লক্ষ্মীপুরে গৃহবধূ বিউটি আক্তার তার প্রবাসী স্বামী নজির আহমেদকে আদালতের মাধ্যমে তালাক দিয়েছেন। তবে তালাকের ব্যাপারটি জানতেন না স্বামী নজির আহমেদ ও তাঁর পরিবার। তালাক দেওয়ার পর বিউটি চার মাস নজিরের সঙ্গেই ছিলেন। এরপর নজির বিদেশ পাড়ি দিলেই বিউটি প্রতিবেশী ভাগিনা ফরিদ হোসেনকে বিয়ে করেন। কিন্তু প্রবাসীর ঘরে থেকেই ফরিদের সঙ্গে বিউটি সম্পর্ক রাখে। একই সঙ্গে গত দুই বছরে প্রতারণা করে নজিরের অন্তত ১৫ লাখ টাকা বিউটি তার বর্তমান স্বামী ফরিদকে দিয়েছেন।
নজির লক্ষ্মীপুর পৌরসভার করইতলা এলাকার মৃত নুরুল হকের ছেলে এবং সৌদিপ্রবাসী। অভিযুক্ত বিউটি সদর উপজেলার চররুহিতা ইউনিয়নের রসুলগঞ্জ গ্রামের ইব্রাহিমের মেয়ে এবং ফরিদ লক্ষ্মীপুর পৌরসভার করইতলা এলাকার মৃত মমিন উল্যাহর ছেলে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ২০১৮ সালের ৩০ জুলাই লক্ষ্মীপুর আদালতে নোটারি পাবলিকের মাধ্যমে বিউটি তার প্রবাসী স্বামী নজিরকে তালাক দেন। ওই সময় নজির বাড়িতেই ছিলেন; কিন্তু তাঁর কাছ থেকে তালাকের বিষয়টি গোপন রাখা হয়। একই বছর নভেম্বরের শুরুতে নজির কাজের সন্ধানে সৌদি আরব যান। এরপর ২০ নভেম্বর লক্ষ্মীপুর আদালতে নোটারি পাবলিকের মাধ্যমে বিউটি ১০ লাখ টাকা দেনমোহরে ফরিদকে বিয়ে করেন। বিয়ের ঘটনাটিও বিউটি প্রবাসী নজিরের কাছ থেকে গোপন রাখেন। নজিরের বাবা-মা দুজনই মৃত। এই সুযোগে নজিরের দেওয়া স্বর্ণালঙ্কারসহ অন্তত ১৫ লাখ টাকা স্বামী ফরিদসহ বিউটি হাতিয়ে নিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
এ ব্যাপারে বিউটি আক্তার বলেন, ফরিদ ও তার বোন রোকেয়া আমার সঙ্গে প্রতারণা করেছে। আমাকে অন্য কথা বলে তালাক ও কাবিননামায় স্বাক্ষর নিয়েছে। আমি তাকে স্ব-ইচ্ছায় বিয়ে করিনি। বিভিন্ন সময় আমাকে ফাঁদে পেলে নজিরের দেওয়া টাকা ও স্বর্ণালঙ্কার ফরিদ হাতিয়ে নিয়েছে।
প্রবাসী নজিরের ভাতিজা জাবেদ হোসেন বলেন, ‘তালাক ও বিয়ের বিষয়টি গোপন রেখে আমার চাচা নজিরের সঙ্গে বিউটি প্রতারণা করেছে। এ ঘটনায় আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
ফরিদের মা নুরজাহান বেগম জানান, তার ছেলে বিউটিকে বিয়ে করেছে, তা তিনি আগে জানতেন না। ছেলের বিয়ের জন্য মেয়ে দেখতে গেলে বিউটি তাদেরকে ঘটনাটি জানায়। তবে তার ছেলে বিউটির কাছ থেকে কোনো টাকা নেয়নি।
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী কাউসার হাসান বলেন, ‘তালাক দেওয়ার পরেও বিউটি চার মাস নজিরের সঙ্গে বসবাস করেছেন। ফরিদকে বিয়ের ঘটনা না জানিয়ে নজিরের সঙ্গে বিউটি প্রতারণা করেছে। এটি আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ।’
লক্ষ্মীপুর পৌরসভার কাউন্সিলর আনোয়ার হোসেন শাহী বলেন, ফরিদের সঙ্গে বিউটির বিয়ের ঘটনাটি আগে জানতাম না। এক নারী অবৈধভাবে দুই স্বামীর সংসার করছে, এটি ন্যক্কারজনক। ব্যক্তিগতভাবে ফরিদও খারাপ ছেলে। ফরিদ সম্প্রতি আমাদের এক মহিলা কাউন্সিলরকে মারধর করেছে। তার শাস্তি হওয়া প্রয়োজন।
জানতে চাইলে লক্ষ্মীপুরের অতিরিক্ত জেলা পুলিশ সুপার রিয়াজুল কবির বলেন, ঘটনাটি শুনেছি। সামাজিক শৃঙ্খলা বজায় রাখতে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হচ্ছে। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।