হঠাৎ লাফাচ্ছিল বল, কখনও কখনও থামছিল। ব্যাটিং ছিল বেশ কঠিন। ইয়াসির শাহ-নাসিম শাহরা উজাড় করে দিলেন নিজেদের। ব্যাটিং দুরূহ উইকেটে চ্যালেঞ্জিং রান তাড়ায় দিক হারাতে বসেছিল ইংল্যান্ড। জস বাটলারের সঙ্গে শতরানের জুটিতে ক্রিস ওকস দেখালেন পথ। লড়াকু ফিফটিতে পাকিস্তানের বিপক্ষে প্রথম টেস্টে ইংল্যান্ডকে এনে দিলেন দারুণ জয়।
চার দিনেই ম্যানচেস্টার টেস্টে ৩ উইকেটে জিতেছে জো রুটের দল। বাটলার-ওকসের দৃঢ়তায় শেষ বেলায় ২৭৭ রানের লক্ষ্য ছুঁয়ে এগিয়ে গেছে তিন ম্যাচের সিরিজে।
টানা পাঁচ সিরিজে প্রথম টেস্ট হারার পর জিতল ইংল্যান্ড। অন্যদিকে, ২০ বছরের মধ্যে প্রথমবারের মতো আড়াইশ ছাড়ানো পুঁজি নিয়ে টেস্ট হারল পাকিস্তান।
শাহিন শাহ আফ্রিদির বল ড্রাইভ করতে চেয়েছিলেন ওকস। ব্যাটের কানায় লেগে স্লিপের পাশ দিয়ে পেয়ে যান বাউন্ডারি। ইংল্যান্ড পৌঁছে যায় জয়ের বন্দরে। দিন জুড়ে ছিল এমন শটের ছড়াছড়ি। অনেকবার একটুর জন্য কানা নেয়নি বল। কখনও কখনও একটুর জন্য ক্যাচ যায়নি ফিল্ডারের কাছে।
ওল্ড ট্র্যাফোর্ডে শনিবার ৮ উইকেটে ১৩৭ রান নিয়ে দিন শুরু করা পাকিস্তান গুটিয়ে যায় ১৬৯ রান। শেষ ২ উইকেটে ৩২ রান যোগ করে সফরকারীরা।
এতে সবচেয়ে বড় অবদান ইয়াসির শাহর। আগের দিন ১২ রান করা এই লোয়ার অর্ডার ব্যাটসম্যান টি-টোয়েন্টি ঘরানার ব্যাটিংয়ে ২৪ বলে করেন ৩৩ রান। নাসিমকে বোল্ড করে পাকিস্তানের ইনিংস গুটিয়ে দেন জফ্রা আর্চার।
উইকেটে বোলারদের জন্য যথেষ্ট সহায়তা ছিল। পাকিস্তানের বোলাররা সেই সহায়তা কাজে লাগিয়ে শুরু থেকেই চেপে ধরে ইংলিশ ব্যাটসম্যানদের। তবে মাটি কামড়ে লড়াই করেন দুই ওপেনার।ররি বার্নসকে ফিরিয়ে শুরুর জুটি ভাঙেন মোহাম্মদ আব্বাস। ডম সিবলি ও জো রুট কঠিন সময় পার করে এগিয়ে নিতে থাকেন ইংলিশদের। ১১৪ বলে ৩৬ রান করা সিবলিকে ফিরিয়ে ৬৪ রানের জুটি ভাঙেন ইয়াসির।
আস্থার সঙ্গে খেলা রুটকে দারুণ এক ডেলাভারিতে বিদায় করেন নাসিম। বেন স্টোকস ও অলি পোপের দ্রুত বিদায়ে ম্যাচ ঝুঁকে পড়ে পাকিস্তানের দিকে।
১১৭ রানে ৫ উইকেট হারানো ইংল্যান্ড প্রতিরোধ গড়ে বাটলার ও ওকসের ব্যাটে। ওয়ানডে ঘরানার ব্যাটিংয়ে দুই জনে রান তুলতে থাকেন দ্রুত। সব যে মাঝ ব্যাটে খেলতে পেরেছেন এমন নয়। তবে দুই জন খেলে গেছেন নিজের মতো করে। একই ওভারে ফিফটি স্পর্শ করেন দুই ব্যাটসম্যান।
বিশেষ করে লেগ স্পিনার ইয়াসির তাদের যথেষ্ট ভোগাচ্ছিলেন। কিন্তু কাঙ্ক্ষিত উইকেটের দেখা মিলছিল না। শেষ পর্যন্ত ইয়াসিরের হাত ধরেই আসে সাফল্য। বাটলারকে এলবিডব্লিউ করে ভাঙেন ১৩৯ রানের জুটি।
৯৯ রানে ৪ উইকেট নিয়ে পাকিস্তানের সেরা বোলার ইয়াসির। প্রথম ইনিংসেও নিয়েছিলেন ৪ উইকেট।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
পাকিস্তান ১ম ইনিংস: ১০৯.৩ ওভারে ৩২৬
ইংল্যান্ড ১ম ইনিংস: ৭০.৩ ওভারে ২১৯
পাকিস্তান ২য় ইনিংস: ৪৬.৪ ওভারে ১৬৯ (আগের দিন ১৩৭/৮) (ইয়াসির ৩৩, আব্বাস ৩*, নাসিম ৪; অ্যান্ডারসন ৯-২-৩৪-০, ব্রড ১০-৩-৩৭-৩, আর্চার ৬.৪-০-২৭-১, বেস ১২-২-৪০-১, ওকস ৫-১-১১-২, স্টোকস ৪-০-১১-২)
ইংল্যান্ড ২য় ইনিংস: (লক্ষ্য ২৭৭) ৮২.১ ওভারে ২৭৭/৭ (বার্নস ১০, সিবলি ৩৬, রুট ৪২, স্টোকস ৯, পোপ ৭, বাটলার ৭৫, ওকস ৮৪*, ব্রড ৭, বেস ০*; আফ্রিদি ১৫.১-১-৬১-১, আব্বাস ১৬-৪-৩৬-১, নাসিম ১৩-৪-৪৫-১, ইয়াসির ৩০-২-৯৯-৪, শাদাব ৮-০-৩৪-০)
ফল: ইংল্যান্ড ৩ উইকেটে জয়ী
ম্যান অব দা ম্যাচ: ক্রিস ওকস