বাংলাদেশে ২০২২ সালের মানবাধিকার নিয়ে মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্টের প্রতিবেদনের বিষয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে রাজনৈতিক দলগুলো। অতীতের মতোই এ প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান ও সমর্থনের ঘেরাটোপে বন্দি।
প্রতিবেদনটি প্রত্যাখ্যান করে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ নেতারা বলছেন, গণতন্ত্র কোথাও ত্রুটিমুক্ত নয়। যারা অভিযোগ তুলেছে, সেই যুক্তরাষ্ট্রেও গণতন্ত্র ত্রুটিমুক্ত নয়। দেশটির উদ্দেশে তারা বলেন, অন্যের সমালোচনা করার আগে নিজের ঘরের চিত্রটাও বলুন। নিজ দেশের গণতন্ত্রকে আগে পারফেক্ট করুন।
তবে মাঠের বিরোধী দল বিএনপি নেতারা এ প্রতিবেদনকে সমর্থন জানিয়ে বলেছেন, বিগত সময়ে তারা যেসব তথ্য-উপাত্ত ও অভিযোগ করে এসেছেন এ প্রতিবেদনে সেটাই উঠে এসেছে। তবে বাস্তবে দেশের পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ।
সংসদের বিরোধী দল জাতীয় পার্টির মতে, নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন এ দেশে সব সময়ই ছিল। অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ এবং গ্রহণযোগ্য নির্বাচন বলতে যা বোঝায় তা এ দেশে কখনোই হয়নি। ২০১৮ সাল নয়, এর আগের নির্বাচন নিয়েও প্রশ্ন আছে। অপ্রিয় হলেও সত্য, মূলত যারা ক্ষমতায় থাকে, তারাই নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করে।
সোমবার মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্ট ২০২২ সালের বিশ্বের মানবাধিকারের বিষয়গুলো তাদের প্রতিবেদন তুলে ধরে। সেখানে বাংলাদেশ অংশে বলা হয়, ২০১৮ সালের নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হয়নি। ওই নির্বাচনে ব্যালট বাক্স ভর্তি, বিরোধী পোলিং এজেন্ট ও ভোটারদের ভয় দেখানোসহ নানা অনিয়ম হয়েছে। এ ছাড়া প্রতিবেদনে উঠে আসে ২০২২ সালে বিচারবহির্ভূত হত্যা, গুম, বিরোধী নেতাকর্মী গ্রেফতার, নির্যাতন অব্যাহত ছিল। তবে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড নাটকীয়ভাবে কমে যায়। এছাড়া নিরাপত্তা বাহিনী ব্যাপকভাবে ক্ষমতার অপব্যবহার ও দুর্নীতিতে জড়িয়েছে। কিন্তু এর তদন্ত ও বিচারে সরকার খুব কমই পদক্ষেপ নিয়েছে। মতপ্রকাশের স্বাধীনতা হরণ ও সাংবাদিক নির্যাতনসহ নানা বিষয় স্থান পায় ওই প্রতিবেদনে
অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে না: ড. এ বি মির্জ্জা আজিজ
সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অর্থ ও পরিকল্পনা বিষয়ক উপদেষ্টা এবং দেশের বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ড. এ বি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম বলেছেন, মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্টের মানবাধিকারবিষয়ক প্রতিবেদনটি দেশের অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক পরিস্থিতির ওপর খুব বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে না। এ ধরনের প্রতিবেদন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্ট থেকে প্রতি বছরই প্রকাশ করা হয়। তবে আমেরিকা অনেক বড় ও ক্ষমতাধর রাষ্ট্র। একটি বড় শক্তির পক্ষ থেকে এ ধরনের প্রতিবেদন প্রকাশিত হলে তা সংশ্লিষ্ট দেশের ইমেজ ধরে রাখার জন্য কিছুটা ক্ষতির কারণ হতে পারে। মঙ্গলবার রাতে সঙ্গে টেলিফোন আলাপচারিতায় তিনি এসব কথা বলেছেন।
