নিজের কবিতা, গানসহ অগণিত সৃষ্টিকর্মে মানবতা ও সাম্যের কথা বলে গেছেন জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম। জাতি-ধর্ম-বর্ণ-নির্বিশেষে মানুষকেই প্রাধান্য দিয়েছেন সর্বাগ্রে। যার কারণে তার বসত মানুষের ভালোবাসায় আর শ্রদ্ধায়।
কবির ৪৩তম মৃত্যুবার্ষিকীতে সমাধিতে ভক্ত-অনুরাগীদের ফুলেল শ্রদ্ধা মনে করিয়ে দেয় এ দেশের মানুষের হৃদয়ের ক্যানভাসে শিল্পের মতো মূর্ত হয়ে আছেন দ্রোহ, প্রেম ও চেতনার কবি কাজী নজরুল ইসলাম।
মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৭টায় কবির সমাধিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান, উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ, জাতীয় অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম, ঢাবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামালসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
পরে সমাধি প্রাঙ্গণে আলোচনা সভা ও সঙ্গীতানুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন উপাচার্য আখতারুজ্জামান। এর আগে জাতীয় কবির মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে বাদ ফজর ঢাবির মসজিদুল জামিয়ায় কোরআনখানি অনুষ্ঠিত হয়।
পরে দিনব্যাপী কবির সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন আওয়ামী লীগ, বিএনপিসহ তাদের অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা। আওয়ামী লীগের পক্ষে শ্রদ্ধা জানান দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক এ কে এম এনামুল হক শামীম, দপ্তর সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক আবদুস সবুর, উপদপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ূয়া প্রমুখ।
সাংগঠনিক ও প্রাতিষ্ঠানিকভাবে শ্রদ্ধা জানায় সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়, জাতীয় জাদুঘর, বাংলা একাডেমি, শিল্পকলা একাডেমি, নজরুলসঙ্গীত শিল্পী পরিষদ, জাতীয় কবিতা পরিষদ, বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোট, বঙ্গবন্ধু লেখক পরিষদ, নজরুল চর্চা কেন্দ্র বাঁশরী, ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় সংসদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ, বিএনপি, বাসদসহ বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক সংগঠন।
বাংলা একাডেমি: জাতীয় কবির মৃত্যুবার্ষিকীতে একক বক্তৃতা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করেছে বাংলা একাডেমি। বিকেলে একাডেমির কবি শামসুর রাহমান সেমিনার কক্ষে ‘নজরুলের বিদ্রোহ : রাজনীতি, অর্থনীতি ও ধর্মে’ শীর্ষক বক্তব্য দেন অধ্যাপক মোহীত উল আলম।
একাডেমির সভাপতি জাতীয় অধ্যাপক আনিসুজ্জামানের সভাপতিত্বে এতে স্বাগত বক্তব্য দেন একাডেমির সচিব ও ভারপ্রাপ্ত মহাপরিচালক মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন।
জাতীয় অধ্যাপক আনিসুজ্জামান বলেন, কাজী নজরুল ইসলাম বিদ্রোহী পরিচয় পেয়েছেন কেবল ‘বিদ্রোহী’ কবিতা লেখার জন্য নয়, তিনি ইংরেজ শাসনের বিরুদ্ধে ধর্মীয় গোঁড়ামির বিপক্ষে, সব ধরনের বৈষম্য-অত্যাচার- অনাচারের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেছেন। নজরুলের বিদ্রোহ ব্যাপক ও তাৎপর্যপূর্ণ।
বক্তৃতা শেষে সাংস্কৃতিক পর্বে নজরুলের কবিতা আবৃত্তি করেন বাচিক শিল্পী আশরাফুল আলম এবং নজরুলগীতি পরিবেশন করেন তানভীর আলম সজীব।