অক্টোবরের তুলনায় নভেম্বরে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বেশি কমেছে। অক্টোবরে রিজার্ভ কমেছিল ৪৯ কোটি ডলার। আর নভেম্বরে কমেছে ১২৬ কোটি ডলার। অর্থাৎ, অক্টোবরের তুলনায় নভেম্বরে রিজার্ভ কমেছে ৭৭ কোটি ডলার বেশি। নভেম্বরে এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের (আকু) দেনা বাবদ ১০০ কোটি ডলারের বেশি পরিশোধ করায় রিজার্ভ বেশি কমেছে।
বৃহস্পতিবার দিনের শুরুতে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার নিট রিজার্ভ ছিল ১ হাজার ৯৪০ কোটি ডলার। অক্টোবরের শেষে রিজার্ভ ছিল ২ হাজার ৬৬ কোটি ডলার। ওই ১ মাসে নিট রিজার্ভ কমেছে ১২৬ কোটি ডলার। একই সময়ে গ্রস রিজার্ভ কমেছে ১৪৬ কোটি ডলার। বৃহস্পতিবার গ্রস রিজার্ভ ছিল ২ হাজার ৫০২ কোটি ডলার। অক্টোবরের শেষে গ্রস রিজার্ভ ছিল ২ হাজার ৬৪৮ কোটি ডলার।
সূত্র জানায়, আমদানি ব্যয় ও বৈদেশিক ঋণ পরিশোধে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রি করতে হচ্ছে। এর বিপরীতে রিজার্ভে অর্থ জমা হচ্ছে কম। যে কারণে রিজার্ভ কমে যাচ্ছে। এদিকে বৈশ্বিক মন্দায় রপ্তানি আয় কমছে। রেমিট্যান্স গত মাসে বাড়লেও এ মাসে আবার কমে যেতে পারে। কারণ ডলারের দাম কমানোর ফলে রেমিট্যান্স আসার প্রবাহ কমে গেছে।
এদিকে ডিসেম্বরে আইএমএফের ঋণের দ্বিতীয় কিস্তি বাবদ ৬৮ কোটি ডলার ছাড় হতে পারে। এছাড়া বিশ্বব্যাংক ও এডিবি থেকে আরও কিছু অর্থ ছাড় হবে। এসব মিলে ডিসেম্বরে রিজার্ভ কিছুটা বাড়তে পারে। তবে জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে আবার আকুর দেনা শোধ করতে হবে। তখন আবার রিজার্ভে চাপ বাড়বে।
সূত্র জানায়, ২৩ নভেম্বর নিট রিজার্ভ ছিল ১ হাজার ৯৫৩ কোটি ডলার। এ হিসাবে বৃহস্পতিবার ১ সপ্তাহে কমেছে ১৩ কোটি ডলার। ওই সময়ে গ্রস রিজার্ভ কমেছে ১৪ কোটি ডলার। এছাড়া রিজার্ভ থেকে ডলার নিয়ে গঠন করা বিভিন্ন তহবিলের আকার ছোট করা হচ্ছে। এতে গ্রস রিজার্ভ বেশি কমছে।
এদিকে ব্যাংকগুলোর প্রধান নির্বাহীদের সংগঠন বাংলাদেশ ফরেন এক্সচেঞ্জ ডিলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাফেদা) ও অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স, বাংলাদেশ (এবিবি) গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে ডলারের দাম দুদফায় ৭৫ পয়সা কমিয়েছে। ২৩ নভেম্বর প্রতি ডলারে ৫০ পয়সা ও রোববার থেকে ২৫ পয়সা কমিয়েছে। কিন্তু বাজারে ডলারের দাম কমছে না। উলটো আরও বাড়ছে। বৃহস্পতিবারও অনেক ব্যাংক সর্বোচ্চ ১২৩ টাকা করে রেমিট্যান্স কিনেছে। বেশি দামে ডলার কেনায় তারা আমদানিতেও বেশি দামে ডলার বিক্রি করছে। ফলে ডলারের দাম কমানোর কোনো প্রভাব পড়ছে না বাজারে।