সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে চিকিৎসকদের লেখালেখির ক্ষেত্রে আরো সতর্ক হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী মুরাদ হাসান। শুক্রবার বিকেলে চট্টগ্রাম সরকারি জেনারেল হাসপাতাল পরিদর্শনের পর সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে চিকিৎসকদের প্রতি তিনি এই আহ্বান জানান।
ফেসবুকে চিকিৎসকদের লেখালেখির বিষয়টি টেনে এনে স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘ফেসবুকে একজন চিকিৎসক অশ্নীল-অশ্রাব্য ভাষায় কথা বলবেন- এটা খুবই দুঃখজনক। এটা কোনোভাবেই কাম্য হতে পারে না। যারা এটা করছেন তাদের সংশোধন হতে হবে, সতর্ক হতে হবে। সম্মানিত ব্যক্তিকে নিয়ে একজন চিকিৎসক কেন এমন ভাষায় লিখবে? কারণ তারা তো সবচেয়ে মেধাবী, তাদের কাছে তো জাতির প্রত্যাশা অনেক।’
ক্রিকেট তারকা সংসদ সদস্য মাশরাফি মর্তুজাকে নিয়ে ফেসবুকে চিকিৎসকদের মন্তব্যের বিষয়টি আবারো সামনে এনে প্রতিমন্ত্রী মুরাদ বলেন, ‘মাশরাফি একজন সংসদ সদস্য। ওনার মতো মানুষ যদি কোনো একটা কথা বলেই ফেলেন, তাহলেও একজন চিকিৎসক হিসেবে তার প্রতিবাদ কি আমি ফেসবুকে করব? নিশ্চয় একজন চিকিৎসক এভাবে প্রতিবাদ করবেন না। চিকিৎসকরা সেবা দেওয়ার মানুষ। সেবা করতে গিয়ে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের আক্রমণ করাটা ঠিক নয়, এটা অত্যন্ত দুঃখজনক।’ মাশরাফিকে নিয়ে ফেসবুকে আপত্তিকর স্ট্যাটাস দেওয়া চিকিৎসকদের শোকজ করা হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘যেসব চিকিৎসক এটা করেছেন তাদের শোকজ করা হয়েছে। এটার সমাধান আমরা অবশ্যই করব। তবে সমাধান মানে এই নয় যে, ঢালাওভাবে চিকিৎসকদের শাস্তি দেব।’
এদিকে জেনারেল হাসপাতাল পরিদর্শনের পর স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী মুরাদ হাসান চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালেও যান। সেখানে তিনি চিকিৎসা কার্যক্রম সরেজিমনে দেখেন। এরপর তিনি চমেকের শাহআলম বীরউত্তম মিলনায়তনে বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ) চট্টগ্রাম শাখা এবং স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের নেতাকর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।
মতবিনিময় সভায় স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী সাম্প্রতিক সময়ে হাসপাতালে বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে চিকিৎসকদের উপস্থিতি নিশ্চিত করার বিষয়টি তুলে ধরে বলেন, ‘বায়োমেট্রিক করা হয়েছে, কারণ সব জায়গা থেকে একটি অভিযোগই শুধু আমরা শুনতে পাই যে, ডাক্তার নেই। বায়োমেট্রিক চালু করছি ডাক্তারদের অসম্মানিত করার জন্য নয়। ডাক্তারদের বিদেশ গমনে বাধা দেওয়া বা পদোন্নতি আটকে দেওয়ার জন্য এটা নয়।’ অন্য পেশার সঙ্গে চিকিৎসা পেশার তুলনা না করার জন্য চিকিৎসকদের অনুরোধ করেন তিনি। তিনি আরও বলেন, ‘আমি কাজের মাধ্যমে নিজেকে প্রমাণ করতে চাই। ফেসবুকে তথাকথিত প্রতিবাদ, আন্দোলন আর বিদ্রোহ করে সময় নষ্ট করতে চাই না।’
চমেক হাসপাতাল পরিদর্শনকালে হাসপাতালটির শয্যার সংখ্যা বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে বলে সাংবাদিকের জানিয়েছেন স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী।
হাসপাতাল পরিদর্শনকালে উপস্থিত ছিলেন চমেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহসীন উদ্দিন চৌধুরী, চমেকের অধ্যক্ষ সেলিম মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর এবং বিএমএ ও স্বাচিপের নেতারা।