ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রোঁকে সামনে পেলে ‘হত্যা করে ফাঁসির মঞ্চে’ যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য লিয়াকত হোসেন খোকা।
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ পৌরসভার আমিনপুর মাঠে সোমবার ‘হেফাজতে ইসলামী প্রয়াত আমীর শাহ আহমদ শফীর জীবন ও কর্ম’ শীর্ষক আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলে তার এমন বক্তব্য এসেছে।
নারায়ণগঞ্জ-৩ (সোনারগাঁ) আসনের সংসদ সদস্য খোকা বলেন, “আমি শুধু একটি কথাই বলতে চাই, আজকে আমার প্রিয় নবী সম্বন্ধে যারা কটূক্তি করবে, ব্যঙ্গ করবে, আমি মুসলমান হিসেবে বলতে চাই, আমি কোনো সংসদ সদস্য না এখন, ওই … বাচ্চা ফ্রান্সের প্রধানমন্ত্রীকে (প্রেসিডেন্ট) বলতে চাই, আজকে তুই যদি আমার সামনে থাকতি, আমি তোকে হত্যা করতাম। হত্যা করে আমি ফাঁসির মঞ্চে হাসতে হাসতে যেতাম।”
ফ্রান্সের একটি সাময়িকীতে হজরত মুহাম্মদকে (সা.) নিয়ে ব্যঙ্গচিত্র প্রকাশকে কেন্দ্র করে বিশ্বের বিভিন্ন মুসলিম দেশে বিক্ষোভ চলছে। বাংলাদেশেও ধর্মভিত্তিক সংগঠনগুলো প্রতিবাদ জানানোর পাশাপাশি ফ্রান্সের পণ্য বয়কটের আহ্বান জানিয়েছে।
এর অংশ হিসেবে গত সোমবার ‘সম্মিলিত ইসলামি দলগুলো’ ব্যানারে হেফাজতে ইসলামসহ বিভিন্ন ধর্মভিত্তিক দল বায়তুল মোকাররম থেকে গুলশানে ফ্রান্সের দূতাবাস অভিমুখে যাত্রা করে।
সেই মিছিল পুলিশের বাধায় শান্তিনগর মোড়ে আটকে গেলে সেখান থেকে ফ্রান্সের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করার দাবি তোলা হয়।
নারায়ণগঞ্জের মাহফিলে দেওয়া সাংসদ খোকার বক্তব্যের প্রায় ১২ মিনিট ৫৩ সেকেন্ডের একটি ভিডিও তার নামে খেলা ফেইসবুক পেইজেও তোলা হয়েছে।
ওই ভিডিওর সঙ্গে তিনি লিখেছেন, “আমি কোনো সংসদ সদস্য হিসেবে নয়, একজন মুসলমান হিসেবে বলছি ফ্রান্সের প্রধানমন্ত্রীকে কাছে পেলে তার জীবন শেষ করে হাসি মুখে ফাঁসির কাষ্ঠে যেতেও রাজি।”
পরবর্তী সংসদ অধিবেশনে ফ্রান্সের সঙ্গে সকল কূটনৈতিক সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন করার দাবি তুলবেন এবং সব সময় কাদিয়ানীদের বিরোধিতা করে যাবেন বলেও ঘোষণা দিয়েছেন জাতীয় পার্টির এই সাংসদ।
মাহফিলে দেওয়া বক্তব্যে তিনি বলেন, “নবীর বাইরে কিছু নেই। আমার নবীর বিরুদ্ধে যে বলবে তার সাথে কীসের সম্পর্ক? আগামী ৮ তারিখ সংসদ অধিবেশন। এই অধিবেশনেই ফ্রান্সের সাথে সম্পর্ক বাতিল করতে প্রস্তাব আনা হোক।”
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্দেশে খোকা বলেন, “আমরা আপনার সাথে থাকব।… নবীর বিরুদ্ধে যারা বলবে তাদের বিরুদ্ধে ফাঁসির আদেশ দেওয়ার নতুন আইন করার…”
এসময় সমাবেশে স্লোগান ওঠে ‘লিয়াকত হোসেন খোকার অ্যাকশন/ডাইরেক্ট অ্যাকশন।”
আহমাদীয়া সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে নিজের অবস্থান তুলে ধরে খোকা বলেন, “আমরা সবসময় সোচ্চার থাকব। প্রয়োজনে সংসদে আইন আনব।”
মাহফিলের ওই বক্তব্যের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে সংসদ সদস্য লিয়াকত হোসেন খোকা বুধবার টেলিফোনে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমি একজন মুসলমান, আমি নবীর উম্মত, যে আমার নবীকে কটূক্তি করে তাকে হত্যা করতে দ্বিধা করব না।
“আমি যে বক্তব্য দিয়েছি, আমি সেই বক্তব্যে এখনও অনড় আছি, মৃত্যুর আগ পর্যন্ত আমি অনড় থাকব।”
সংসদ সদস্য হয়ে এমন বক্তব্য দিতে পারেন কিনা- এ প্রশ্নে খোকা বলেন, “আমি আগেই বলেছি, আমি সংসদ সদস্য হিসেবে নয়, একজন মুসলমান, নবীর উম্মত হিসেবে ওই বক্তব্য রেখেছি। এখনও আমি সেই দাবি জানাচ্ছি।”