বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের শাসনামলের সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আওয়ামী লীগ মানুষ হত্যার রাজনীতি করে না। প্রতিহিংসার রাজনীতিতেও বিশ্বাসী নয়। সেটা করলে বিএনপির অস্তিত্ব থাকত না।
বুধবার জাতীয় সংসদ অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রীর জন্য নির্ধারিত প্রশ্নোত্তর পর্বে শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে এদিন সংসদে সরকারি ও বিরোধীদলের একাধিক সংসদ সদস্যের লিখিত ও সম্পূরক প্রশ্নের জবাব দেন প্রধানমন্ত্রী।
বিএনপির সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য রুমিন ফারহানার প্রশ্নের লিখিত জবাবে শেখ হাসিনা আরও বলেন, বিএনপি সরকারের সময় তাদের হাতে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা যে পরিমাণ হত্যা, নির্যাতন ও নিপীড়নের শিকার হয়েছি তা নজিরবিহীন। এদেশে জঙ্গি সৃষ্টি, অগ্নিসন্ত্রাস, বোমা হামলা, মানি লন্ডারিং, এতিমের টাকা আত্মসাৎসহ হেন অপকর্ম নেই যা খালেদা জিয়া, তার দুই ছেলে এবং তার দলের নেতারা করেননি।
এর আগে রুহিন ফারাহানা প্রশ্ন করার সময় বলেন, দেশে বর্তমানে মানুষ হত্যার বিচার থেকে মশা মারা পর্যন্ত সবক্ষেত্রেই প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনার প্রয়োজন হয়। এর লিখিত জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিনি (রুমিন) একটি অনাকাঙ্খিত, অসংসদীয় ও অবান্তর প্রশ্ন করেছেন। তিনি মানুষ হত্যা আর মশা মারাকে একই সমতলে নিয়ে এসেছেন। আমি সংসদ সদস্যের নেত্রী খালেদা জিয়ার মতো দুপুর ১২টা পর্যন্ত ঘুমিয়ে কাটালেই কি প্রশ্নকারী খুশি হতেন?
শেখ হাসিনা বলেন, রাষ্ট্র একটি যন্ত্রের মতো। এই যন্ত্রের বিভিন্ন কল-কব্জা যখন সমন্বিতভাবে কাজ করে, তখনই রাষ্ট্র ভালো থাকে। বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে কারণ রাষ্ট্রযন্ত্র ভালোভাবে কাজ করছে।
তিনি আরও বলেন, প্রতিষ্ঠানের অকার্যকর হওয়ার কথা উনি (রুমিন ফারাহানা) বলছেন। অকার্যকর রাষ্ট্রের উদাহরণ তো বিএনপিই সৃষ্টি করেছিল। রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত আসত রাষ্ট্রযন্ত্রের সঙ্গে সম্পৃক্ত নয় এমন ব্যক্তির কাছ থেকে। প্রধানমন্ত্রী ঘুমিয়ে থাকতেন, সিদ্ধান্ত দিতেন তাঁর পুত্র হাওয়া ভবন থেকে। মন্ত্রী-সচিবরা হাওয়া ভবন থেকে নির্দেশের অপেক্ষায় প্রহর গুণতেন।
সংসদ নেতা বলেন, সংসদীয় সরকার ব্যবস্থায় প্রধানমন্ত্রী সরকার প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। যার অন্যতম কাজ ও দায়িত্ব হচ্ছে সব মন্ত্রণালয় ও বিভাগের কাজের সমন্বয় করা। মন্ত্রীদের কাজের তদারকি করা। জনগণ আমাকে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব দিয়েছেন তাদের কল্যাণ নিশ্চিত করার জন্য। আরাম-আয়েসের জন্য প্রধানমন্ত্রিত্ব গ্রহণ করিনি আমি।
শেখ হাসিনা বলেন, আমি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মেয়ে। যিনি তার জীবনটাই উৎসর্গ করেছিলেন এ দেশের মানুষের কল্যাণের জন্য। বঙ্গবন্ধুর মেয়ে হিসেবে জনগণের প্রতি আমারও দায়বদ্ধতার একটা আলাদা জায়গা রয়েছে। আমি সেটাই প্রতিপালনের চেষ্টা করছি। সে জন্যই আমি দিনরাত পরিশ্রম করছি। কোনো প্রতিষ্ঠানকে অকার্যকর করার জন্য নয়, সব প্রতিষ্ঠানকে আরও সক্রিয় রাখার জন্য সব সময়ই সচেষ্ট থাকছি।
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের নিলসন প্রচেষ্টা ও জনগণের অক্লান্ত পরিশ্রমের ফলে আজকে বাংলাদেশ বিশ্বে একটা মর্যাদার আসনে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে বাংলাদেশ বিশ্ব দরবারে রোল মডেল হয়ে আছে। দেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়েছে। স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশের তালিকায় স্থান করে নিয়েছে। জিডিপির প্রবৃদ্ধিতে বিশ্ব সেরার জায়গা দখল করেছে। এসব আপনা-আপনি হয়নি। সবার পরিশ্রমেই হয়েছে। প্রতিষ্ঠান অকার্যকর থাকলে এসব অর্জন সম্ভব হতো না।
