পারিবারিকভাবে ডায়াবেটিসের ইতিহাস থাকলে ২১ বছর বয়সেই এই রোগের লক্ষণ দেখা দিতে পারে।
চিকিৎসাবিজ্ঞানের তথ্যানুসারে স্বাস্থ্যবিষয়ক একটি ওয়েবসাইটে এই বিষয়ের ওপর প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানানো হল বিস্তারিত।
ডায়াবেটিস হল এমন একটি রোগ যে কারণে রক্তে শর্করার মাত্রা অস্বাভাবিক পর্যায়ে থাকে। শরীরে জৈবিকভাবে তৈরি হওয়া রাসায়নিক উপাদান ‘ইন্সুলিন’ যা রক্তের শর্করাকে কর্মশক্তিতে রূপান্তরিত করে।
ডায়বেটিসে আক্রান্ত রোগীর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা এই ‘ইন্সুলিন’কে রোগের জীবাণু হিসেবে চিহ্নিত করে এবং ধ্বংস করে।
হৃদরোগ আর ‘স্ট্রোক’য়ের ঝুঁকি ভয়াবহ মাত্রায় বাড়িয়ে দেয় ডায়াবেটিস। সেই সঙ্গে চোখ, বৃক্ক এবং স্নায়ুতন্ত্রের বিভিন্ন জটিলতাও ডেকে আনে এই রোগ।
ডায়াবেটিস দুই ধরনের: ‘টাইপ ওয়ান’ এবং ‘টাইপ টু’।
‘টাইপ ওয়ান’ দুর্লভ এবং সবচাইতে মারাত্বক ধরনের ডায়াবেটিস, যেখানে শরীর ‘ইন্সলিন’ তৈরি করা বন্ধ করে দেয়। ‘টাইপ টু’ ডায়াবেটিসে ‘ইন্সুলিন’ তৈরি হয় ঠিকই তবে শরীর তা ব্যবহার করতে পারে না।
ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা সবচাইতে বেশি তারই যার পরিবারের কেউ এই রোগে ভুগছেন।
‘জার্মান সেন্টার ফর ডায়াবেটিস রিসার্চ’য়ের গবেষক রবার্ট ওয়াগনার প্রায় আট হাজার ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগীকে নিয়ে গবেষণার পর জানান, বংশে ডায়াবেটিস রোগী থাকলে ‘প্রি-ডায়াবেটিক’ হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে ২৬ শতাংশ। রক্তে স্বাভাবিক শর্করার মাত্রা আর ডায়াবেটিস এই দুই পরিস্থিতির মাঝামাঝি অবস্থান হলো ‘প্রি-ডায়াবেটিক’। আর এমন ২০ শতাংশ মানুষই পরবর্তী সমযে পুরোপরি ডায়াবেটিস রোগে আক্রান্ত হন।
বাবা-মায়ের ডায়াবেটিস থাকলে সন্তানের ঝুঁকি
প্রথমত, তার ‘প্রি-ডায়াবেটিস’ হওয়ার আশঙ্কা এখন ২৬ শতাংশ বেশি। ‘প্রি-ডায়াবেটিক’ হয়ে গেলে তার ‘টাইপ টু’ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়া আশঙ্কা প্রতি পাঁচজনের মধ্যে একজন। আশঙ্কা তেমন মারাত্বক মনে না হলেও ডায়াবেটিসের ক্ষেত্রে পারিবারিক ঝুঁকি এখন পর্যন্ত সবচাইতে শক্তিশালী। একজন স্থূলকায় ব্যক্তি আর বংশে ডায়াবেটিস থাকা একজন স্বাস্থ্যবান ব্যক্তির মধ্যে ডায়াবেটিসের ঝুঁকি ওই স্বাস্থ্যবান ব্যক্তিরই বেশি।
আর অল্পবয়সেই ডায়াবেটিসের উপসর্গগুলো হাতছানি দিতে শুরু করবে।
২১ বছর বয়সের মধ্যেই কোনো না কোনো উপশম দেখা দেবে। উদাহরণ হিসেবে বলা যেতে পারে অতিরিক্ত পিপাসা, ক্ষত সেরে উঠতে অনেক সময় লাগা, মাত্রাতিরিক্ত অবসাদ, অতিরিক্ত খাওয়ার রুচি, ঘোলাটে দৃষ্টিশক্তি ইত্যাদির কথা।
এরকম হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
হঠাৎ ওজন কমে যাওয়া, বমি বমিভাব ইত্যাদি কিছু উপসর্গ আছে যা ‘টাইপ ওয়ান’ ডায়াবেটিসের ইঙ্গিত করে।