করোনাভাইরাসের সঙ্কটে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারপিছু প্রধানমন্ত্রীর ঈদ উপহারের ২৫০০ টাকা কার কাছে যাচ্ছে তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
শনিবার সকালে এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, “এই যে আড়াই হাজার টাকা প্রধানমন্ত্রী দিয়েছেন ৫০ লক্ষ পরিবারকে, সেখানে দেখা গেছে- ২০০ পরিবারের ঠিকানা হচ্ছে একটা বাড়িতে। সেই বাড়ির মালিক কী করেন? তিনি সরকার চাকরি করেন, তার ছেলে বিদেশে পড়ালেখা করে, তার পরিবারের সবাই ওই তালিকার মধ্যে আছে। এ থেকে আপনারা তো বুঝতে পারছেন সরকার কাকে সাহায্য করছে। এই ৫০ লক্ষ পরিবারকে টাকা দেয়ার কথা বলেছেন- এটা কার কাছে গেছে।
“কিছু দুর্নীতিবাজ চক্র- এর মধ্যে সরকারি কর্মকর্তারাও আছেন। এই আড়াই হাজার টাকার মধ্যে ৫০০ টাকা করে তারা কেটে নিয়েছেন কোনো কোনো জায়গায়, আবার কোনো কোনো জায়গায় ৫০ জন, ১০০ জন, ২০০ জনের কাছে যে টাকাটি যাবে একটি মাত্র মোবাইল নম্বরের মাধ্যমে।বিরাট এক দুর্নীতির চক্রের মধ্যে জনগণের টাকা, জনগণের গম, জনগণের চাল- দিয়ে দিচ্ছে দুর্ণীতিবাজদের কাছে।”
করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত ৫০ লাখ পরিবারকে প্রধানমন্ত্রীর ঈদ উপহার হিসেবে ২৫০০ টাকা করে দিতে প্রথমদিকে যে তালিকা হয়েছিল তার অসঙ্গতি নিয়ে সমালোচনা শুরু হলে নতুন তালিকা করার নির্দেশ দিয়েছিল দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়।
এরপর নতুন তালিকা ধরে যাচাই-বাছাইয়ের পর পরিবারগুলোর কাছে চারটি মোবাইল আর্থিক সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ঈদ উপহারের টাকা পৌঁছানো শুরু হয়, যা ঈদের দিনও চলবে।
ঈদ উপহার বিতরণ নিয়ে অনিয়মের সমালোচনা করে রিজভী বলেন, “আওয়ামী লীগের নেতা, আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান, আওয়ামী লীগের মেম্বারদের পেট যেন ফুলতে থাকে এই দুঃখের মধ্যে, এই দারিদ্র্যের মধ্যে, এই করোনাভাইরাসের মধ্যে, এই দুর্ভিক্ষের মধ্যে, এই কাজটি সরকার করছেন।”
নানা প্রতিকুলতার মধ্যে বিএনপি নিজেদের সামর্থ্যে অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, “বিএনপির নেতাকর্মীদের একে তো মামলার ভয়, গ্রেপ্তারের ভয়, গুম হওয়ার ভয়, তারপরেও নিজের পকেটের সার্মথ্য নিয়ে তারা মানু্ষের পাশে দাঁড়াচ্ছে। নিজের পকেটের টাকা দিয়ে আমাদের নেতাকর্মীরা ত্রাণ দিচ্ছে।”
তিনি বলেন, “আমরা জনগণের পক্ষে, মানুষের পক্ষে, সুষ্ঠু ভোটের পক্ষে। তাই আমাদের নীতি-আদর্শ এক ধরনের। আর যারা বিনা ভোটে রাষ্ট্র ক্ষমতা দখল করে আছেন তাদের নীতি আদর্শ অন্যরকম। ফ্লাইওভার দেখান? মানুষ করোনাভাইরাসের টেস্ট করাতে পারছে না। একজন রোগীর জ্বর হয়েছে একটি বেসরকারি হাসপাতালে গেছে, বেসরকারি হাসপাতাল বলেছে, আমরা ভর্তি করতে পারব না। আগে তার করোনা আছে কিনা দেখান, কারণ বেসরকারি হাসপাতালে করোনা টেস্ট হয় না।
“তারপরে এখানে সেখানে দৌড়াতে দৌড়াতে তারপরে হঠাৎ সেই রোগীটি মারা গেছেন। এরপরে তাকে পরীক্ষা করে দেখা গেলো তার করোনা হয় নাই। কী স্বাস্থ্য ব্যবস্থা? একে ধ্বংস করে দিয়েছে এই সরকার। আমরা যে কীভাবে বেঁচে আছি, আমরা কীভাবে যে জীবন-যাপন করছি, এটাই হচ্ছে বড় প্রশ্ন।”
উত্তরার দক্ষিণখানে যুবদল উত্তরের সভাপতি এসএম জাহাঙ্গীরের উদ্যোগে দরিদ্রদের মধ্যে ঈদ সামগ্রী বিতরণের এই অনুষ্ঠান হয়।