করোনভাইরাস মহামারীর কারণে পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্পের কাজ বাধাগ্রস্থ হওয়ায় ২০২২ সালের আগে নির্মাণ কাজ শেষ হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।
বুধবার সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভা শেষে ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে তিনি একথা জানান।
বাংলাদেশের দীর্ঘতম পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজ ২০২১ সালের ৩০ জুনের মধ্যে শেষ করার লক্ষ্য নির্ধারণ করা ছিল। মোট ৪২টি পিয়ারের ওপর ৪১টি স্প্যান বসিয়ে ছয় দশমিক ১৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের দ্বিতল এই সেতুটি কংক্রিট ও স্টিল দিয়ে নির্মাণ করা হচ্ছে।
করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যে স্বাস্থ্যবিধি মেনে দেশের সবচেয়ে বড় অবকাঠামো প্রকল্প পদ্মা সেতুর কাজ এগিয়ে চললেও নির্ধারিত সময়ে তা শেষ হওয়া নিয়ে আগেই সংশয় প্রকাশ করেছিলেন সংশ্লিষ্টরা।
স্বাস্থ্য বিধি মেনেই উন্নয়নকাজ ফের শুরু: সড়কমন্ত্রী
নির্ধারিত সময়ে পদ্মা সেতুর কাজ শেষ হওয়া নিয়ে সংশয়
পদ্মা সেতু নির্মাণ কাজ কতদিনে শেষ হবে বা প্রকল্পের খরচ বাড়ছে কি না- জানতে চাইলে অর্থমন্ত্রী বলেন, “২০২২ সালে কাজ শেষে হবে।
“আমার জানা মতে ২০২১ বলা হয়েছিল। সে সময় এ ধরনের ভাইরাস আমরা চিন্তা করিনি, সেজন্য বলছিলাম ২০২১ সালে শেষ করব। সেটি সবারই প্রত্যাশা ছিল। সে অনুযায়ী কাজ চলছিল এবং কাজটি সুন্দরভাবে এগিয়ে চলছিল।
“পরিপূর্ণভাবে আমাদের ধারণা ছিল ২০২১ সালের মধ্যে আমরা আমাদের মানুষদের উপহার দিতে পারব। আনফরচুনেটলি এই করোনাভাইরাস সবকিছুই উলটপালট করে দিয়েছে এ প্রকল্পটিও বাধাগ্রস্থ হয়েছে।”
বুধবারের সভায় পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্পের মূল সেতু ও নদী শাসন কাজ তদারকির জন্য কন্সট্রাকশন সুপারভিশন কনসালটেন্ট (সিএসসি) নিয়োগের চুক্তিমূল্য অনুমোদন দেওয়া হয়।
অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘পদ্মা বহুমূখী সেতু নির্মাণ প্রকল্পের মূল সেতু ও নদী শাসন কাজ তদারকীর দায়িত্বে নিয়োজিত কোরিয়া এক্সপ্রেসওয়ে কর্পোরেশন (কেইসি) অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েটস্ এর মেয়াদ ২০২০ আগস্ট পর্যন্ত। এ চুক্তির মেয়াদ ২০২০ এর সেপ্টেম্বর থেকে ২০২৩ সালের জুন পর্যন্ত ৩৪ মাস বৃদ্ধির প্রস্তাব অনুমোদন করা হয়েছে। এ বাবদ ব্যয় হবে ৩৪৮ কোটি এক লাখ ৩২ হাজার ৫৫১ টাকা।”
মেয়াদ বৃদ্ধির ফলে খরচ বাড়ছে কি না- জানতে চাইলে তিনি বলেন, “প্রজেক্ট কষ্ট যা আছে তাই। এখানে অতিরিক্ত টাকা খরচ হবে না।”
এছাড়া সভায় পাবনার ঈশ্বরদীতে ‘রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ’ প্রকল্পে ‘গ্রীন সিটি আবাসিক পল্লী’ নির্মাণের আওতায় ৪টি ২০তলা এবং ৬টি ১৬ তলা আবাসিক ভবনের ৯৫৬টি ইউনিটে আসবাবপত্র সরবরাহ কাজের ক্রয়প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়।
অর্থমন্ত্রী জানান, হাতিল কমপ্লেক্স লিমিটেড ৫৫ কোটি ৯০ লাখ ৪৫ হাজার টাকায় এ সরবরাহে অনুমোদন পেয়েছে।
পাবনার ঈশ্বরদীতে ‘রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ’ প্রকল্পে ‘গ্রীন সিটি আবাসিক পল্লী’ নির্মাণের আওতায় ৪টি ২০তলা এবং ৬টি ১৬ তলা আবাসিক ভবনের ৯৫৬টি ইউনিটে গৃহস্থালি জিনিসপত্র সরবরাহ কাজের ক্রয়প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয় সভায়।
সর্বনিম্ন দরদাতা প্রতিষ্ঠান জে এ পি ট্রেডিং ২৬ কোটি ৯৭ লাখ ৩৫ হাজার টাকায় এ সরবরাহের কাজ করবে বলে জানান অর্থমন্ত্রী।