আওয়ামী লীগ নেতা এ কে এম এ আউয়ালের জামিন নিয়ে নাটকীয়তায় আলোচনার প্রেক্ষাপটে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, পিরোজপুরের জেলা ও দায়রা জজ মো. আব্দুল মান্নান ‘অত্যন্ত অশালীন ও রূঢ়’ ব্যবহার করায় তাকে তাৎক্ষণিক বদলি করা হয়েছে।
ক্ষমতাসীন দলের নেতাকে কারাগারে পাঠানো ওই বিচারককে তাৎক্ষণিক বদলি আইনের শাসনের ব্যত্যয় কিংবা বিচারিক কাজে হস্তক্ষেপ নয় বলেও দাবি করেন আইনমন্ত্রী।
দুর্নীতির মামলায় পিরোজপুরের সাবেক সংসদ সদস্য আউয়াল ও তার স্ত্রী লায়লা পারভীনের জামিনের আবেদন নাকচ করে মঙ্গলবার সকালে তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশে দিয়েছিলেন জেলা জজ আব্দুল মান্নান।
এরপর পিরোজপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আউয়ালের সমর্থকদের বিক্ষোভ-ভাংচুরের প্রেক্ষাপটে জজ আব্দুল মান্নানকে বদলি করা হয়।
বিকালে পিরোজপুরের ভারপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজের দায়িত্ব নিয়ে নাহিদ নাসরিন আওয়ামী লীগ নেতা আউয়াল ও তার স্ত্রীকে জামিন দেন।
এনিয়ে তুমুল আলোচনার মধ্যে বুধবার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, “পিরোজপুরে জেলা জজের কাছে পিরোজপুর আওয়ামী লীগের সভাপতি এবং তার স্ত্রীর দুর্নীতির মামলার জন্য জামিত চাইতে গিয়েছিলেন।
“জামিন চাওয়ার সময় তার আইনজীবী এবং বারের সকল আইনজীবীর সাথে আমরা যে তথ্যাদি পেয়েছি, জেলা ও দায়রা জজ অত্যন্ত অশালীন এবং রূঢ় ব্যবহার করেন। সেই উদ্ভুত পরিস্থিতিতে এমন একটা অবস্থা দাঁড়ায়, যেখানে বারের সকলে আদালত বর্জন করার সিদ্ধান্ত নেয়।
“এই অবস্থায় যখন এসব গণ্ডগোল চলছিল এবং রাস্তায় লোকজন বেরিয়ে গিয়েছিল, সেটাকে কন্ট্রোল করার জন্য তাকে (জজ) ওখান থেকে স্ট্যান্ড রিলিজ (তাৎক্ষণিক বদলি) করে আদেশ দেওয়া হয়, আইন মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবে।”
এ কে এম এ আউয়ালকে কারাগারে পাঠানোর আদেশের পর মঙ্গলবার সকালে তাণ্ডব শুরু করে তার সমর্থকরা।
জেলা জজের এই ব্যবহার করা সমীচীন হয়নি মন্তব্য করে তিনি বলছেন, ‘সিচুয়েশনটাকে প্রশমিত’ করতেই আওয়ামী লীগ নেতা আউয়াল ও তার স্ত্রী জেলা মহিলা লীগের সভাপতি লায়লা পারভীনকে জামিন দেওয়া হয়েছে এবং এতে আইনের শাসনের ‘ব্যত্যয় হয়নি’।
জজ আব্দুল মান্নানকে বদলির এই ঘটনাকে বিচার বিভাগের উপর চাপের নজির হিসেবে দেখাচ্ছে বিএনপি। এই বদলি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে হাই কোর্টও।