নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের বাজার স্থিতিশীল রাখতে প্রতি সপ্তাহের রোববার একটি পর্যালোচনামূলক বৈঠক করবে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
এছাড়া রোজা সামনে রেখে সংশ্লিষ্ট পণ্যের সরবরাহের ‘নিবিড় পর্যবেক্ষণ’ চালাতে একটি মোবাইল অ্যাপ চালু করারও ঘোষণা দিয়েছেন বাণিজ্য সচিব জাফর উদ্দিন।
বিশ্ব ভোক্তা অধিকার দিবসের কর্মসূচি ঘোষণা করতে রোববার কারওয়ানবাজারে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব ঘোষণা দেন।
বাণিজ্য সচিব বলেন, “আমাদের লক্ষ্য একটাই, পবিত্র রমজান মাসে যেন মানুষ ভালো থাকতে পারে সেই লক্ষ্যে কাজ করা হচ্ছে। রোজার পরেও এ ধরনের কাজ অব্যাহত থাকবে।
“প্রতি রোববার সকাল সাড়ে ১০টায় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে আমার নেতৃত্বে (বাণিজ্য সচিব) ৭-৮ জনের একটি কমিটি বসবে। ভোক্তা অধিকার, টিসিবি, ক্যাবের প্রতিনিধিরা সেখানে থাকবেন। বিভিন্ন পণ্যের আমদানি পর্যায়ে কী মূল্য দাঁড়িয়েছে কিংবা উৎপাদন খরচ কত, পাইকারি পর্যায়ে দাম কত এবং খুচরা বাজারে কী পরিস্থিতি সেটা পর্যালোচনা করা হবে।
“একটি অ্যাপ তৈরি করার কাজ শুরু হয়েছে। শ্যামবাজার, খাতুনগঞ্জ, মৌলভীবাজারের পাইকারি পর্যায়ে পণ্যের দামের উঠানামা সেখানে দেখা যাবে।”
এবারের রোজা সামনে রেখে অন্য বছরের তুলনায় টিসিবির কাছে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যগুলোর ১০ গুণ মজুদ রয়েছে বলে জানান বাণিজ্য সচিব।
তিনি বলেন, “রোজা সামনে রেখে টিসিবির প্রস্তুতি সর্বকালের সবচেয়ে বেশি রয়েছে। গতবছরের তুলনায় অন্তত ১০ গুণ মজুদ করা হয়েছে। তার মানে এই নয় যে সব কাজ টিসিবি করবে। কোনো পণ্যের দাম যেন অসহনীয় পর্যায়ে না উঠে সেদিকে ব্যবসায়ীদেরকেও নজর দিতে হবে।
‘মুজিববর্ষের অঙ্গীকার, সুরক্ষিত ভোক্তা অধিকার’ স্লোগান নিয়ে এবারের বিশ্ব ভোক্তা অধিকার দিবসের কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে বলে অনুষ্ঠানে জানানো হয়।
অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বাবলু কুমার সাহা বলেন, বিশ্ব ভোক্তা অধিকার দিবস উপলক্ষে বিভিন্ন কর্মসূচি হাতে নিলেও করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে কর্মসূচিতে কাটছাঁট করা হয়েছে।
রোববার সকালে রাজধানীর মানিক মিয়া এভিনিউতে র্যালি করার কথা ছিল, সেটি বাতিল করা হয়েছে। কৃষিবিদ ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে আলোচনা অনুষ্ঠানও সংক্ষিপ্ত করা হয়েছে। এই আলোচনা সচিবালয়ে সংক্ষিপ্ত আকারে হবে।
এছাড়া সারা দেশে ট্রাক শো, ক্রোড়পত্র ও এসএমএস পাঠিয়ে ভোক্তার অধিকার বিষয়ে সবাইকে সচেতন করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
এদিকে ভোক্তাদের অভিযোগ শুনতে বিশ্ব ভোক্তা অধিকার দিবসে একটি হটলাইন চালুর ঘোষণা দেন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক। এছাড়া বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে বছরব্যাপী ইউনিয়ন পর্যায় থেকে শুরু করে বিভাগীয় পর্যায়ে এবং ঢাকায় কেন্দ্রে জনসচেতনতামূলক অনুষ্ঠান করবে ভোক্তা অধিকার।
অধিদপ্তরে লোকবল বাড়ছে
ভোক্তাদের অধিকার সুরক্ষায় কাজ চালিয়ে যাওয়া সরকারি সংস্থা জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের লোকবল বাড়ানো হচ্ছে বলে বাণিজ্য সচিব জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে ২৩০৫ জন লোকবল চাওয়া হয়েছিল। এই সংস্থার জন্য ২০৬ জন নতুন লোকবল নিয়োগ দেওয়ার সুপারিশ করেছে সংসদীয় কমিটি।
বর্তমানে ২৪০ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়ে চলছে অধিদপ্তর।