প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বৃহস্পতিবার সকালে চারদিনের সরকারি সফরে ভারতের নয়াদিল্লি যাচ্ছেন। তার এই সফরে দুই দেশের মধ্যে ১৮টি চুক্তি, সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) সইয়ের প্রস্তুতি নিয়েছে ঢাকা ও নয়াদিল্লির কর্মকর্তারা। যোগাযোগ, নৌ-পরিবহন, শিল্প, সংস্কৃতি, কারিগরি সহযোগিতা, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ, পর্যটন, তথ্য ও প্রযুক্তিসহ বিভিন্ন খাতে এসব চুক্তি ও এমওইউ সই হবে। পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রীর সফরে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন ও তিস্তাসহ অভিন্ন নদীর পানি বণ্টন বিষয়ে আলোচনা হতে পারে।
কূটনৈতিক সূত্র জানায়, বৃহস্পতিবার সকালে বাংলাদেশ বিমানের একটি বিশেষ ফ্লাইটে নয়াদিল্লি যাবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এদিন দুপুরে ওয়ার্ল্ড ইকোনোমিক ফোরাম (ডাব্লিউইএফ)-এর ভারতীয় শাখা ইন্ডিয়ান ইকোনোমিক সামিট ২০১৯-এর ডায়ালগে অংশ নেবেন। পরদিন শুক্রবার বিকেলে সামিটের সমাপনী পর্বেও যোগ দেবেন। এই সামিটে প্রধানমন্ত্রী বিশেষ করে নিম্ন আয়ের দেশ থেকে মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীতসহ বাংলাদেশের সাম্প্রতিক সময়ের অগ্রগতি ও সমৃদ্ধি তুলে ধরবেন।
এর পাশাপাশি তিনি বাংলাদেশের বর্তমান জিডিপি প্রবৃদ্ধি এবং বিগত কয়েক বছরে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে তার সরকারের ব্যাপক সাফল্যের কথাও বলবেন। তিনি ভারতের নেতৃস্থানীয় বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে বৈঠক করবেন এবং বাংলাদেশে তাদের আরো বিনিয়োগেরও আহ্বান জানাবেন। এছাড়া ভারতের তিনটি চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি ও বাংলাদেশের ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দের সমন্বয়ে গঠিত ‘ইন্ডিয়া বাংলাদেশ বিজনেস ফোরাম’ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন।
কর্মসূচি অনুযায়ী ৫ অক্টোবর সকালে নয়াদিল্লির হায়দারাবাদ হাউজে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মধ্যে একান্ত ও দ্বিপাক্ষিক বৈঠক হবে। বৈঠকে রোহিঙ্গা সংকটের সমাধান ও তিস্তাসহ সকল অভিন্ন নদীর পানি বণ্টন নিয়ে দুই প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে বিস্তারিত আলোচনা হতে পারে। পরে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর সৌজন্যে আয়োজিত ভারতের প্রধানমন্ত্রীর মধ্যাহ্নভোজে যোগ দেবেন শেখ হাসিনা। বিকেলে শেখ হাসিনা ভারতের রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের সঙ্গে সাক্ষাত করবেন। এদিকে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এস জয়শঙ্কর ওইদিন সকালে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাত করবেন।
এছাড়া সফররত সিঙ্গাপুরের ডেপুটি প্রধানমন্ত্রী হেং সুয়ে কেট শুক্রবার বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাত করবেন। রবিবার দুপুরে ভারতের জাতীয় কংগ্রেসের সভাপতি সোনিয়া গান্ধীর সঙ্গে বৈঠক করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এছাড়া জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবন ও কর্ম-ভিত্তিক ফিচার ফিল্ম তৈরির বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনার জন্য ভারতের প্রখ্যাত চিত্র পরিচালক শ্যাম বেনেগাল রবিবার প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাত করবেন। বাংলাদেশ-ভারত যৌথ প্রযোজিত বঙ্গবন্ধুর উপর নির্মিত চলচ্চিত্র মুজিব বর্ষ ২০২০-২১ শেষ হওয়ার আগে মুক্তি পাবে। ভারত সফর শেষে প্রধানমন্ত্রী রবিবার বিকেলে দেশের উদ্দেশ্যে নয়াদিল্লি ত্যাগ করবেন।