ডেঙ্গু পরিস্থিতির সমালোচনা করে দেশের অবস্থা হীরক রাজার দেশের চেয়েও অধম হয়ে গেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
রোববার জাতীয় প্রেসক্লাবে ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ড্যাব) আয়োজিত সংগঠনটির ৩০তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে এক আলোচনা সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, মশার মারার ওষুধ কার্যকর হচ্ছে না। হবে কোথা থেকে? যে দুর্নীতি তারা করে, তাতে তো কার্যকর হওয়ার কথা না। এখন নতুন ওষুধ আনবে, সেখানে আরও দুর্নীতি হবে।
তিনি বলেন, দুটি ওষুধ নিষিদ্ধ করা হয়েছে থাইল্যান্ডে, সে দুটি ওষুধ নাকি আনা হচ্ছে! তারা আমদানি করছে কলকাতার ডেপুটি মেয়রকে তাদের কনসালটেন্সির জন্য। দেশের অবস্থা হীরক রাজার দেশের চেয়েও অধম হয়ে গেছে।
রোহিঙ্গাদের সঙ্গে ডেঙ্গু রোগের তুলনা করায় স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেকের সমালোচনা করেন বিএনপির মহাসচিব। তিনি বলেন, ডেঙ্গু যখন চরম আকার ধারণ করেছে, তখন স্বাস্থ্যমন্ত্রী বললেন, এডিস মশা রোহিঙ্গাদের মতো। কত বড় অমানবিক হলে, কত বড় অমানুষ হলে একজন মন্ত্রীর মুখে এ ধরনের কথা বলে!
মির্জা ফখরুল বলেন, স্বাস্থ্যমন্ত্রী যখন মালোশিয়া গেলেন, পত্র-পত্রিকার দেখলাম, তিনি ব্যক্তিগত সফরে গেছেন। ফিরে আসার পর বলেছেন, তিনি জানেন না কত জন মারা গেছেন। বলছেন ১৬’শ থেকে ১৭’শ আক্রান্ত হয়েছেন। এন দায়িত্বহীন লোক মন্ত্রী হয় কিভাবে?
সরকারের উদ্দেশে মির্জা ফখরুল বলেন, সময় শেষ হওয়ার আগেই সংসদ বাতিল করুন। নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যবস্থা করুন। অন্যথায় দেশের জনগণ জানে কীভাবে এ ধরনের সরকারকে পরাজিত করতে হয়।
বিএনপির এই নেতা বলেন, অত্যন্ত কঠিন সময় পার করছে বাংলদেশ। এত বড় কঠিন সময় বাংলাদেশে আর কখনও আসেনি। ১৯৭১ সালে যখন মুক্তিযুদ্ধ শুরু হয়, এর আগের মুহূর্তেও এত অসহায় বোধ হয়নি। তখন জনগণের সামনে একটি শক্তি ছিল, জনগণের মধ্যে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐক্য ছিল। এখন মনে হয় সব কিছু ভেঙে তছনছ করে দেওয়া হয়েছে।
ফখরুল বলেন, আজকে ভিন্ন আঙ্গিকে গণতন্ত্রের একটা লেবাস পরিয়ে দিয়ে আবার একদলীয় শাসন ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে। এ অবস্থা প্রেক্ষিতে যখন জাতির সমস্ত অর্জন ধব্বংস হয়ে যাচ্ছে, মুক্তির সব পথ বন্ধ হয়ে যাচ্ছে, তখন কি আর করার আছে? তবে বিএনপি চেষ্টা করে যাচ্ছে। জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করার প্রচেষ্টা চলছে। একমাত্র পারে জনগণই দেশকে, রাষ্ট্রকে মুক্তি দিতে। যদি জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করা যায়, জনগণের উত্তাল তরঙ্গ সৃষ্টি করা যায়, তাহলে নিঃসন্দেহে সরকার পরাজিত হবে।
ড্যাবের সভাপতি অধ্যাপক ডা. হারুন আল রশিদের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান এ জেড এম জাহিদ হোসেন, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ডা. মোহাম্মদ সিরাজ উদ্দিন, ডা. মোহাম্মদ আব্দুল কদ্দুস, সাংবাদিক কাদের গণি চৌধুরী, ড্যাবের মহাসচিব অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ আব্দুস সালাম প্রমুখ।