জাতীয় সংসদে ‘প্লানেটরি ইমার্জেন্সি’ প্রস্তাব আনবে পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি।
সংসদ সদস্য হিসেবে কমিটির সভাপতি বা অন্য যে কোন সদস্য এই প্রস্তাব সংসদে তুলবেন।
আগামী ৭ নভেম্বর থেকে শুরু হতে যাওয়া অধিবেশনেই এই প্রস্তাব তোলার কথা ভাবা হচ্ছে।
তবে স্বল্প সময়ের এই অধিবেশনে এটি তোলা সম্ভব না হলে পরবর্তী অধিবেশনে তোলা হবে বলে জানিয়েছেন সংসদীয় কমিটি সভাপতি সাবের হোসেন চৌধুরী।
সোমবার সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত সংসদীয় কমিটির বৈঠক শেষে সাবের চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবেলা করে জীববৈচিত্র্য রক্ষায় তাদের এই পদক্ষেপ।
“যুক্তরাজ্য, ফ্রান্সসহ বিশ্বের অনেক দেশের সংসদে জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক জরুরি প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়েছে। তবে আমরা দেখতে পাচ্ছি, কেবল জলবায়ুই নয় আগামী বিশ্বকে বায়ু দূষণ, নিরাপদ পানি ও খাদ্য সঙ্কট, দুর্যোগসহ জীব বৈচিত্র্য বহুবিদ সমস্যায় পড়তে হবে।
“এই বিষয়টি বিবেচনা নিয়ে আমরা সংসদে প্লানেটরি ইমার্জেন্সি মোশন প্রস্তাব করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমাদের সংসদে এই প্রস্তাব গ্রহন হলে তা হবে বিশ্বের দেশগুলোর মধ্যে প্রথম।”
তিনি বলেন, “বিশ্বে যেভাবে জনসংখ্যা বাড়ছে তাতে আগামীতে ৫০ শতাংশ খাদ্য উৎপাদন বাড়াতে হবে। ইতোমধ্যে পৃথিবী থেকে ৬৫ শতাংশ প্রজাতি বিলুপ্ত হয়ে গেছে। আগামীতে ১ মিলিয়ন প্রজাতি বিলুপ্ত হয়ে পড়বে।”
সাবের জানান, এই প্রস্তাবের বিষয়ে তিনি জাতীয় সংসদের স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সঙ্গে কথা বলেছেন। একটি চিঠিও দিয়েছেন। সংসদ অধিবেশন শুরুর আগে যে কার্যউপদেষ্টা কমিটির বৈঠক হবে সেখানে সম্মতি পাওয়া গেলে হয়ত আসন্ন অধিবেশনেই এটা তোলা সম্ভব হবে।
সংসদ সচিবালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে- বৈঠকে কমিটি বিশ্ব পরিবেশ বিপর্যয় নিয়ে আলোচনার জন্য জাতীয় সংসদ অধিবেশনে প্রস্তাব আনতে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে।
জাতীয় সংসদের কার্যপ্রণালী বিধি অনুযায়ী, নোটিস দিয়ে কোনো সংসদ সদস্য গুরুত্বপূর্ণ বা জরুরি কোনো বিষয়ে প্রস্তাব তুলতে পারেন।
জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব বিষয়ে সাবের বলেন, সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বেড়ে যাওয়ার কারণে ২০৫০ সালে বাংলাদেশের ৪ কোটি ২০ লাখ মানুষ হুমকির মুখে পড়বে। তারা বাস্তুচ্যুত হবেন। ওই সময় অনেক দ্বীপ রাষ্ট্র হারিয়েও যেতে পারে।
“এজন্য মাদ্রিদে অনুষ্ঠিত জলবায়ু বিষয়ক আসন্ন সম্মেলনে (কপ-২৫) আমরা যারা বেশি ঝুঁকিপূর্ণ দেশ আছি তাদের যৌথ দরকষাকষি কী হতে পারে সেটা নিয়ে কথা বলেছি। বাংলাদেশ থেকে সরকারি প্রতিনিধি, একাধিক বিশেষজ্ঞ ও বেসরকারি সংস্থার প্রতিনিধি ওই কপ-২৫ এ যোগ দেবেন, তারা সবাই যেন দেশের পক্ষে অভিন্ন অবস্থানে থাকেন সেজন্য সম্মেলনের আগে একটি সমন্বয় সভা করার সুপারিশ করা হয়েছে।”
কমিটির সভাপতি সাবের হোসেন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে কমিটি সদস্য পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনমন্ত্রী শাহাব উদ্দিন, উপমন্ত্রী হাবিবুন নাহার, দীপংকর তালুকদার, নাজিম উদ্দিন আহমেদ, জাফর আলম, মোঃ রেজাউল করিম বাবলু এবং খোদেজা নাসরিন আক্তার হোসেন অংশ নেন।