আসন্ন মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনকে সামনে রেখে ব্যাপক প্রচারণায় ব্যস্ত সময় পার করছেন ডেমোক্রেট ও রিপাবলিকান প্রার্থীরা। রিপাবলিকান প্রতিদ্বন্দী ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ঠেকানোর চেষ্টায় জোর প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন ডেমোক্রেট প্রার্থী কমলা হ্যারিস। দমে নেই ট্রাম্পও। বেশ কদিন ধরেই দুপক্ষেরই চলছে জোরকদম প্রচারকার্য।
এরই মধ্যে আবার চলছে সমালোচনাও। তবে এবার সমালোচনার পর্বকে ছাপিয়ে উঠেছে অভিযোগের রেশ। ট্রাম্পের নীতি নকল করেছেন কমলা- এমন অভিযোগই উঠে এসেছে ডেমোক্রেট এ প্রার্থীর ওপর।
রোববার এপির খবরে বলা হয়েছে, ট্রাম্প দাবি করেছেন, ‘পরিষেবা কর্মীদের টিপসের বিষয়ে আমার নো ট্যাক্স নীতি নকল করেছেন কমলা।’
শনিবার কমলা লাস ভেগাসের নেভাদা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে একটি সমাবেশে ঘোষণা দেন, রেস্তোরাঁ এবং অন্যান্য পরিষেবা শিল্পের কর্মচারীদের দেওয়া টিপসের ওপর ট্যাক্স দূর করতে কাজ করবেন তিনি।
কমলা বলেছেন, ‘এখানে প্রত্যেকের কাছে আমার প্রতিশ্রুতি, আমি যখন প্রেসিডেন্ট হব তখন আমরা যুক্তরাষ্ট্রের কর্মজীবী পরিবারগুলোর জন্য আমাদের লড়াই চালিয়ে যাব। সেই সঙ্গে মজুরি বাড়ানো এবং পরিষেবা কর্মীদের জন্য টিপসের ওপর কর বাদ দেওয়ার বিষটি নজরে রাখব।’
এ নিয়ে ট্রাম্পের দাবি, এই প্রতিশ্রুতি আগেই দিয়েছেন তিনি। জুন মাসে তার নিজ শহরের এক সমাবেশে এ প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন বলে জানান ট্রাম্প।
কমলার ভাষণের কিছুক্ষণ পরেই ট্রাম্প তার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করেছেন, কমলা টিপস নীতিতে আমার নো ট্যাক্স নীতি কপি করেছেন। তিনি কেবল রাজনৈতিক উদ্দেশ্যজনিত কারণেই এটি বলেছেন। কিন্তু তিনি এটি করবেন না।
ট্রাম্প আরও বলেছেন, ‘তার (কমলার) ভালো কোনো কিছু করার ধারণা নেই, সে কেবল আমার কাছ থেকে চুরি করতে পারে।’ তবে এ বিষয়ে এখনো কোনো মন্তব্য করেননি কমলা।
এদিকে ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্বাচনি প্রচারণায় গণপ্রত্যাবাসনে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। যদিও তার দলের অনেকেই এ ধরনের সিদ্ধান্তে একমত নন। তবে টেক্সাসের রিপাবলিকান কর্মী লাওরেন বি. পেলা বলেছেন, ‘ট্রাম্প আসলে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে আসা সব পরিবারকেই ফেরত পাঠিয়ে দেওয়ার কথা বলছেন না। গণপ্রত্যাবাসন বলতে তিনি অপরাধীদের ফেরত পাঠানোর কথাই বলছেন।’
প্রচার প্রচারণার উত্তেজনার মধ্যে নিউইয়র্ক টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জনমত জরিপে যুক্তরাজ্যের তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ তিনটি অঙ্গরাজ্যে রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পকে পেছনে ফেলে এগিয়ে গেছেন ডেমোক্রেটিক প্রার্থী কমলা হ্যারিস।
অঙ্গরাজ্যগুলো হলো- উইসকনসিন, পেনসিলভানিয়া ও মিশিগান। আসন্ন মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনকে সামনে রেখে এ জরিপ চালিয়েছে নিউইয়র্ক টাইমস ও সিয়েনা কলেজ। ৫ থেকে ৯ আগস্ট পর্যন্ত এ জরিপ চালানো হয়। এতে অংশ নিয়েছিলেন এক হাজার ৯৭৩ জন।
শনিবার প্রকাশিত জরিপের ফলে দেখা গেছে, ওই তিন অঙ্গরাজ্যে ট্রাম্পের চেয়ে চার পয়েন্টে এগিয়ে রয়েছেন কমলা। কমলা পেয়েছেন ৫০ পয়েন্ট। অন্যদিকে ট্রাম্পের পয়েন্ট ৪৬। নির্বাচনে ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রার্থিতা থেকে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন সরে দাঁড়ানোর পর এই প্রথম তিন অঙ্গরাজ্যে উচ্চপর্যায়ের জনমত জরিপ চালানো হলো।
বাইডেনের সরে দাঁড়ানোর আগে চালানো জরিপে রিপাবলিকান পার্টির ট্রাম্পের সঙ্গে তার হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের পূর্বাভাস পাওয়া যাচ্ছিল। এমনকি কিছু কিছু ক্ষেত্রে সামান্য এগিয়েও ছিলেন ট্রাম্প। বাইডেন সরে দাঁড়ানোর পর ডেমোক্রেট প্রার্থী হিসাবে তার জায়গায় আসেন দেশটির ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস।
প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ তিন অঙ্গরাজ্যে জনমত জরিপে তিনি ট্রাম্পকে টেক্কা দেওয়ায় সেখানে ডেমোক্র্যাটদের অবস্থান শক্ত হলো। মার্কিন নির্বাচনে কোনো দলের জয়-পরাজয় অনেকটাই নির্ভর করে উইসকনসিন, পেনসিলভানিয়া ও মিশিগান অঙ্গরাজ্যে ভোটের ফলের ওপর।