নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চে দুটি মসজিদে হামলার ঘটনায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন বলেছেন, নিউজিল্যান্ডে বাংলাদেশের কোনো দূতাবাস না থাকায় বিভিন্ন মাধ্যমে সেখানে অবস্থানরত বাংলাদেশিদের খোঁজ-খবর নেওয়া হচ্ছে।
শুক্রবার এক বিবৃতিতে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, ক্রাইস্টচার্চে হামলায় নিহতদের মধ্যে তিন বাংলাদেশির পরিচয় নিশ্চিত হওয়া গেছে। তাদের একজন সিলেটের, একজন কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক এবং আরেকজনের বাড়ি গাজীপুরে। ওই হামলায় কমপক্ষে দু’জন গুরুতর আহত হয়েছেন। তাদের পরিচয়ও পাওয়া গেছে। নিখোঁজ রয়েছেন তিনজন, যাদের পরিচয় পাওয়া যায়নি। হামলা থেকে অল্পের জন্য রক্ষা পেয়েছেন নিউজিল্যান্ডে অবস্থানরত বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের সদস্যরা। তারা ভালো ও সুস্থ আছেন। বর্তমানে বিশেষ নিরাপত্তায় আছেন তারা। দ্রুততম সময়ের মধ্যে তাদের দেশে ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়া চলছে।
হামলার ঘটনায় শোক প্রকাশ করে ড. মোমেন বলেন, নিউজিল্যান্ডে বাংলাদেশের কোনো দূতাবাস নেই। তবে দেশটির রাজধানী অকল্যান্ডে আমাদের একজন অনারারি কনস্যুলার রয়েছেন। ঘটনার পর নিউজিল্যান্ড সরকার সব ফ্লাইট বন্ধ করে দেওয়ায় ক্রাইস্টচার্চে তার পৌঁছতে দেরি হচ্ছে। শনিবার সকালের মধ্যে তিনি পৌঁছে যাবেন। তবে অস্ট্রেলিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার এম সুফিউর রহমান ঘটনার তদারকি করছেন। ক্যানবেরা থেকে দু’জন কর্মকর্তা নিউজিল্যান্ডে রওনা দিয়েছেন। এ হামলার পর নিউজিল্যান্ডে অবস্থানরত প্রবাসী বাংলাদেশিদের স্থানীয় পুলিশের নির্দেশনা মেনে চলতে বলা হয়েছে।
শুক্রবার সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নিউজিল্যান্ডে হামলার ব্যাপারে ব্রিফ করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। এ সময় তিনি বলেন, নিরাপত্তার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ মডেল। এখানে বিদেশিদের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা দেওয়া হয়। যে কোনো ভিআইপি বা খেলোয়াড় দেশে এলে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা পান।
সন্ত্রাসমুক্ত দাবি করা দেশে এমন হামলা দুঃখজনক জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, যেসব দেশ আমাদের দেশে সতর্কতা দিয়ে রাখে, তারা ভুল করে। যে কোনো দেশ থেকে আমাদের দেশ ভালো। সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের ব্যাপারে আমরা জিরো টলারেন্স নীতি নিয়েছি।
২০১৬ সালের ১ জুলাই ঢাকার গুলশানের হলি আর্টিসানে সন্ত্রাসী হামলার প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, আমাদের দেশেও এরকম সন্ত্রাসী হামলা হয়েছিল, সে হামলার খবরও আমরা আগে থেকে জানতাম না। একইভাবে নিউজিল্যান্ডে সন্ত্রাসী হামলা হয়েছে। এ ধরনের হামলা আগে থেকে ধারণা করা মুশকিল। তাই এটিকে দুর্ঘটনাই বলা যায়।
এ সময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি বদর উদ্দিন আহমদ কামরান, সাধারণ সম্পাদক আসাদ উদ্দিন আহমদ ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শফিকুর রহমান চৌধুরী।