, ছিল না ভিডিও। এমনকি কোনো একটা গ্রাফিক্স-ও ছিল না সেই পেজে। ওই পেজে যা ছিল তার সবই মূলত ছিল টেক্সট। ১৯৮৯ সালে টিম বার্নার্স-লি বিজ্ঞানীদের জন্য টুল হিসেবে ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েব নিয়ে আসেন।
যেখানে শুরু হয়েছিল: ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েব-এর জন্ম হয়েছিল ১৯৮৯ সালের ১২ মার্চ ইউরোপিয়ান ওরগানাইজেশান ফর নিউক্লিয়ার রিসার্চ প্রতিষ্ঠানে। এটির প্রধান কার্যালয় ছিল সুইজারল্যান্ডের জেনেভা শহরে। তখন সিইআরএন ছিল অসংখ্য বিজ্ঞানীর একটি কমিউনিটি। তাই শতাধিক দেশের প্রায় ১০ হাজার বিজ্ঞানীর এক বিরাট পরিমণ্ডলের মধ্যে যেকোনো উপায়ে একটি কার্যকর যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে তোলা দরকার ছিল।
প্রথম ওয়েব পেজের স্রষ্টা ছিলেন টিম বার্নার্স-লি। তিনি মূলত ছিলেন একজন ব্রিটিশ ইঞ্জিনিয়ার ও ফিজিসিস্ট। সে সময় সহজে ও নিরাপদে ডাটা আদান-প্রদানের জন্য ইনফরমেশান ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম-এর জন্য মি. লি প্রস্তাব করেছিলেন। সেই প্রস্তাবটিকে বার্নার্স লি’র ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ‘অস্পষ্ট, তবে ইন্টারেস্টিং’ বলে উড়িয়ে দিয়েছিলেন। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বর্ধিত ও সমৃদ্ধ হতে-হতে সেই ওয়েবই এখন একটি বিরাট প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। ৩০ বছর আগে মি. বার্নার্স-লি নিজের কম্পিউটারে তার নিজের আবিষ্কার নেক্সট কম্পিউটার বিষয়ে কাজ করছিলেন। নিজের সেই কাজকে হাইপারটেক্সট ট্রান্সফার প্রোটোকল (এইচটিটিপি) হিসেবে ব্যাখ্যা দিয়েছিলেন তিনি।
১৯৮৯ সালের এক বছর পর, ১৯৯০ এর ডিসেম্বরের ২০ তারিখে সিইআরএন এটিকে নিজেদের অভ্যন্তরীণ কাজে ব্যবহার শুরু করে। পরবর্তীতে ১৯৯১ সালে অগাস্ট মাসে সেটি উন্মুক্ত করে দেওয়া হয় সাধারণ মানুষের জন্য।
১৯৯৩ সালের ৩০ এপ্রিলে ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েব সফটওয়্যারকে সিইআরএন পাবলিক ডোমেইনে রেখে দেয় এবং সেটিকে সহজে বিস্তৃত পরিসরে ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য একটি ওপেন লাইসেন্স নিয়ে কাজ শুরু করার ব্যবস্থা রাখা হয়। এ ঘটনার পর যা ঘটেছে, সেটা ইতিহাস।
১৯৯০ এর কম্পিউটার : সেই সময় উইন্ডোজ বা গুগল ক্রোম ছিল না। এমনকি ব্যক্তিগত কম্পিউটার খুঁজে পাওয়া বিরল ব্যাপারই ছিল। ইন্টারনেট তখন ছিল ইমেল চালাচালির বিষয় মাত্র। ১৯৮৯ সালে সেই ওরিজিনাল পেজটাতে কোনো অ্যাড্রেস বার ছিল না। কোনো ছবি বা কোনো প্রকারের শব্দও ছিল না।