টোল আদায়ের মাধ্যমে ২০৫৭ সাল নাগাদ পদ্মা সেতু নির্মাণের ব্যয় উঠে আসবে বলে জানিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
পদ্মা সেতু চালুর পরদিন সোমবার জাতীয় সংসদে এক প্রশ্নের উত্তরে এ তথ্য জানান তিনি। স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে বৈঠকের শুরুতে প্রশ্নোত্তর টেবিলে উপস্থাপিত হয়।
সরকার নিজস্ব অর্থায়নে ৩০ হাজার ১৯৩ কোটি টাকা ব্যয়ে ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ পদ্মা সেতু নির্মাণ করেছেন।
সেতু উদ্বোধনের আগে ওবায়দুল কাদের বলেছিলেন, এই অর্থ সেতু বিভাগকে ধার দিয়েছে সরকার। আগামী ৩৫ বছরে ৩৬ হাজার কোটি টাকা সরকারকে পরিশোধ করবে সেতু বিভাগ।
সংসদে সংরক্ষিত আসনের মমতা হেনা লাভলীর প্রশ্নের জবাবে সেতুমন্ত্রী কাদের বলেন, “পদ্মা সেতুর উপর দিয়ে চলাচলকারী যানবাহন থেকে আদায়কৃত টোল দিয়ে ৩৫ বছরে ১৪০টি ত্রৈমাসিক কিস্তিতে সরকারের দেওয়া সব ঋণ পরিশোধ করবে বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ।
“সে হিসেবে ২০৫৭ সাল নাগাদ টোল আদায়ের মধ্য দিয়ে পদ্মা সেতুর জন্য ব্যয়িত অর্থ উঠে আসবে।”
পদ্মা সেতুতে সব যানবাজনকে টোল দিয়ে যেতে হচ্ছে। গাড়ি ভেদে টোলের অঙ্ক ৭৫০ টাকা থেকে ৫ হাজার ৫০০ টাকা।
রোববার খোলার পর প্রথম দিনে ৫১ হাজারের বেশি যানবাহন সেতু দিয়ে পারাপার হয়। তাতে টোল আদায় হয় ২ কোটি টাকার বেশি।
এই সেতুতে ১০০ টাকা টোল দিয়ে মোটর সাইকেল পারাপারের সুযোগ রাখা হলেও প্রথম দিনে এক দুর্ঘটনার পর এই দ্বিচক্র যান নিষিদ্ধ করা হয়।
সংসদে আরেক প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, পাটুরিয়া-দৌলতদিয়ায় দ্বিতীয় পদ্মা সেতু নির্মাণের লক্ষ্যে সম্ভাব্যতা সমীক্ষা পরিচালনা করা হয়েছে। পরবর্তীতে নির্দেশনা পাওয়া গেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
পদ্মা সেতু নির্মাণের আগে পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া পথও বিবেচনায় ছিল। কিন্তু বিশেষজ্ঞরা মাওয়ায়ই সেতু নির্মাণের পক্ষে মত দেন। সে অনুসারে ২০১৪ সালে কাজ শুরুর পর তা সাত বছরে শেষ হয়।
সোমবার সংসদে রেলপথমন্ত্রী নুরুল ইসলাম জানান, রেলওয়ের প্রতি কিলোমিটারে যাত্রী প্রতি ব্যয় ২.৪৩ টাকা এবং আয় ০.৬২ টাকা। অপরদিকে মালামাল বহনে প্রতি কিলোমিটারে টনপ্রতি খরচ হয় ৮.৯৪ টাকা এবং আয় ৩.১৮ টাকা।
রেলমন্ত্রী রেলওয়ের গত পাঁচ বছরের (২০১৬-১৭ অর্থ বছর থেকে ২০২০-২১ অর্থবছর) রেলের আয়ের হিসাব তুলে ধরেন।
মন্ত্রীর তথ্য অনুযায়ী, পাঁচ বছরে ৩৬ কোটি ১৭ লাখ যাত্রী এবং ২ কোটি ৮ লাখ ১৩ হাজার টন মালামাল বহন করেছে। এ সময়ে রেলের আয় হয়েছে ৬৮ কোটি ৮৬ লাখ ৫১ হাজার টাকা।