বাঙালির প্রাণের মেলা বসেছে নিউইয়র্কে। বাংলা বইমেলা ঘিরে সেখানকার জ্যাকসন হাইটসে ছড়িয়ে পড়েছে উৎসবের আমেজ। গতকাল শুক্রবার এবারের ২৮তম নিউইয়র্ক বইমেলা ও বাংলাদেশ উৎসব শুরু হয়েছে। ঢাকাসহ পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা বাংলাভাষী লেখক, প্রকাশক ও গ্রন্থানুরাগীরা এখন ভিড় করেছেন নিউইয়র্কে। দু’দিন আগেই সেখানে পৌঁছেছেন লেখক ও গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব ফরিদুর রেজা সাগর, কবি ও সাংবাদিক আনিসুল হক, শিশুসাহিত্যিক আমীরুল ইসলাম, কবি জাফর আহমদ রাশেদ, বদরুন নাহার প্রমুখ। এবার বইমেলায় সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ডা. ওয়ালেদ চৌধুরী এবং ফরিদুর রেজা সাগরকে সম্মাননা জানানো হবে। মেলায় সঙ্গীত পরিবেশন করবেন শিল্পী রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা। মুক্তধারা ফাউন্ডেশন আয়োজিত চার দিনব্যাপী এই মেলা সবার জন্য বেলা ১১টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত উন্মুক্ত থাকবে। মেলায় প্রথমা, কথাপ্রকাশ, বেঙ্গল, নালন্দা, অনন্যাসহ প্রায় ১৫টি প্রকাশনা সংস্থা যোগ দিয়েছে।
নিউইয়র্ক বইমেলার আহ্বায়ক ড. নজরুল ইসলাম বলেন, মেলায় ভারত-বাংলাদেশের লেখক ও প্রকাশনা সংস্থা যেমন থাকবে, তেমনি থাকবে স্বরচিত কবিতা পাঠ, কবিতা আবৃত্তি, সাহিত্য আলোচনা ও নতুন বইয়ের মোড়ক উন্মোচনসহ, লেখক-প্রকাশক-পাঠকদের নিয়ে নানান আয়োজন। চার দিনব্যাপী বইমেলার প্রথম তিন দিন ১৪ থেকে ১৬ জুন পর্যন্ত নিউইয়র্কের জ্যাকসন হাইটসের পিএস ৬৯ স্কুলে চলবে। ১৭ জুন চতুর্থ দিন মেলা আয়োজন করা হয়েছে স্কুলের পাশে অবস্থিত জুইশ সেন্টারে।
মুক্তধারা ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ড. জিয়াউদ্দীন আহমেদ বলেন, এবারের বইমেলার স্লোগান ‘মননে বই, জীবনে বই’। আমরা চাই বাংলা বইয়ের প্রসার ঘটুক বিশ্বব্যাপী। মানুষের মননে ও জীবনে ভালো বইয়ের প্রভাব পড়ূক।
মুক্তধারা ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা ও সিইও বিশ্বজিৎ সাহা বলেন, লেখক ও সম্পাদক আবুল হাসনাত, সাংবাদিক শাহরিয়ার কবির, লেখক ও কার্টুনিস্ট আহসান হাবীব, শিশুসাহিত্যিক আমীরুল ইসলাম, লেখক ও সাংবাদিক আনিসুল হক, নিসর্গবিষয়ক লেখক মোকারম হোসেনসহ আরও অনেকেই নিউইয়র্কে এসেছেন। লেখক সেলিনা হোসেন, বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক কবি হাবীবুল্লাহ সিরাজী, কবি বিমল গুহসহ আরও বেশ কয়েকজন লেখক মেলায় থাকবেন বলে নিশ্চিত করেছেন। প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম, ভারপ্রাপ্ত সাংস্কৃতিক সচিব ড. মো. আবু হেনা মোস্তফা কামাল, জাতিসংঘে স্থায়ী প্রতিনিধি ও রাষ্ট্রদূত মাসুদ বিন মোমেন এবং নিউইয়র্কের কনসাল জেনারেল সাদিয়া ফয়জুন্নেসা মেলায় অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকছেন।
বইমেলায় সাহিত্যে সামগ্রিক অবদানের জন্য অন্যান্য বছরের মতো এবারও জেএফবি সাহিত্য পুরস্কার এবং কথাপ্রকাশ-মুক্তধারা প্রকাশক পুরস্কার দেওয়া হবে। বাংলাদেশ ও ভারতের বাইরে বসবাসরত বাংলাভাষী লেখকদের জন্য বইমেলা থেকে ‘শহীদ কাদরী পুরস্কার’ দেওয়ারও উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।