বন্ধ ঘোষণা করা রাষ্ট্রায়ত্ত ২৫টি পাটকলের শ্রমিকদের জুন মাসের বকেয়া মজুরি পরিশোধ করতে ৫৮ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছে সরকার। বরাদ্দকৃত অর্থ শ্রমিকদের নিজ নিজ অ্যাকাউন্টে চেকের মাধ্যমে দেওয়া হবে।
রোববার (০৫ জুলাই) অর্থ মন্ত্রণালয় এ অর্থ বরাদ্দ করে।
গত শুক্রবার বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছিলেন, মজুরি কমিশন-২০১৫ অনুযায়ী পাটকল শ্রমিকদের জুন মাসের মজুরি আগামী সপ্তাহে তাদের ব্যাংক হিসাবে পরিশোধ করা হবে।
প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের অওতাধীন বাংলাদেশ পাটকল কর্পোরেশনের (বিজেএমসি) নিয়ন্ত্রণাধীন আলিম জুট মিল বাদে অন্যান্য পাটকলের শ্রমিকদের জন্য ৫৮ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের চিঠিতে বলা হয়, অর্থ মন্ত্রণালয় পরিচালন ঋণ হিসেবে এ টাকা বরাদ্দ দিয়েছে। বরাদ্দকৃত অর্থ ২০১৯-২০ অর্থবছরের বিজেএমসি’র মিলগুলোর জন্য বর্ণিত খাত ব্যতীত অন্য কোন খাতে ব্যয় করা যাবে না। বিজেএমসি’কে শ্রমিকদের সুনির্দিষ্ট ব্যাংক অ্যাকাউন্টে চেকের মাধ্যমে টাকা পরিশোধ করতে হবে।
বরাদ্দকৃত অর্থ বিজেএমসি’র অনুকূলে পরিচালন ঋণ হিসেবে গণ্য হবে, যা আগামী ২০ বছরে (৫ বছরের গ্রেস পিরিয়ডসহ) ৫ শতাংশ সুদে ষান্মাসিক কিস্তিতে পরিশোধ করতে হবে। আর এ জন্য অর্থ বিভাগের সঙ্গে বিজেএমসিকে একটি ঋণ চুক্তি সম্পাদন করতে হবে।
চিঠিতে বিশেষভাবে বলা হয়েছে, বরাদ্দ দেওয়া অর্থ কেবলমাত্র শ্রমিকদের বকেয়া মজুরি খাত ব্যতীত অন্য কোন খাতে ব্যয় করা যাবে না। বরাদ্দকৃত অর্থ ব্যয়ে সরকারের বিদ্যমান বিধি-বিধান অনুসরণ করতে হবে। বিধি বহির্ভূতভাবে কোন অর্থ পরিশোধ করা হলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা দায়ী থাকবেন।
উল্লেখ্য, পাটকল শ্রমিকদের নোটিশ মেয়াদের অর্থাৎ জুলাই-আগস্টের ৬০ দিনের মজুরিও উভয় মাসে যথারীতি পরিশোধ করা হবে। পিএফ, গ্র্যাচুইটি ও গোল্ডেন হ্যান্ডশেক সুবিধাসহ অবশিষ্ট সকল পাওনার ৫০ শতাংশ স্ব স্ব ব্যাংক হিসাবে এবং বাকি ৫০ শতাংশ স্ব স্ব নামে সঞ্চয়পত্র আকারে সেপ্টেম্বর মাসের মধ্যে পরিশোধ করা হবে। সব ক্ষেত্রেই মজুরি কমিশন-২০১৫ এর ভিত্তিতেই পাওনা হিসাব করা হবে। ২০১৪ সাল থেকে অবসরপ্রাপ্ত শ্রমিকদের (৮ হাজার ৯৫৪ জন) প্রাপ্য সকল বকেয়া, বর্তমানে কর্মরত শ্রমিকদের (২৪ হাজার ৮৮৬ জন) প্রাপ্য বকেয়া মজুরি, শ্রমিকদের পিএফ জমা, গ্র্যাচুইটি এবং সেই সাথে গ্র্যাচুইটির সর্বোচ্চ ২৭ শতাংশ হারে অবসায়ন সুবিধা একসাথে শতভাগ পরিশোধ করা হবে।
এ জন্য সরকারি বাজেট থেকে প্রায় ৫ হাজার কোটি টাকা দেওয়া হবে। অবসায়নের পর মিলগুলি সরকারি নিয়ন্ত্রণে পিপিপি/যৌথ উদ্যোগ/জিটুজি/লিজ মডেলে পরিচালনার উদ্যোগ নেওয়া হবে। নতুন মডেলে পুনঃচালুকৃত মিলে অবসায়নকৃত বর্তমান শ্রমিকেরা অগ্রাধিকার ভিত্তিতে কাজের সুযোগ পাবেন। একই সাথে এসব মিলে নতুন কর্মসংস্থানেরও সৃষ্টি হবে। সকল শ্রমিককে অবশ্যই পুনর্বাসন করা হবে।