নিউ জিল্যান্ডকে গুঁড়িয়ে দিল অস্ট্রেলিয়া

starc-33

জমেনি গত আসরের দুই ফাইনালিস্টের লড়াই। আড়াইশর কাছাকাছি রান তাড়ায় সেভাবে অস্ট্রেলিয়াকে চ্যালেঞ্জ জানাতে পারেননি নিউ জিল্যান্ড। তাসমান পাড়ের দুই দেশের লড়াইয়ে অনায়াস জয় পেয়েছে বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা।

লন্ডনের লর্ডসে শনিবার ৮৬ রানে জিতেছে অস্ট্রেলিয়া। ২৪৪ রানের লক্ষ্য তাড়ায় ৪৩ ওভার ৪ বলে ১৫৭ রানে গুটিয়ে যায় নিউ জিল্যান্ড।

অস্ট্রেলিয়ার ইনিংসের শুরু আর শেষে ছিল পেসারদের দাপট। শেষ ওভারে পরপর তিন বলে উইকেট তুলে নিয়ে বিশ্বকাপে নিউ জিল্যান্ডের প্রথম বোলার হিসেবে হ্যাটট্রিকের কীর্তি গড়েন ট্রেন্ট বোল্ট। তবে উসমান খাওয়াজা ও অ্যালেক্স কেয়ারির শতরানের জুটির ওপর ভর করে ৯ উইকেটে ২৪৩ রানের চ্যালেঞ্জিং স্কোর গড়ে বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা।

ধসে বাঁধ দিতে পারেননি নিউ জিল্যান্ডের কেউ। মিচেল স্টার্কের দারুণ বোলিংয়ের জবাবও ছিল না। আসরে দ্বিতীয়বারের মতো পাঁচ উইকেট নিয়ে এই পেসার গতবারের রানার্সআপদের থামিয়ে দেন ৩৮ বল বাকি থাকতে।

টস জিতে ব্যাট করতে নেমে অস্ট্রেলিয়া শুরু করে প্রথম দুই ওভার মেডেন খেলে। দ্বিতীয় ওভারেই উইকেট হারাতে পারতো তারা। কলিন ডি গ্র্যান্ডহোমের বলে শর্ট কাভারে মার্টিন গাপটিলকে ক্যাচ দিয়ে বেঁচে যান অ্যারন ফিঞ্চ। তবে সুযোগ কাজে লাগাতে পারেননি অস্ট্রেলিয়া অধিনায়ক। বোল্টের দারুণ এক ডেলিভারিতে ফিরেন এলবিডব্লিউ হয়ে।

সেই ওভারেই শূন্য রানে আউট হতে পারতেন উসমান খাওয়াজা। দ্বিতীয় স্লিপে তার ক্যাচ মুঠোয় জমাতে পারেননি গাপটিল। দশম ওভারে আক্রমণে এসে প্রথম বলে দারুণ এক বাউন্সারে ডেভিড ওয়ার্নারকে বিদায় করেন লকি ফার্গুসন। তার পরের ওভারে লেগ গালিতে স্টিভেন স্মিথের দারুণ এক ক্যাচ নেন গাপটিল।

খাওয়াজার সঙ্গে কেবল জমে উঠেছিল মার্কাস স্টয়নিসের জুটি; তখনই আঘাত হানেন জিমি নিশাম। স্টয়নিসকে কট বিহাইন্ড করে পরের ওভারে ফিরতি ক্যাচ নিয়ে থামান গ্লেন ম্যাক্সওয়েলকে।

৯২ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে যাওয়া অস্ট্রেলিয়ার অবস্থা হতে পারতো আরও খারাপ। নিশামের বলে ৩৫ রানে খাওয়াজার ক্যাচ ছাড়েন টম ল্যাথাম। ক্রিজে গিয়েই শট খেলতে শুরু করেন অ্যালেক্স কেয়ারি। খাওয়াজাকে নিয়ে এগিয়ে নেন দলকে।

শটের পসরা সাজিয়ে বসা কেয়ারিকে থামান অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন। অস্ট্রেলিয়ার কিপার ব্যাটসম্যান ৭২ বলে ১১ চারে করেন ৭১ রান। ভাঙে ১০৭ রানের জুটি।

৬৩ রানে আবার ল্যাথামের হাতে জীবন পাওয়া খাওয়াজা প্যাট কামিন্সকে নিয়ে দলকে নিয়ে যান আড়াইশ রানের কাছে। ৫০তম ওভারে পরপর তিন বলে খাওয়াজা, মিচেল স্টার্ক ও জেসন বেরেনডর্ফকে বিদায় করেন বোল্ট। ওয়ানডেতে এটি তার দ্বিতীয় হ্যাটট্রিক। ৫১ রানে ৪ উইকেট নিয়ে তিনিই দলের সেরা বোলার।

তিনবার জীবন পাওয়া খাওয়াজা ১২৯ বলে পাঁচ চারে করেন ৮৮ রান। ২৩ রানে অপরাজিত থাকেন কামিন্স।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

অস্ট্রেলিয়া: ৫০ ওভারে ২৪৩/৯ (ওয়ার্নার ১৬, ফিঞ্চ ৮, খাওয়াজা ৮৮, স্মিথ ৫, স্টয়নিস ২১, ম্যাক্সওয়েল ০, কেয়ারি ৭১, কামিন্স ২৩*, স্টার্ক ০, বেরেনডর্ফ ০, লায়ন ০*; বোল্ট ১০-১-৫১-৪, ডি গ্র্যান্ডহোম ৮-১-২৯-০, ফার্গুসন ১০-০-৪৯-২, সোধি ৬-০-৩৫-০, নিশাম ৬-০-২৮-২, স্যান্টনার ৩-০-২২-০, উইলিয়ামসন ৭-০-২৫-১)

নিউ জিল্যান্ড: ৪৩.৪ ওভারে ১৫৭ (গাপটিল ২০, নিকোলস ৮, উইলিয়ামসন ৪০, টেইলর ৩০, ল্যাথাম ১৪, ডি গ্র্যান্ডহোম ০, নিশাম ৯, স্যান্টনার ১২, সোধি ৫, ফার্গুসন ০, বোল্ট ২*; বেরেনডর্ফ ৯-০-৩১-২, স্টার্ক ৯.৪-১-২৬-৫, কামিন্স ৬-১-১৪-১, লায়ন ১০-০-৩৬-১, স্মিথ ২-০-৬-১, ফিঞ্চ ১-০-৭-০, স্টয়নিস ২-০-১২-০, ম্যাক্সওয়েল ৪-০-১৮-০)

ফল: অস্ট্রেলিয়া ৮৬ রানে জয়ী

ম্যান অব দা ম্যাচ: অ্যালেক্স কেয়ারি

Pin It