তিনি বলেন, প্রশ্নকর্তা এমপির দল বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুসহ তার পরিবার ও আত্মীয়-স্বজনের রক্তে রঞ্জিত হয়ে খুনিদের সহায়তায় ক্ষমতায় বসেছিলেন। জিয়াউর রহমানের প্রতিহিংসার বলি হয়ে জেলখানায় নির্মমভাবে নিহত হয়েছিলেন জাতীয় চার নেতা। জিয়াউর রহমানই এ দেশে হত্যা-ক্যুর অপরাজনীতি শুরু করছিলেন। সশস্ত্র বাহিনীর শত শত অফিসার-সৈনিককে হত্যা করেছিলেন। ঘুষ-দুর্নীতি ও লুটপাটের সংস্কৃতিও চালু করেছিলেন তিনি। মেজর জিয়াই একটা পুরো প্রজন্মকে নষ্ট করেছেন। তাই বিএনপি এমপির মুখে মানুষ মারার বিষয়টি অবলীলায় চলে আসে। এটাই তো তাদের দলীয় আদর্শ। আর জিয়াউর রহমানের স্ত্রী খালেদা জিয়া যে তার স্বামীর চেয়েও এক কাঠি সরেস- সেটা তিনি প্রমাণ করেছেন।
শেখ হাসিনা বলেন, প্রশ্নকর্তার নেত্রী খালেদা জিয়াও প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। তার শাসনামলে আওয়ামী লীগের ২১ হাজার নেতাকর্মীকে হত্যা করা হয়েছিল। একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলা করে আমাকেসহ আওয়ামী লীগের পুরো নেতৃত্বকে নিঃশেষ করে দেওয়ার চেষ্টা হয়েছিল। রাষ্ট্রীয় মদদে খুনের নেশায় মত্ত হয়েছিল বিএনপি।
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, বিএনপির অগ্নিসন্ত্রাসসহ ২০১৪ সালের সেই বিভীষিকাময় দিনগুলোর কথা দেশবাসী নিশ্চয় ভুলে যাননি। ওই সময়ে বিএনপি নারী-শিশুসহ ৫০০ নিরীহ মানুষকে পুড়িয়ে মেরেছে। নির্মমভাবে হত্যা করেছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর ২৪ সদস্যকে। ৫৮২টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, তিন হাজার যানবাহন, ২৯টি রেল, ৯টি লঞ্চ এবং ৭০টি সরকারি অফিসে অগ্নিসংযোগ করেছে। অসংখ্য বৃক্ষ নিধনসহ গবাদি পশুও আগুনে পুড়িয়েছে।
গণফোরামের সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহমদের সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জনগণ আমাকে নির্বাচিত করে সংসদে পাঠিয়েছে। আমি জনগণের ভোটে প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হয়েছি। সুতরাং মানুষের ভালো-মন্দ দেখার দায়িত্ব আমার। খালেদা জিয়ার দিকে ইঙ্গিত করে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, আমি ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে দেশ চালাই না। দুপুর ১২টা পর্যন্ত ঘুমাই না। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে মাত্র পাঁচ ঘণ্টা ঘুমাই। বাকি সময় দেশের কোথায় কী হচ্ছে, তার খোঁজ রাখার চেষ্টা এবং সমস্যার সমাধান করি।
জাতীয় পার্টির ডা. রুস্তম আলী ফরাজীর প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, গত ৩ আগস্ট পর্যন্ত সরকার ১ লাখ ৫৭ হাজার এনএস-ওয়ান কিটসহ মোট ৩ লাখ ৬৮ হাজার ২০০ ডেঙ্গু রোগ শনাক্তকরণ কিট আমদানি করা হয়েছে। ৬ আগস্ট থেকে বিদেশ হতে কাঁচামাল এনে দেশেই ডেঙ্গু রোগের কিট তৈরির প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এর ফলে প্রতিদিন প্রায় ৩৫ হাজার কিট সরবরাহ করা সম্ভব হবে। ডেঙ্গু রোগ শনাক্তকরণ কিট ঘাটতির কোনো আশঙ্কা নেই।
তিনি বলেন, ঢাকায় অকার্যকর মশার ওষুধ কেনার সঙ্গে জড়িতদের শনাক্ত করতে তদন্ত চলছে। দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ডেঙ্গু রোগ মোকাবেলায় নিজ নিজ এলাকা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার আহ্বান জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ডেঙ্গু প্রতিরোধ, শনাক্তকরণ এবং ডেঙ্গু জ্বরের চিকিৎসায় অভিজ্ঞ চিকিৎসকদের সমন্বয়ে আওয়ামী লীগ ৬৪ জেলায় মনিটরিং টিম গঠন করেছে। এ মনিটরিং টিম জেলা পর্যায়ে জনসচেতনতা সৃষ্টি, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীদের উৎসাহ দেওয়া, সরকারের সঙ্গে সমন্বয় করে প্রয়োজনীয় লজিস্টিক সাপোর্ট দেওয়া এবং প্রয়োজনীয় সংখ্যক চিকিৎসক-নার্স ও অন্যান্য স্বাস্থ্যকর্মীর মাধ্যমে সর্বাত্মক সহায়তা দেওয়ার কর্মসূচি নিয়েছে।
