জাতীয় প্রবৃদ্ধির সুবিধা জনগণ নয়, হাতে গোনা কিছু লোক পাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান।
বৃহস্পতিবার দুপুরে জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দল আয়োজিত এক দোয়ার অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, “পত্রিকায় বড় বড় হেডিং হচ্ছে যে, বিশ্বের যে ক’টা দেশের প্রবৃদ্ধি বেশি হবে তার প্রধান তিনটি দেশের একটি বাংলাদেশ। আমরা খুশি হই- প্রবৃদ্ধি ভালো, অবশ্যই ভালো। কিন্তু সেই প্রবৃদ্ধি কার জন্য, সেই প্রবৃদ্ধিতে উপকৃত কে হচ্ছে- সেটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
“আমরা যখন দেখি হাতে গোনা মাত্র কিছু লোক বাংলাদেশের এই প্রবৃদ্ধির দ্বারা উপকৃত তখন আমরা লজ্জিত হই। সেই প্রবৃদ্ধি জনগণের প্রবৃদ্ধি না। আমরা জনগণের প্রবৃদ্ধি চাই। আমরা চাই এমন প্রবৃদ্ধি হোক, যে প্রবৃদ্ধির ফসল জনগণ ভোগ করবে, যে প্রবৃদ্ধির ফলে জনগণের সুখ এবং শান্তি নিশ্চিত হবে।”
নজরুল ইসলাম খান বলেন, “যে প্রবৃদ্ধি আমার নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদির মূল্য বাড়ায়, যে প্রবৃদ্ধির অর্থ সম্রাট-পাপিয়ারা লুট করে নিয়ে যায়, যে প্রবৃদ্ধির অর্থ সুইস ব্যাংকে জমা হয়, যে প্রবৃদ্ধির অর্থ দিয়ে কানাডায় বেগম পাড়া হয়, মালয়েশিয়া-থাইল্যান্ডে সেকেন্ড হোম হয় ওই প্রবৃদ্ধি জনগণের কাম্য নয়।”
সরকারের ঘোষিত জাতীয় প্রবৃদ্ধি নিয়ে প্রশ্ন তুলে তিনি বলেন, “এশিয়ান ডেভলপমেন্ট ব্যাংক এশিয়ার ৩০টি দেশের মানুষ কে কতটা শান্তিতে আছে, কে কতটা সুখে আছে তারও একটা গবেষণা জরিপ করেছে। সেই জরিপে বাংলাদেশের অবস্থান ৩০ এর মধ্যে ২৬। অর্থাৎ আমাদের চেয়ে কম সুখী লোক এই ৩০টি দেশের মধ্যে মাত্র চারটা দেশে। তাহলে যে প্রবৃদ্ধি আমাকে সুখ দেয় না, যে প্রবৃদ্ধি আমাকে শান্তি দেয় না, সেই প্রবৃদ্ধি তো আমার প্রবৃদ্ধি না।”
তিনি আরও বলেন, “সারা বিশ্ব করোনায় আক্রান্ত। আর বাংলাদেশ করোনার পাশাপাশি দুর্নীতি-অনাচার, দলীয়করণ, নারী নির্যাতন, শিশু নির্যাতন এবং জনগণের সব মৌলিক অধিকার হরণের যে পাপ, সেই পাপের শিকার হয়েছে। সারা দেশটাকে আজকের এই অবস্থায় পৌঁছিয়েছে।
“তাদের বিরুদ্ধে লড়াই করার যিনি প্রধান সেনাপতি, আমাদের দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মিথ্যা অভিযোগে অন্যায়ভাবে কারারুদ্ধ করে রাখা হয়েছে। এই আন্দোলনকে যারা বেগবান করবে দেশের সেই তরুণ ও যুব শ্রেণির যিনি চেতনার প্রতিভূ আমাদের নেতা ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সাহেবকেও মিথ্যা মামলায় দণ্ড দেওয়া হয়েছে, তিনি অসুস্থ অবস্থায় দেশের বাইরে।”
এই অবস্থার উত্তরণ ঘটাতে ‘গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে’ বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের আরও শক্তিশালী ও ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন দলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী রোগমুক্তি কামনায় নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের নিচ তলায় এই দোয়া মাহফিল হয়।
বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল, সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরফত আলী সপু, স্বেচ্ছাসেবক দলের গোলাম সারোয়ার দোয়ায় অংশ নেন।