প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, করোনাভাইরাস মহামারি কারণে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সময়মতো তার সরকারের দেওয়া প্রণোদনা প্যাকেজগুলো বিশেষ করে কৃষি ও শিল্পসহ সর্বোপরি দেশের অর্থনীতি সচল রাখতে সহায়তা করছে।
মঙ্গলবার গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে জাতীয় অর্থনৈতিক কাউন্সিলের (একনেক) কার্যনির্বাহী কমিটির সভায় সভাপতিত্বকালে এ কথা বলেন তিনি। নগরীর শের-ই-বাংলা নগর এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত বৈঠকে সংশ্লিষ্ট অন্যান্য মন্ত্রী ও সচিবরা অংশগ্রহণ করেন। গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠিত এ বৈঠকে যোগ দেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। খবর বাসসের।
বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা শিল্প ও অন্যান্য খাতের পাশাপাশি কৃষিখাতে বিভিন্ন প্রণোদনা প্যাকেজ দিয়েছি। আমরা ক্ষুদ্র, মাঝারি, বড় ও পোশাক শিল্পে আলাদা করে প্রণোদনা প্যাকেজ দিয়েছি। এছাড়া করোনা মহামারি পরিস্থিতিতে দেশের অর্থনীতি সচল রাখতে সব খাতে প্রণোদনা প্যাকেজ দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।’
কোভিড-১৯ উপলক্ষে সরকারের প্রণোদনা প্রদান অত্যন্ত সময়োপযোগী হয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী ও একনেক চেয়ারপারসন বলেন, ‘কত টাকা আছে, কী আছে না আছে, সেটা চিন্তা করিনি। বরং একটাই চিন্তা করেছিলাম- এই দুঃসময়ে আমাদের অর্থনীতির চাকাটাকে যদি গতিশীল রাখতে হয় তাহলে অবশ্যই মানুষের হাতে আমাদের টাকা পৌঁছে দিতে হবে।’
সরকার প্রধান আরও বলেন, ‘যদি টাকা না থাকে তাহলে সাধারণ মানুষদের জীবনটা চালানোই মুশকিল হয়ে পড়ে। কাজেই তাদের সাহায্যার্থে নগদ অর্থ ও বিভিন্ন সেক্টরে আমরা সরাসরি যে টাকা পাঠিয়েছি সেটা কিন্তু কাজে লেগেছে। গ্রামে মানুষের কিছু একটা করে খাওয়ার সুযোগ রয়েছে। সেটা তারা করতে পেরেছে।’
তিনি বলেন, ‘সর্বাগ্রে আমি কৃষির ওপর সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে বলেছি কৃষিকে আমাদের ধরে রাখতে হবে ও খাদ্য উৎপাদনটা বাড়াতে হবে। মানুষের যেন খাবারের কষ্ট না হয় সেটা আমরা নিশ্চিত করেছি। ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে আমরা যে প্রণোদনাটা দিয়েছি সেই প্রণোদনাটা যখনই সবাই নিতে শুরু করেছে তখনই কিন্তু আস্তে আস্তে নিজ নিজ ব্যবসা-বাণিজ্যে তারা ফিরে আসতে পেরেছে। কারণ, এমন কোনো খাত নাই যেখানে আমরা সাহায্য করি নাই। শুধু বড়লোক বা বিত্তশালী নয়, সব ধরনের ব্যবসার সঙ্গে জড়িতরাই প্রণোদনাটা পেয়েছে।’
প্রণোদনা বা নগদ সাহায্য প্রদানের ধরণ সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘নতুন একটা পদ্ধতিতে আপনারা কাজটা করেছেন। কিন্তু রেজাল্ট যেটা দেখলাম সেটা আসলেই গ্রহণযোগ্য।’ এজন্য তিনি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও মাঠ পর্যায়ের কর্মীদের ধন্যবাদ জানান।
এক শ্রেণির তথাকথিত সমালোচকদের তিনি উদ্দেশ্যে বলেন, ‘অনেকেই অনেক কথা বলছেন, আসলে এই রেজাল্টটা প্রচার করলে, না জেনে যারা নানা কথা বলে যাচ্ছেন- এটা হলো না, সেটা হলো না, তারা একটু তথ্য পাবেন। যদিও বলাটাই তাদের একটা অভ্যাস, তারা বলবেই।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কোনো একটা কাজের পর সেটার কী (ফলাফল) হলো, মানুষের কাছে এর কতটুকু (সুফল) পৌঁছালো, সেই ফলাফলটা জানা খুব দরকার। এর ফলে পরবর্তীতে কী ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া দরকার এবং কোন কোন জায়গায় আরো গুরুত্ব দিতে হবে বা কোথায় আরো সহযোগিতা পৌঁছাতে হবে সেই কাজটা সঠিকভাবে করার একটা সুযোগ হয়। এটাই সব থেকে বড় কথা।’