বহু আলোচিত ‘দ্রুত বিচার আইন’ আরও পাঁচ বছর চালু রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে সোমবার তার কার্যালয়ে মন্ত্রিসভা বৈঠকে ‘আইন-শৃঙ্খলা বিঘ্নকারী অপরাধ (দ্রুতবিচার) (সংশোধন) আইন, ২০১৯’ এর খসড়ার নীতিগত ও চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম সচিবালয়ে এক ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের বলেন, “এটার (দ্রুত বিচার আইন) একটা মেয়াদ থাকে, সেই মেয়াদ চলতি বছর এপ্রিলে শেষ হয়ে গেছে। এজন্য মেয়াদ আরও পাঁচ বছর বাড়ানো হচ্ছে।
“দ্রুতবিচার আইন ২০০২ সালে করা হয়। আইনে বলা হয়েছিল এই আইনটি আগামী ১৭ বছর পর্যন্ত চলবে। সেই ১৭ বছর শেষ হয়েছে ২০১৯ সালে। এখন ১৭ এর স্থলে সংশোধন করে ২২ স্থাপন করা হচ্ছে। ২০০২ সাল থেকে ২২ বছর শেষ হবে ২০২৪ সালে। অর্থাৎ এখন এই আইনটি ২০২৪ সাল পর্যন্ত কার্যকর থাকবে।”
বার বার কেন এই আইনের মেয়াদ বাড়ানো হচ্ছে- এই প্রশ্নে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, “এখনও এটার কার্যকারিতা রয়েছে। অনেক স্পর্শকাতর মামলা আছে যেগুলোর দ্রুত বিচার হওয়ার দরকার।”
মন্ত্রিসভার সায় পাওয়ায় এখন যাচাই-বাছাই শেষে আইনটি চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য সংসদে তোলা হবে।
বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের সময়ে ২০০২ সালে দ্রুত বিচার আইন জারি করে দুই বছরের জন্য তা কার্যকর করা হয়। তখন বিরোধী দলে থাকা আওয়ামী লীগ এর সমালোচনা করেছিল।
এরপর বিভিন্ন সময়ে এ আইনের মেয়াদ বাড়ানো হয়; আওয়ামী লীগ সরকারও আইনটি রেখে দিচ্ছে।
আইনটি প্রণয়নের উদ্দেশ্যে বলা হয়েছিল,
চাঁদাবাজি, যান চলাচলে প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি, যানবাহনের ক্ষতি সাধন, স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি বিনষ্ট, ছিনতাই, দস্যুতা, ত্রাস ও সন্ত্রাস সৃষ্টি, অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টি, দরপত্র কেনায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি, ভয়ভীতি প্রদর্শনসহ বিভিন্ন অপরাধ দ্রুততার সঙ্গে বিচারের জন্য এ আইন।
এ আইনে দোষী প্রমাণিত হলে দুই থেকে পাঁচ বছর সশ্রম কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড হতে পারে। প্রতি জেলায় গঠিত এক বা একাধিক দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে এ আইনের মামলার বিচার চলে।
দ্রুত বিচার আইনে ১২০ দিনের মধ্যে বিচারকাজ নিষ্পত্তি করার বিধান আছে। এই সময়ের মধ্যে নিষ্পত্তি করা না গেলে আরও ৬০ দিন সময় পাওয়া যায়।
অবশ্য সময়সীমা বেঁধে দেওয়া থাকলেও অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ওই সময়ে বিচার শেষ করা সম্ভব হয় না বলে বিচারপ্রার্থীদের অভিযোগ রয়েছে। তখন প্রচলিত আদালতে ফেরত যায় মামলাগুলো।