গণফোরামের মোকাব্বির খানের প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা ২০২০ সালের ১৭ মার্চ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে ‘মুজিব বর্ষ’-এর বছরব্যাপী আয়োজন তুলে ধরেন। তিনি বলেন, মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন ও মৌলিক চাহিদা পূরণ করে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ে তোলাই আওয়ামী লীগ সরকারের মূল লক্ষ্য। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমার নিজের কোনো চাওয়া-পাওয়া নেই। দেশের জন্য আমি কী করতে পারলাম, সেটাই আমার মূল লক্ষ্য।
জাতীয় পার্টির মুজিবুল হক চুন্নুর প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যে কোনো চুক্তি সম্পাদনের সময় দেশের স্বার্থ অক্ষুণ্ণ রেখেই খসড়া প্রস্তুত ও চূড়ান্ত করা হয়। তিস্তাসহ সব অভিন্ন নদীর পানি বণ্টনের বিষয়টি সরকার অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গেই বিবেচনা করছে। চুক্তিটি সম্পাদনে কূটনৈতিক প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। তিনি আরও বলেন, ভারতের অভ্যন্তরীণ রাজনীতির কারণে এ বিষয়ে এখনও চুক্তি স্বাক্ষর করা সম্ভব হয়নি। তবে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বাংলাদেশ সফরকালে তিস্তার পানি বণ্টন সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন।
শেখ হাসিনা ২০১৭ ও ১৮ সালে ভারত সফরকালে তিস্তার পানি বণ্টন সমস্যা সমাধানে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনার কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলেন, ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইতিবাচক সাড়া দিয়েছেন। আগামী অক্টোবরে ভারত সফরকালেও ভারতের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তিস্তার পানি বণ্টন সমস্যার সমাধান বিষয়ে আমি আলোচনা করব। এ ব্যাপারে ইতিবাচক ফল পাওয়া যাবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন প্রধানমন্ত্রী।
আওয়ামী লীগের রুমানা আলীর প্রশ্নের জবাবে সংসদ নেতা জানান, জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক মহলের চাপে মিয়ানমার দ্বিপক্ষীয় চূক্তিগুলো স্বাক্ষর করলেও তা বাস্তবায়নে যথেষ্ট গড়িমসি করছে। যাবতীয় প্রস্তুতি থাকার পরেও কোনো রোহিঙ্গা মিয়ানমারে ফিরে যেতে সম্মত না হওয়ায় প্রত্যাবাসন শুরু করা সম্ভব হয়নি। কারণ মিয়ানমারে ফিরে যাওয়ার প্রশ্নে রোহিঙ্গাদের মধ্যে ভীতি কাজ করছে। তবে আশা করা যায়, বাংলাদেশের অব্যাহত কূটনৈতিক প্রচেষ্টা ও আন্তর্জাতিক চাপের মুখে মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ শিগগিরই রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেওয়া শুরু করবে।
বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের শাসনামলের সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আওয়ামী লীগ মানুষ হত্যার রাজনীতি করে না, প্রতিহিংসার রাজনীতিতে বিশ্বাসীও নয়। সেটায় বিশ্বাস করলে এদেশে বিএনপির অস্তিত্ব থাকত না।
বুধবার জাতীয় সংসদ অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রীর জন্য নির্ধারিত প্রশ্নোত্তর পর্বে শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে এদিন সংসদে সরকারি ও বিরোধীদলের একাধিক সংসদ সদস্যের লিখিত ও সম্পূরক প্রশ্নের জবাব দেন প্রধানমন্ত্রী।
বিএনপির সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য রুমিন ফারহানার প্রশ্নের লিখিত জবাবে শেখ হাসিনা আরও বলেন, বিএনপি সরকারের সময় তাদের হাতে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা যে পরিমাণ হত্যা, নির্যাতন ও নিপীড়নের শিকার হয়েছি তা নজিরবিহীন। এদেশে জঙ্গি সৃষ্টি, অগ্নিসন্ত্রাস, বোমা হামলা, মানি লন্ডারিং, এতিমের টাকা আত্মসাৎসহ হেন অপকর্ম নেই যা খালেদা জিয়া, তার দুই ছেলে এবং তার দলের নেতারা করেননি।
এর আগে রুহিন ফারাহানা প্রশ্ন করার সময় বলেন, দেশে বর্তমানে মানুষ হত্যার বিচার থেকে মশা মারা পর্যন্ত সবক্ষেত্রেই প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনার প্রয়োজন হয়। এর লিখিত জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিনি (রুমিন) একটি অনাকাঙ্খিত, অসংসদীয় ও অবান্তর প্রশ্ন করেছেন। তিনি মানুষ হত্যা আর মশা মারাকে একই সমতলে নিয়ে এসেছেন। আমি সংসদ সদস্যের নেত্রী খালেদা জিয়ার মতো দুপুর ১২টা পর্যন্ত ঘুমিয়ে কাটালেই কি প্রশ্নকারী খুশি হতেন?