উল্লেখ্য, সোমবার রাতে প্রকাশিত মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্টের মানবাধিকার বিষয়ক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের নিরাপত্তা বাহিনী ক্ষমতার অপব্যবহার ও দুর্নীতিতে জড়িয়েছে। বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড অব্যাহত রয়েছে, তবে নাটকীয়ভাবে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড কমেছে। মত প্রকাশের স্বাধীনতা হরণ করা হয়েছে ও সাংবাদিক নির্যাতন করা হচ্ছে।
ড. এ বি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম বলেন, এর আগে যুক্তরাষ্ট্র র্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। এর কোনো নেতিবাচক প্রভাব বাংলাদেশের অর্থনীতিতে পড়েনি। বিশেষ করে রপ্তানি আয় ও রেমিট্যান্স কমেনি। মানবাধিকার বিষয়ক প্রতিবেদনের কারণে অর্থনীতিতে তেমন কোনো নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বলে মনে হয় না। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশ থেকে পণ্য রপ্তানির সঙ্গে বেসরকারি খাতের উদ্যোক্তারা জড়িত। আমেরিকাতেও পণ্য কিনছে বেসরকারি খাতের উদ্যোক্তারা। ফলে এ ধরনের প্রতিবেদন বেসরকারি খাতের উপর এখনই কোনো নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে না। একই সঙ্গে রেমিট্যান্স পাঠানোর ক্ষেত্রেও এর নেতিবাচক প্রভাব আসবে না। তিনি বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এ ধরনের প্রতিবেদন প্রতি বছরই প্রকাশ করে। এতে সরকারের সার্বিক কার্যক্রমের স্বচ্ছতা প্রতিষ্ঠা ও মানবাধিকার রক্ষার ক্ষেত্রে এক ধরনের চাপ তৈরি হবে।
যুক্তরাষ্ট্রেও গণতন্ত্র ত্রুটিমুক্ত নয়: ওবায়দুল কাদের
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্টের প্রতিবেদন সম্পর্কে বলেছেন, অন্যের সমালোচনা করার আগে নিজেদের চেহারা দেখুন। পৃথিবীর কোন দেশে ত্রুটিমুক্ত গণতন্ত্র আছে? যারা (যুক্তরাষ্ট্র) বাংলাদেশ সম্পর্কে অভিযোগ করেছেন, তাদের দেশেও গণতন্ত্র ত্রুটিমুক্ত নয়। অন্যের বিরুদ্ধে অভিযোগ দেওয়ার আগে ঘরের খবর নিন।
মঙ্গলবার রাজধানীর বংশালে যুবলীগ ঢাকা মহানগর দক্ষিণের বংশাল ও কোতোয়ালি থানার ৫টি ওয়ার্ড ইউনিটের ত্রিবার্ষিক সম্মেলনে এসব কথা বলেন ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আজও তার পরাজয় মেনে নেননি। বিচারবহির্ভূত হত্যার কথা বলেন? আপনাদের দেশেও (যুক্তরাষ্ট্র) গান অ্যাটাক হয়। অন্যের সমালোচনা করার আগে নিজেদের চেহারা দেখুন। প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার দেশের বিভিন্ন জাতীয় দৈনিক, মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্টের মানবাধিকার প্রতিবেদনটি প্রকাশ করে।
সেতুমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের নির্বাচনব্যবস্থা ক্রমান্বয়ে ত্রুটিমুক্ত করতে শেখ হাসিনার সরকার কাজ করছে। গণতন্ত্র ও নির্বাচনিব্যবস্থাকে প্রাতিষ্ঠানিকীকরণে আইনগতভাবে নির্বাচন কমিশন গঠন করা হয়েছে। বিএনপি আন্দোলনে ব্যর্থ হয়ে বিদেশিদের কাছে নালিশ করছে এবং লবিস্ট নিয়োগ করেছে বলে অভিযোগ করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিএনপি যতই নালিশ করুক, বিদেশিদের কথায় বাংলাদেশের মানুষ ভোট দেবে না।
