করোনাভাইরাসে ছড়িয়ে পড়ায় ইতালি থেকে ফিরে আসার পর কোয়ারেন্টাইনে থাককে আপত্তি জানানো প্রবাসীদের কটাক্ষ করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। রোববার রাজধানীর ইস্কাটনে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ (বিআইআইএসএস) আয়োজিত ‘বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনী : একটি পর্যালোচনা’ শিরোনামে অনুষ্ঠিত আলোচনা অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় এ সমালোচনা করেন তিনি।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘যে সব দেশে করোনাভাইরাস অস্বাভাবিক মাত্রায় ছড়িয়েছে, সেই সব দেশ থেকে যিনি আসবেন তাকে অবশ্যই কোয়ারেন্টাইনে যেতে হবে, এটাই সরকারি সিদ্ধান্ত। কিন্তু আমাদের প্রবাসীরা যখন আসেন, তারা এই ব্যবস্থায় খুবই অসন্তুষ্ট হন। দেশে এলেই সবাই নবাবজাদা হয়ে যান। ফাইভ স্টার হোটেল না হলে তারা অপছন্দ করেন। কিন্তু বুঝতে হবে এটাতো একটা বিশেষ অবস্থা।’
ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘গতকাল (শনিবার) যারা দেশে এসেছেন, তারা কোয়ারেন্টাইনে যেতে চাননি। দেশে আসছেন সুতরাং সাথে সাথে বাড়িতে যাবেন, এই আগ্রহ তাদের ছিল। তারপরেও জনস্বাস্থ্যের বৃহত্তর স্বার্থে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে তাদের কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়, যেখানে আগেও ৩১২ জনকে রাখা হয়েছিল। কিন্তু তারা এসে সে জায়গা পছন্দ করেন নাই। যেমন- বাংলাদেশে ফ্ল্যাট বাথরুম ব্যবহার করা হয়, তারা কমোড বাথরুম ব্যবহার করেন। সুতরাং তাদের অসুবিধা হয়েছে। আমরা পর্যটন করপোরেশন থেকে খাবার দিয়েছি, তারা মনে করেন, ফাইভ স্টার থেকে খাবার দেওয়া উচিত। আমরা সেটা দিতে পারিনি। সেজন্য তারা অসন্তুষ্ট হয়েছেন। তাদের বিভিন্ন রকম অভিযোগ ছিল। পাঁচ ফুট দূরে দূরে বেড রাখা হয়েছে, তারা এগুলো পছন্দ করেন নাই। তারা চাচ্ছিলেন ভালো বেড-টেড।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, যে সব দেশে করোনাভাইরাস বেশি, সে সব দেশ থেকে ফ্লাইট বন্ধ করা হয়েছে দেশের মানুষকে রক্ষা করার জন্য। যাতে বহিরাগতরা এসে ভাইরাস না ছড়ায়। এর আগে আমরা ভিডিও বার্তায় প্রবাসীদের কাছে আপিল করেছিলাম যে, আপনারা যে যেখানে আছেন, আল্লাহর ওয়াস্তে সেখানেই কয়েক দিন থাকেন। কিন্তু তারা এটা শোনেন নাই। সেজন্য বাধ্য হয়ে বিভিন্ন দেশের ফ্লাইট বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধের বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, স্কুল-কলেজ হিড়িকের মধ্যে বন্ধ করলে তো আতঙ্ক সৃষ্টি হবে। আপনি দেখেন, করোনাভাইরাসে ১ থেকে ৪০ বছর পর্যন্ত মৃত্যুর সংখ্যা প্রায় জিরো। দেশে একজন ছাত্র-ছাত্রীও করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়নি। আসলে দেশে করোনা ইমপোর্টেড। যে কয়েকজন করোনা ভাইরাস পজিটিভ হয়েছেন তারা বিদেশ থেকে এসেছেন। সুতরাং আমাদের বাকি ছেলে-মেয়েরা তো অসুস্থ না। অসুস্থ হলে দেখা যেত। বরং স্কুলে থাকলে কীভাবে হাত ধুতে হয়, কীভাবে পরিষ্কার থাকতে হয়, এসব শিখবে। করোনা প্রতিরোধের রীতি-নীতি শিখবে। বাড়িতে গেলে ঘুমাবে। সেজন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা রাখা হয়েছে। সরকার এ ব্যাপারে অত্যন্ত সংবেদনশীল, খুবই যত্নশীল, যদি প্রয়োজন হয় তাহলে স্কুল-কলেজ বন্ধ করা হবে।