পাইকারি ও খুচরা দামে বিস্তর ফারাক

Onion_BG20200718152708

কোন কারণে নিত্যপণ্যের দাম বেড়ে গেলে তা আর সহজে কমতে চায় না। বাজারে সেই পণ্যের সরবরাহ বাড়লেও ব্যবসায়ীরা বেশি মুনাফার জন্য আগের দামেই বিক্রি করতে থাকেন। এই প্রবণতা সবচেয়ে বেশি দেখা যায় খুচরা বাজারে।

বর্তমানে মসলা জাতীয় পণ্য—আদা, রসুন ও পেঁয়াজের বাজারে একই দশা। অতি প্রয়োজনীয় এসব পণ্যের পাইকারি ও খুচরা বিক্রিতে বিস্তর ফারাক দেখা যাচ্ছে।

কোন কোন পণ্য পাইকারি বাজারের চেয়ে প্রায় দ্বিগুণ দামে খুচরা বাজারে বিক্রি হচ্ছে।
রাজধানীর সবচেয়ে বড় পাইকারি বাজার শ্যামবাজারে দেশি পেঁয়াজ আকার ভেদে বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৩২ টাকা কেজি দরে। এলসি পেঁয়াজ (ভারত থেকে আমদানি) বিক্রি হচ্ছে ১৮ থেকে ২১ টাকায়। অন্যদিকে দেশি রসুন আকার ভেদে বিক্রি হচ্ছে ৬৫ থেকে ৭০ টাকার মধ্যে। আর চায়না রসুন বিক্রি হচ্ছে ৫৫ থেকে ৬০ টাকা কেজি দরে।

শ্যামবাজারে প্রতি কেজি চায়না আদা আকার ভেদে বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ১০৫ টাকায়, কেরালা আদা (দেশি হিসেবে বিক্রি হচ্ছে) আকার ভেদে ১০৫ থেকে ১১০ টাকার মধ্যে বিক্রি হচ্ছে।

অন্যদিকে রাজধানীর শান্তিনগর, সেগুনবাগিচা, খিলগাঁও, মতিঝিল টিঅ্যান্ডটি বাজার, মালিবাগসহ বিভিন্ন খুচরা বাজারে প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ আকার ভেদে বিক্রি হচ্ছে ৪৫ থেকে ৫০ টাকা দরে, এলসি পেঁয়াজ (ভারত থেকে আমদানি) বিক্রি হচ্ছে ৩৫ থেকে ৪০ টাকায়। খুচরা বাজারে দেশি রসুন আকার ভেদে বিক্রি হচ্ছে ১১০ থেকে ১২০ টাকার মধ্যে, আর চায়না রসুন বিক্রি হচ্ছে ১১৫ থেকে ১২৫ টাকায়।

খুচরা বাজারে প্রতি কেজি চায়না আদা আকার ভেদে বিক্রি হচ্ছে ১৪০ থেকে ১৫০ টাকা, কেরালা আদা (দেশি হিসেবে বিক্রি হচ্ছে) আকার ভেদে ১৫০ থেকে ১৬০ টাকার মধ্যে বিক্রি হচ্ছে।

দামের পার্থক্য নিয়ে ব্যবসায়ীদের মধ্যে রয়েছে ভিন্ন মত। পাইকাররা বলছেন, আমাদের খুব বেশি লাভের হিসাব করতে হয় না। কেজিতে আমরা টাকার পরিবর্তে পয়সার হিসাব করি। অন্যদিকে খুচরা ব্যবসায়ীরা বলছেন, পরিবহন ভাড়া, দোকানভাড়া দিতেই লাভের অংশ চলে যায়।

এ বিষয়ে শ্যামবাজারের পাইকারি ব্যবসায়ী ও মোহাম্মদিয়া বাণিজ্যালয়ের স্বত্বাধিকারী মো. জামিল বলেন, আমরা প্রতি দিন অনেক মালামাল বিক্রি করি। কেজিতে এক টাকার কম (২০-২৫ পয়সা) লাভ হলেই মাল বিক্রি করে দেই। তাছাড়া কোনো মাল আটকে রাখা হচ্ছে না, বর্ষায় মাল নষ্ট হয়ে যায়।

খুচরা বাজারে অতিরিক্ত দাম রাখা প্রসঙ্গে ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, বাজারে প্রকৃত ব্যবসায়ীরা ইমেজ সংকটে পড়ে অতি মুনাফালোভীদের কারণে। ঈদের আগে আর কোনো পণ্যের দাম বাড়বে না বলেও জানান তিনি। একই কথা জানালেন পাইকারি ব্যবসায়ী জাকির হোসেন ও সমীর সাহা।

তবে পাইকারি ব্যবসায়ীদের সঙ্গে একমত নন খুচরা ব্যবসায়ীরা। তারা বলছেন, এখন পরিবহন খরচ বেড়েছে অনেক, বিক্রি কম, দোকান ভাড়া, কর্মচারী ভাড়া আছে।

মালিবাগ বাজারের খুচরা ব্যবসায়ী আলম বলেন, পাইকার (শ্যামবাজার) থেকে মাল আনতে হলে অনেক টাকা চলে যায় পরিবহন ভাড়ায়। তাহলে কীভাবে বিক্রি করতে হবে বলেন?

একই কথা বলেন শান্তিনগর বাজারের ব্যবসায়ী সাইফুল। তিনি বলেন, এখন বাজারে বিক্রি কমেছে। দোকান ভাড়া, কর্মচারীর মজুরি দিতে হয়। তাছাড়া পরিবহন ভাড়া তো আছেই। আবার অনেকের মাল আগের রেটে কেনা আছে। দাম কিছুটা বেশি মনে হচ্ছে, তবে খুব বেশি না।

Pin It