শেখ হাসিনা বলেন, রাষ্ট্র একটি যন্ত্রের মতো। এই যন্ত্রের বিভিন্ন কল-কব্জা যখন সমন্বিতভাবে কাজ করে, তখনই রাষ্ট্র ভালো থাকে। বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে কারণ রাষ্ট্রযন্ত্র ভালোভাবে কাজ করছে।
তিনি আরও বলেন, প্রতিষ্ঠানের অকার্যকর হওয়ার কথা উনি (রুমিন) বলছেন। অকার্যকর রাষ্ট্রের উদাহরণ তো বিএনপিই সৃষ্টি করেছিল। রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত আসত রাষ্ট্রযন্ত্রের সঙ্গে সম্পৃক্ত নয় এমন ব্যক্তির কাছ থেকে। প্রধানমন্ত্রী ঘুমিয়ে থাকতেন, সিদ্ধান্ত দিতেন তাঁর পুত্র হাওয়া ভবন থেকে। মন্ত্রী-সচিবরা হাওয়া ভবন থেকে নির্দেশের অপেক্ষায় প্রহর গুণতেন।
সংসদ নেতা বলেন, সংসদীয় সরকার ব্যবস্থায় প্রধানমন্ত্রী সরকার প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। যার অন্যতম কাজ ও দায়িত্ব হচ্ছে সব মন্ত্রণালয় ও বিভাগের কাজের সমন্বয় করা। মন্ত্রীদের কাজের তদারকি করা। জনগণ আমাকে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব দিয়েছেন তাদের কল্যাণ নিশ্চিত করার জন্য। আরাম-আয়েসের জন্য প্রধানমন্ত্রিত্ব গ্রহণ করিনি আমি।
জনবান্ধব পুলিশি ব্যবস্থা গড়তে কাজ করেছে সরকার: প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ পুলিশের দক্ষতা ও সক্ষমতা বৃদ্ধিতে নতুন প্রযুক্তি, প্রশিক্ষণ, জনবল বৃদ্ধিসহ বিভিন্ন কার্যক্রম বাস্তবায়ন করেছে সরকার, যার সুফল ইতোমধ্যে দেশের জনগণ পেতে শুরু করেছে। জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস ও মাদক দমনে বাংলাদেশ পুলিশের দক্ষতা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ব্যাপক প্রশংসিত হয়েছে। পুলিশ এক্ষেত্রে দক্ষতার সঙ্গে ভূমিকা রাখছে। জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশ পুলিশ গুরুতপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। বিশেষ করে এক্ষেত্রে নারী পুলিশ সবচেয়ে বেশি প্রশংসিত হচ্ছে।
কমিউনিটি ব্যাংকের কার্যক্রম শুরু হওয়ায় দেশে সরকারি-বেসরকারি মিলে মোট ব্যাংকের সংখ্যা দাঁড়ালো ৫৯টি।
কমিউনিটি ব্যাংকের চেয়ারম্যান বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী। ব্যাংকটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মশিহুল হক চৌধুরী।
যাত্রা শুরুর দিন থেকেই রাজধানীর গুলশান-১ নম্বরে হাতিরঝিলের পাশে পুলিশ প্লাজা কনকর্ডে করপোরেট শাখাসহ মতিঝিল, নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর, হবিগঞ্জ ও চট্টগ্রামে এ ব্যাংকের কার্যক্রম শুরু হয়।
ভিডিও কনফারেন্সে উপস্থিত ছিলেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, বাংলাদেশ পুলিশের ইন্সপেক্টর জেনারেল (আইজিপি) ও কমিউনিটি ব্যাংকের চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সচিব মোস্তফা কামাল উদ্দীন, ব্যাংকটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মশিউহুল হক চৌধুরীসহ পুলিশ ও ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।