প্রথম মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে উত্তর কোরিয়ায় পা রাখলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প।
রোববার দুই কোরিয়ার সীমান্তবর্তী ডিমিলিটারাইড জোন (ডিএমজেড) বা অসামরিকীকৃত অঞ্চলে উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং-উনের সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে সীমান্ত পেরিয়ে ট্রাম্প উত্তর কোরিয়ায় পা রাখেন।
বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রোববারই দেওয়া ঘোষণা অনুযায়ী উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং-উনের সঙ্গে দেখা করতে দুই কোরিয়ার সীমান্তবর্তী ডিমিলিটারাইড জোন (ডিএমজেড) বা অসামরিকীকৃত অঞ্চলের পানমুনজম গ্রামে যান ট্রাম্প। সেখানেই কিমের সঙ্গে দেখা হয়।
দেখা হওয়ার পর কিম জং-উনের সঙ্গে করমর্দন করেন ট্রাম্প। এ সময় কিম বলেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে এই স্থানে তার দেখা হবে সেটা তিনি কখনোই ভাবেননি।
পরে প্রথম মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে ডোনাল্ড ট্রাম্প দুই কোরিয়াকে বিভক্ত করা সীমানা পেরিয়ে উত্তর কোরিয়ায় পা রাখেন। এরপর ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে সীমানা পার হয়ে দক্ষিণ কোরিয়ায় ঢোকেন কিম জং-উন এবং দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট মুন জায়ে-ইনের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।
পরে কিম জং-উনকে নিয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, ‘এটা একটা বিশেষ মুহূর্ত। এই যে আমাদের সাক্ষাৎ হলো– এটা একটা ঐতিহাসিক মুহূর্ত। সীমান্ত ওই লাইনটি পেরিয়ে সেখানে পা রাখা আমার জন্য ছিল অনেক সম্মানের।’
তিনি বলেন, ‘আমি চেয়ারম্যান কিমকে এই কারণে ধন্যবাদ দিতে চাই যে, যখন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আমি বার্তাটি দিলাম তখন তিনি যদি সাড়া না দিতেন, তাহলে সংবাদ মাধ্যম আমাকে অত্যন্ত বাজেভাবে উপস্থাপন করতো। কাজেই আপনি আমাদের দু’জনেরই সম্মান রক্ষা করেছেন, আর এটা খুব প্রশংসনীয়।’
ট্রাম্প বলেন, ‘আমরা একটি দারুণ সম্পর্ক গড়ে তুলেছি। আমি সত্যিই মনে করি যে, আপনি যদি আড়াই বছর পেছনে ফিরে তাকান, যখন আমি প্রেসিডেন্ট হইনি, তখন পরিস্থিতি খুবই খারাপ ছিল; দক্ষিণ কোরিয়া, উত্তর কোরিয়া এবং পুরো বিশ্বের জন্যই পরিস্থিতি ছিল অত্যন্ত বিপজ্জনক।”
উত্তর কোরিয়ার পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে স্থগিত হয়ে যাওয়া আলোচনার বিষয়ে কথা বলতে বর্তমানে দক্ষিণ কোরিয়া সফরে আছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এই সফরের মাঝেই এক টুইটে নজিরবিহীনভাবে তার সফরসঙ্গী হতে কিম জং-উনকে আমন্ত্রণ জানান ট্রাম্প। এরপর রোববার ট্রাম্প জানান, দুই কোরিয়ার অসামরিকৃত অঞ্চলে (ডিএমজেডে) উত্তর কোরিয়ার কিম জং-উনের সঙ্গে দেখা করবেন তিনি। এই ঘোষণার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে ডিএমজেডে দেখা হলো দুই নেতার। এ নিয়ে তৃতীয়বারের মতো কিম জং-উনের সঙ্গে দেখা হলো ট্রাম্পের।
এর আগে গত বছরের জুনে প্রথমবারের মতো ডোনাল্ড ট্রাম্প ও কিম জং-উনের মধ্যে বৈঠক হয়। ঐতিহাসিক ওই বৈঠকে যৌথভাবে কোরিয়া উপদ্বীপকে পারমাণবিক অস্ত্রমুক্ত করার ব্যাপারে একমত হন তারা। বৈঠক শেষে দুই দেশের মধ্যে একটি সমঝোতা চুক্তি হয়।
তবে নিরস্ত্রীকরণের রূপরেখা সুনির্দিষ্ট না হওয়ায় দু’দেশের মধ্যে দর কষাকষি চলছিল। এরই ধারাবাহিকতায় গত ২৮ ফেব্রুয়ারি ভিয়েতনামের হ্যানয়ে দ্বিতীয়বারের মতো বৈঠকে বসেন ট্রাম্প ও কিম। তবে বহুল আলোচিত ওই বৈঠক কোনো চুক্তি ছাড়াই শেষ হয়।