রাষ্ট্রায়াত্ত ২৫টি বন্ধ পাটকলের শ্রমিকদের বকেয়া পরিশোধ না করে সরকার তাদের সঙ্গে প্রতারণা করছে বলে মন্তব্য করেছেন রুহুল কবির রিজভী।
সোমবার দুপুরে এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে দলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব একথা বলেন।
তিনি বলেন, “পাটকল শ্রমিকদের গোল্ডেন হ্যান্ডশেকের কথা বলা হলেও তাদের প্রাপ্য টাকা এখনও দেওয়া হয়নি। সরকারের পক্ষ থেকে নানা ধরনের আশ্বাস দেওয়া হলেও কোনোটাই পূরণ করা হয়নি। বরং শ্রমিকরা প্রতারিত হয়েছে বলে মনে করে, তাদের প্রতারিত করা হচ্ছে।
“বর্তমান গণবিরোধী সরকারের অত্যাচারের আরেকটি নমুনা সরকারি ২৫টা পাটকল বন্ধ করে দেওয়া। পাটকল শ্রমিকরা এখন রিকশা চালায়, নৌকা বাইছে। বর্তমান করোনার সময়ে তারা মানবেতর জীবন-যাপন করছে।”
রিজভী বলেন, আনাচার-অবিচারের উপর প্রতিষ্ঠিত সরকার কখনোই কৃষক-শ্রমিক মেহনতি মানুষের স্বার্থকে গুরুত্ব দেবে না। বরং তাদের রক্ত চুষে সমাজে সম্রাট, খালেদ, বরকত ও শামীম তৈরি করবে। পাচার হবে হাজার হাজার কোটি টাকা।
১৫ অগাস্ট বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যাকাণ্ডের জন্য জিয়াউর রহমানকে দায়ী করে প্রধানমন্ত্রীর এক মন্তব্যের জবাবে এই বিএনপি নেতা বলেন, জিয়াউর রহমান সরকারি চাকরি করতেন এইচটি ইমামের মতোই, সেনাবাহিনী সরকারের একটি বিভাগ। তিনি ছিলেন সেনাবাহিনীর দ্বিতীয় ব্যক্তি, প্রথম ব্যক্তি নন।
“যিনি সেনাবাহিনীর প্রধান তার কোনো দায় নেই, দায় নাকি জিয়াউর রহমানের! তৎকালীন সেনা প্রধান জনাব শফিউল্লাহর হাতেই ছিল সমগ্র সেনাবাহিনীর কমান্ড। অথচ আওয়ামী লীগের এমপি হওয়ার কারণে তিনি অভিযুক্ত নন। কারণ যে যত অপরাধই করুক শেখ হাসিনার আনুগত্য করলে তার সাত খুন মাফ। ১৫ আগস্টের সাথে আওয়ামী লীগ নিজেরাই জড়িত তা দিবালোকের মতো যেমন সত্য ঠিক তেমনিই সুপরিকল্পিতভাবে ২১ আগস্টের সাথেও আওয়ামী লীগের আপনজনরা জড়িত।
“২১ আগস্টে বোমা হামলার পূর্বাপর ঘটনা পরম্পরাতে তা সুস্পষ্ট। অসংখ্য উদাহরণের মধ্যে একটি উদাহরণ হচ্ছে, মুক্তাঙ্গন থেকে আওয়ামী কার্যালয়ে কেন তারা সভা স্থানান্তর করেছিলেন, সেই রহস্য সম্পর্কে তারা নির্বাক থাকেন।”
বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব বলেন, ১৯৭২ সাল থেকে বাম নেতা মুক্তিযোদ্ধা সিরাজ শিকদারসহ জাসদ ও বাম সংগঠনের হাজার হাজার নেতা-কর্মীদের বিচারবর্হিভূত হত্যাকাণ্ডের মাধ্যমে আওয়ামী লীগের হত্যার রাজনীতি শুরু।
“গত ১২ বছরেও দুঃশাসনের সীমাহীন লুটপাট-টাকা পাচার-ব্যাংক লুটপাটের পাশাপাশি বিচারবর্হিভূত হত্যা ও গুমের সমর্থক শব্দ হয়েছে আওয়ামী লীগ। বেপরোয়া দুর্নীতি তাদের অলিখিত দলীয় ইশতেহার। গণতন্ত্রকে কবরের মধ্যে ঢুকিয়ে জনগণকে বশ মানাতে রক্তাক্ত বল প্রয়োগের জন্য হুকুম প্রতিনিয়ত উচ্চারিত হয় আওয়ামী লীগের মন্ত্রীদের মুখ থেকে।”
নয়া পল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এই ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলন হয়।