ফেনীর মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফি হত্যা মামলাটি প্রয়োজনে দ্রুত বিচার আইনে পরিচালিত হবে বলে জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। তিনি বলেন, এ রকম মামলা যখনই হবে, তখনই ফাস্ট ট্র্যাক করা হবে। রাফি হত্যা মামলাটিকে ফাস্ট ট্র্যাক করার জন্য প্রসিকিউশনকে নির্দেশ দেওয়া হবে। প্রয়োজন হলে মামলাটি দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তর করা হবে।
বৃহস্পতিবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সড়ক পরিবহন আইন বাস্তবায়নের সুপারিশ-সংক্রান্ত কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন কমিটির প্রধান ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং রেলপথ মন্ত্রী মো. নূরুল ইসলাম সুজন। বৈঠকে ‘সড়ক পরিবহন আইন, ২০১৮’ এর বিভিন্ন ধারা সংশোধন ও সংযোজন নিয়ে আলোচনা হয়।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, রাফির হত্যাকারীদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া হবে। পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) মামলাটি তদন্ত করছে। দ্রুত অভিযোগপত্র দেওয়া হবে। এ ঘটনায় যথাযথ ব্যবস্থা না নেওয়ায় এবং অপরাধে সহযোগিতার অভিযোগে প্রত্যাহার হওয়া সোনাগাজীর ওসিসহ যারাই জড়িত রয়েছে, তাদের প্রত্যেককেই আইনের আওতায় আনা হবে। এ ঘটনায় জড়িত কেউ বিন্দুমাত্র ছাড় পাবে না।
তিনি আরও বলেন, মালিক-শ্রমিকদের এ আইনের বিভিন্ন ধারা বাতিল-সংশোধনের দাবি নিয়ে সরকার শিগগিরই তাদের সঙ্গে বৈঠকে বসবে। গত বছরের ৮ অক্টোবর এর গেজেট জারি করা হয়। ছয় মাস পেরিয়ে গেলেও আইনটি বাস্তবায়ন হয়নি। মালিক-শ্রমিকদের দাবির মধ্যে রয়েছে সড়ক পরিবহন আইনের সব ধারা জামিনযোগ্য করা, সড়ক দুর্ঘটনায় শ্রমিকের অর্থদণ্ড পাঁচ লাখ টাকার বিধান বাতিল করা ও ড্রাইভিং লাইসেন্স পাওয়ার শিক্ষাগত যোগ্যতা পঞ্চম শ্রেণি করা।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, সড়ক পরিবহন আইন বাস্তবায়নে তিনি, আইনমন্ত্রী ও রেলপথ মন্ত্রীকে নিয়ে তিন সদস্যের কমিটি করা হয়েছিল। কমিটির বৈঠকে পরিবহন মালিক-শ্রমিকদের আপত্তির ধারাগুলো নিয়ে আলোচনা হয়েছে। তাদের দাবিগুলো পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হচ্ছে। যৌক্তিকতা আছে কি-না সেগুলো পর্যালোচনা করা হচ্ছে। শিগগির দিন ধার্য করে মালিক-শ্রমিকদের সঙ্গে কমিটি বৈঠক করবে। তাদের মতামত শুনে কমিটি মত প্রকাশ করবে।
তিনি আরও বলেন, সড়ক আইনে যদি কোনো কিছু যোগ-বিয়োগ করতে হয়, সেটাও বিবেচনা করা হবে। সেজন্য আইনমন্ত্রী মতামত দেবেন।
সংসদে আইন পাসের পর এভাবে বসার কোনো সুযোগ আছে কি-না- প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আইন আইনের গতিতেই চলছে। এটা গেজেট হয়ে যেখানে চলে যাওয়ার চলে যাচ্ছে। তবে আইন বাস্তবায়নে কোনো বাধা নেই। শুধু দাবির যৌক্তিকতা দেখা হচ্ছে।
আইনমন্ত্রী বলেন, আইনটি খতিয়ে দেখার জন্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নেতৃত্বে একটি কমিটি করা হয়েছিল। বৈঠকে আইনটি নিয়ে চুলচেরা বিশ্নেষণ করা হয়েছে। এখন মালিক-শ্রমিকদের সঙ্গে বৈঠক করা হবে। তিনি আরও বলেন, বিধি প্রণয়নের কাজ ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে। মালিক-শ্রমিকদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে ঐকমত্যে এসে তারপর ঘোষণা দেওয়া হবে।