যুক্তরাষ্ট্রের মানবাধিকার প্রতিবেদন ত্রুটিপূর্ণ : যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের মানবাধিকার প্রতিবেদন নিয়ে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম তার প্রতিক্রিয়ায় বলেন, মানবাধিকার রিপোর্ট তৈরির আগে আÍপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দেওয়ার কথা থাকলেও তারা (যুক্তরাষ্ট্র) সেটি করেনি। এটি ত্রুটিপূর্ণ প্রতিবেদন। মঙ্গলবার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, ওপেন সোর্স থেকে এসব ইনফরমেশন (তথ্য) নেওয়া হয়েছে। যার মধ্যে একটি বেসরকারি সংস্থা অধিকার। যেই সংস্থাটির অতীতে রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা ছিল। যেসব সংগঠন অনিবন্ধিত, সেসব সংস্থার তথ্য ব্যবহার না করতে বলা হবে। তাছাড়া যেসব সংগঠন নিবন্ধিত না, সেসব সংগঠনকে আমলে নিয়ে কাজ করা বেআইনি, এটি নর্মসের (স্বাভাবিক বা ভদ্র আচরণ) মধ্যে পড়ে না। এসব থেকে দূরে থাকতে যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্য দেশগুলোকে অনুরোধ করব।
শাহরিয়ার আলম বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিবেদনে ২০২১ ও ২০২২ তথ্য তুলে ধরা হয়নি। সামনে দ্বিপাক্ষিক আলোচনায় এ প্রতিবেদনটির ত্রুটি তুলে ধরা হবে। যেন ২০২৪ প্রতিবেদনে বিষয়গুলো আর না থাকে।
প্রতিবেদনে ঢালাওভাবে মন্তব্য করা হয়েছে প্রধানমন্ত্রীর কাছে ক্ষমতা কেন্দ্রীভূত। এ অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে প্রতিমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ সংসদীয় গণতন্ত্র বিদ্যমান। এ প্রতিবেদনে দেশে গুমের সংখ্যায় ভুল রয়েছে। তবে আমাদের কিছু প্রশংসনীয় উদ্যোগের কথা তুলে ধরা হয়েছে।
আরাভ খান প্রসঙ্গে তিনি বলেন, রাজনৈতিক আশ্রয়ে না থাকলে বাংলাদেশের কোনো আসামি সুরক্ষিত থাকতে পারে না। দুবাইয়ের প্রশাসনের সঙ্গে এ বিষয়ে আলোচনা হচ্ছে।
সত্য উঠে এসেছে বাস্তবতা আরও ভয়াবহ: ড. মোশাররফ
বাংলাদেশের মানবাধিকার নিয়ে মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্টের প্রতিবেদনে সত্য উঠে এসেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন। তিনি বলেন, বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলো এতদিন যেসব অভিযোগ করে আসছে তা সত্য প্রমাণিত হয়েছে। প্রতিবেদনে যা এসেছে তা বস্তুনিষ্ঠ ও সত্য ঘটনা। তবে যা এসেছে বাস্তবতা তার চেয়ে আরও ভয়াবহ। বাংলাদেশের মানবাধিকার নিয়ে মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্টের প্রতিবেদনের বিষয়ে মঙ্গলবার বিকালে দেওয়া এক প্রতিক্রিয়ায় তিনি এসব কথা বলেন।
খন্দকার মোশাররফ বলেন, গত নির্বাচন যে অবাধ ও সুষ্ঠু হয়নি, এ নিয়ে দেশের ভেতরে ও বাইরে কারও সন্দেহ নেই। ফলে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের প্রতিবেদনে বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে সত্য কথাই উঠে এসেছে। আগামী নির্বাচন ভালো হওয়ার পরিবেশ এখনো দেখা যাচ্ছে না। এ ধরনের পরিস্থিতির কারণে বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে আন্তর্জাতিক মহল উদ্বিগ্ন। সেজন্য গত নির্বাচন নিয়ে এসব কথা এখন জোরালোভাবে সামনে আসছে। এর আগে ২০১৪ সালেও কোনো নির্বাচনই হয়নি। এই সরকার সম্পূর্ণ গায়ের জোরে ক্ষমতায় আছে।
বিএনপির এই নেতা বলেন, দেশে গণতন্ত্র নেই। গুম-খুন চলছে, ভোটের অধিকার নেই, দুর্নীতি আর লুটপাট চলছে। অর্থনীতিসহ সবকিছু ধ্বংস করে দিয়েছে। এখন মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্ট প্রতিবেদন দিয়েছে। কিন্তু এগুলো দেশের সাধারণ মানুষ সবাই-ই জানেন।
খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, বর্তমান সরকার এই প্রতিবেদনকে তোয়াক্কা করে না, করবেও না। তারা বলে দেবে, এর কোনোটাই সঠিক নয়। কিন্তু জনগণ বুঝে গেছে, সরকার মিথ্যাচার করছে। তারা সবই গায়ের জোরে করে যাচ্ছে। তাদের গুন্ডাবাহিনী আছে, পুলিশ বাহিনী আছে। সবকিছুই তাদের হাতে কিন্তু সামনে এর পরিণতি আরও ভয়ংকর হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন সব সময়ই ছিল: মুজিবুল হক চুন্নু
জাতীয় পার্টির মহাসচিব, সাবেক মন্ত্রী মো. মুজিবুল হক চুন্নু এমপি বলেছেন, নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন এদেশে সব সময়ই ছিল। দলীয় সরকারের অধীনেও যেসব নির্বাচন হয়েছে, তখনও এসব নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। একইভাবে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত নির্বাচন নিয়েও প্রশ্ন ছিল। অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ এবং গ্রহণযোগ্য নির্বাচন বলতে যা বোঝায়, তা এদেশে কখনোই হয়নি। তিনি আরও বলেন, ২০১৮ সালের নির্বাচনে সব দল অংশগ্রহণ করেছিল। এই নির্বাচন নিয়ে যেমন প্রশ্ন আছে, তেমনই এর আগের নির্বাচনগুলো নিয়েও প্রশ্ন আছে। অপ্রিয় হলেও সত্য-মূলত যারা ক্ষমতায় থাকে, তারাই নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করে।
২০২২ সালে বাংলাদেশে মানবাধিকার নিয়ে মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্টের দেওয়া প্রতিবেদন সম্পর্কে প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে মো. মুজিবুল হক চুন্নু মঙ্গলবার এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রেও এ ধরনের ঘটনা প্রতিনিয়ত ঘটছে। আমাদের দেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি যে খুব খারাপ, এটা শতভাগ ঠিক না। কোথাও কোথাও হয়তো মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটছে। আমরা বরাবরই খুন-গুম ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের বিপক্ষে সোচ্চার ছিলম, এখনো সোচ্চার। আশার কথা হচ্ছে, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড এখন নেই বললেই চলে।
জাতীয় পার্টির মহাসচিব বলেন, বিরোধী মত দমনের সংস্কৃতি এখনো বহাল আছে, এটি সত্যিই দুঃখজন। তবে এটাও সত্যি যে বিরোধীদলকে দমন-পীড়ন-নির্যাতন, এটা বিএনপিই ১৯৯১ সালে ক্ষমতায় এসে প্রথম শুরু করেছে। যার প্রথম শিকার জাতীয় পার্টি। জাতীয় পার্টির প্রয়াত চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাসহ দলটির বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীদের ওপর সবচেয়ে বেশি দমনপীড়ন ও নির্যাতন হয়েছে। এই সত্যটা অস্বীকার করলে চলবে না।
মতপ্রকাশের স্বাধীনতা হরণ এবং সাংবাদিক নির্যাতন সম্পর্কে মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্টের দেওয়া প্রতিবেদনের বিষয়ে মো. মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, এটা ঠিক ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনের কারণে গণমাধ্যমকর্মীরা স্বাধীনভাবে লিখতে পারছে না। আমরা এই আইনটি সংশোধনের জন্য এর আগেও বলেছি। এখনো মনে করি, আইনটি হয় প্রত্যাহার, না হয় সংশোধন করা উচিত। যাতে মিডিয়া ভয় না পেয়ে নির্বিঘ্নে সত্য প্রকাশ করতে পারে। তিনি বলেন, সাংবাদিকদের ওপর নানা সময় নির্যাতন হচ্ছে। এই সেদিন আদালত চত্বরে গণমাধ্যমকর্মীদের পুলিশ বেধড়ক পিটিয়েছে, যা সত্যিই দুঃখজনক ও নিন্দনীয়। সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডের রহস্য আজও উদ্ঘাটিত হয়নি। এসব ঘটনা সত্যিই একটি গণতান্ত্রিক সমাজ এবং রাষ্ট্রের জন্য দুঃখজনক।