ফেনীর সোনাগাজীর মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে পুড়িয়ে হত্যা মামলার অন্যতম আসামি সোনাগাজী পৌরসভার কাউন্সিলর ও পৌর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মকসুদ আলমকে দল থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
সোনাগাজী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি রুহুল আমিন ও সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট রফিকুল ইসলাম খোকন স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে শুক্রবার এ তথ্য জানানো হয়।
এর আগে বৃহস্পতিবার রাত ১০টার দিকে রাজধানী থেকে গ্রেফতার হন মকসুদ আলম।
উল্লেখ্য, গত ২৭ মার্চ নুসরাত জাহান রাফিকে নিজ কক্ষে নিয়ে মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলা শ্লীলতাহানি করেন অভিযোগ করে তার বিরুদ্ধে মামলা করেন নুসরাতের মা শিরিন আক্তার। মামলায় ওই দিনই অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলাকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
এ ঘটনার পর গত শনিবার আলিম পর্যায়ের আরবি প্রথমপত্র পরীক্ষা দিতে নুসরাত সোনাগাজীর ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসা কেন্দ্রে গেলে তাকে পাশের ভবনের ছাদে ডেকে নিয়ে শরীরের কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয় বোরকা পরিহিত ৪/৫ জন। এতে নুসরাতের শরীরের ৮০ শতাংশ পুড়ে যায়। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে প্রথমে সোনাগাজী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। সেখান থেকে ফেনী সদর হাসপাতাল হয়ে তাকে নেওয়া হয় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে।
এই ঘটনায় দেশজুড়ে আলোচনার মধ্যে অধ্যক্ষ সিরাজকে সাময়িক বরথাস্ত করে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ। ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যের কমিটিও গঠন করা হয়।
রোববার নুসরাতের চিকিৎসায় ৯ সদস্যের বোর্ড গঠন করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পরীক্ষা কেন্দ্রে ছাত্রীর ওপর এমন নির্মমতায় উদ্বেগ প্রকাশ করে সার্বিক চিকিৎসার দায়িত্ব নেন। পাশাপাশি তাকে সিঙ্গাপুরে নিযে চিকিৎসা দেওয়ার নির্দেশ দেন। তবে নুসরাতের শারীরিক অবস্থা বিমান ভ্রমণের উপযোগী না থাকায় তাকে সিঙ্গাপুরে নেওয়া সম্ভব হয়নি। এরই মধ্যে বুধবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
গায়ে আগুন দিয়ে হত্যাচেষ্টার ঘটনায় নুসরাতের ভাই ৮ এপ্রিল মামলা দায়ের করেন। নুসরাতের মৃত্যুর পর এটি হত্যা মামলায় রূপান্তরিত হয়।