কভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসায় কার্যকর হিসেবে প্রমাণিত ওষুধ রেমডিসিভির উৎপাদনের জন্য প্রাথমিকভাবে দেশের ছয়টি কোম্পানিকে অনুমতি দিয়েছে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর। এর মধ্যে দু’টি কোম্পানি চলতি মাসেই ওষুধটি বাজারে আনবে। অনুমতি পাওয়া ছয় কোম্পানি হলো- এসকেএফ, বিকন, বেক্সিমকো, ইনসেপ্টা, হেলথকেয়ার ও স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস।
রেমডিসিভির বাংলাদেশে উৎপাদন প্রসঙ্গে ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মো. মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘এটি আসলে পুরোনো ওষুধ। ইবোলার চিকিৎসায় ব্যবহার হতো। এটা করোনাতেও ব্যবহার হতে পারে বলে ধারণা ছিল। সেজন্য আরও আগে থেকেই ওষুধ প্রশাসন পরিদপ্তর প্রস্তুতি নেয়। বাংলাদেশে যে উৎপাদকরা আছে তাদের সঙ্গেও অধিদপ্তরের আলোচনা হয়েছে।’
ইনজেকশন হিসেবে করোনা রোগীদের শরীরে ব্যবহারের জন্য ওষুধটি মে মাসের মধ্যেই বাজারে আসবে বলে জানিয়েছেন মেজর জেনারেল মো. মাহবুবুর রহমান। তিনি আরও বলেন, ‘এসকেএফ ও বেক্সিমকো ওষুধটি উৎপাদনে অনেকখানি এগিয়ে গেছে। আশা করা যায়, মে মাসেরই ২০ তারিখের মধ্যে ওরা প্রডাকশনে চলে আসবে। এছাড়া জুনের মধ্যেই অন্য চারটি কোম্পানির বেশিরভাগই বাজারে ওষুধটি নিয়ে আসবে।’
করোনার প্রাদুর্ভাবের পর থেকে এর প্রতিরোধক ভ্যাকসিন ও কার্যকর ওষুধ তৈরির জন্য দেশে দেশে চেষ্টা চলছে। বাজারে বিদ্যমান কয়েকটি ওষুধ করোনা রোগীদের চিকিৎসায় কার্যকর হতে পারে বলে গত দুই মাসে অনেক বিশেষজ্ঞ মত দিয়েছেন। এরপর গত শুক্রবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও দেশটির বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে বৈঠকের পর করোনার জরুরি চিকিৎসার জন্য রেমডিসিভির ব্যবহারের অনুমতি দেয় মার্কিন ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফডিএ)।
মার্কিন গবেষকরা জানিয়েছেন, করোনা আক্রান্ত রোগীদের ওপর ওষুধটি যত দ্রুত ব্যবহার করা যায় তত বেশি এটি কার্যকর। লক্ষ্মণ অনুযায়ী অন্য ওষুধ ব্যবহার করা রোগীদের যেখানে সুস্থ হতে ১৫ দিনের মতো সময় লেগেছে সেখানে রেমডিসিভির প্রয়োগ করা রোগীরা মোটামুটি ১১দিনেই সুস্থ হয়েছেন। আগেভাগে ওষুধটি প্রয়োগ করা হয়েছে এমন শতকরা ৬২ ভাগ রোগীকে হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র দেওয়া সম্ভব হয়েছে। আর যেসব রোগীর শরীরে দেরিতে রেমডিসিভির প্রয়োগ করা হয়েছে তাদের মধ্যে শতকরা ৪৯ ভাগ হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়েছে।