আসামির নাম জাহাঙ্গীর মিয়া, কিন্তু পুলিশ গ্রেপ্তার করল জাহাঙ্গীর আলমকে; সেই ‘ভুলের’ কারণে জাহাঙ্গীর আলমকে এক মাস থাকতে হল কারাগারে।
‘ভুল’ উদ্ঘাটনের পর বুধবার ঢাকার পঞ্চম অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ ফাতেমা ফেরদৌস মামলার দায় থেকে জাহাঙ্গীর আলমকে (৫৫) অব্যাহতি দিয়েছেন।
জাহাঙ্গীর আলমের বাড়ি ময়মনসিংহ জেলার ধোবাউড়া উপজেলায়। তিনি কৃষক।
আর ২০২০ সালের নভেম্বরে ঢাকার বংশালের একটি ছিনতাই মামলার আসামি হলেন জাহাঙ্গীর মিয়া। তার বিরুদ্ধে আদালতের গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়।
সেই পরোয়ানায় গত মাসে পুলিশ ধোবাউড়া থেকে জাহাঙ্গীর আলমকে গ্রেপ্তার করে এনেছিল বলে জানিয়েছে আদালতে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মো. শাহ জালাল কিবরিয়া।
তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “পুলিশ যাচাই-বাছাই না করে জাহাঙ্গীর মিয়ার পরিবর্তে জাহাঙ্গীর আলমকে গ্রেপ্তার করেছিল।
“বিচারক আজ মামলার তদন্ত কমকর্তা বংশাল থানার এসআই রাশেদুল ইসলামকে ভর্ৎসনা করলে তিনি বলেন, ‘দোষটি আমাদের নয়, ভুল করে ভুল আসামি গ্রেপ্তার করে ধোবাউরা থানার পুলিশ’।”
এদিকে জাহাঙ্গীর মিয়াও ইতোমধ্যে গ্রেপ্তার হয়েছেন।
বিচারক দুই জাহাঙ্গীরকেই কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে তাদের জাতীয় পরিচয়পত্র দেখে নিশ্চিত হয়ে নির্দোষ জাহাঙ্গীর আলমকে অব্যাহতির আদেশ দেন।
জাহাঙ্গীর আলম সাংবাদিকদের বলেন, “পুলিশ সঠিক আসামি যাচাই-বাছাই না করেই আমাকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে আসে।
“পুলিশের ভুলের কারণে আমি এক মাস কারাগারে ছিলাম। আমি সামাজিক ও পারিবারিকভাবে ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছি। জীবনে কোনো অপরাধ না করেও জেলের মুখ দেখতে হল।”
জাহাঙ্গীর আলমের আইনজীবী মাইনুল ইসলাম বলেন, “আমার মক্কেল কোনো দিন কারাগারে যাননি। পুলিশের ভুলের কারণে নিরপরাধ ব্যক্তি এক মাস জেল খাটলেন। তিনি আর্থিকভাবেও ক্ষতিগ্রস্ত হলেন।”
জাহাঙ্গীর আলমকে এই মামলায় যেন আর কোনো হয়রানি না করা হয়, সেই আরজি তিনি রেখেছেন আদালতে।
“ভবিষ্যতে যদি এ মামলায় প্রকৃত আসামি জাহাঙ্গীর মিয়ার কারাদণ্ড হয়, তখন আমার মক্কেল আবার হয়রানির শিকার হতে পারে। তাই আদালতকে বলেছি, প্রকৃত আসামির ভোটার আইডিসহ যেন ভবিষ্যতে ওয়ারেন্ট পাঠানো হয়।”
এই মামলাটির বাদী মো. এনায়েত উল্লাহ। ২০২০ সালের ১৭ অগাস্ট রিকশায় যাওয়ার পথে গুলিস্তানে ছিনতা্ইয়ের শিকার হন তিনি। তার কাছ থেকে ৪ লাখ টাকা ছিনতাই হয়েছিল।
গত বছরের ৩১ জানুয়ারি জাহাঙ্গীর মিয়াসহ চারজনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ।